নিজস্ব প্রতিনিধি : সাতক্ষীরা সদরের ভূমি নায়েব কামরুল ও অফিস সহকারী সুরেন এর যোগসাজসে পীরত্ত সম্পত্তি নাম জারি করে লক্ষ লক্ষ টাকা আত্মসাতের তদন্ত এবং পীরের নামের দখল বজায় রাখার দাবিতে প্রধানমন্ত্রী, ভূমি সচিবসহ বিভিন্ন দপ্তরে লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।
৩০ জুলাই লাবসা ইউনিয়নের পীর কুতুব উদ্দীন আরব ও সাহাবুদ্দিন আরব সাহা এর দরবারের খাদেম শেখ ফারুক হোসেন এ অভিযোগ দায়ের করেন। অভিযোগে তিনি জানান, সাতক্ষীরা জেলার অর্ন্তগত ১৩ নং লাবসা ইউনিয়নে জে. এল নং ৯০- মৌজা মাগুরা গোপিনাথপুর গ্রামের সিএস ১৫৭৪ নং খতিয়ানে পীরত্তর আলী সাহা এর খাদেম ছিলেন কাজী মো: রুহুল কুদ্দুস। খতিয়ানে কোন রায়তি নেই নিস্কর। জে.এল নং-৯০, মৌজা মাগুরা গোপিনাথপুর গ্রামের এস এ ১৪৮২ নং খতিয়ানে পীরত্তর আলী সাহা এর খাদেম কাজী মো: রুহুল কুদ্দুস।
১৪৮২ নং খতিয়ানে ১২২ দাগে পুকুর ১.৭৯ একর, ১২৩ দাগে ডাঙ্গা পীর কুতুবউদ্দীন ও পীর সাহাবুদ্দিন দ্বয়ের মাজার শরীফ ০.৩৬ একর, ১৩৮ দাগে পুকুর ০.২৭ একর, ১৪০ দাগে ডাঙ্গা ০.৪৯ একর, ১৪১ দাগে মসজিদ ও পীর আলী শাহার মাজার ০.০৬ একর, ১৪২ দাগে ঈদগাহ ও ব্যস্ত ২.৫৫ একর, ১৪৪ দাগে ০.০৭ গর্ত একর, ১৬৬ দাগে ডাঙ্গা ১.২৪ একর, ১৩০ দাগে ব্যস্ত ১.৩৫ একর, ১৩৪ দাগে ডাঙ্গা ০.৭৭ একর, ১৩৯ দাগে ব্যস্ত ০.৯৪ একর যাহা সম্পূর্ণ পীরত্ত।
কাজী মো: রুহুল কুদ্দুস পীরের খাদেম ছিলেন। তিনি বৃদ্ধে উপনীত হওয়ার পর তাহার দুই পুত্র কাজী আবু ওমর ও কাজী আবুল হোসেন কে খাদেম নিযুক্ত করেন। ঐ দুই পুত্র ৯০ এর মাঠ জরিপের সময় নিজ নামে মাঠ জরিপ করিয়া লই। কাজী আবু ওমর ও কাজী আবুল হোসেন মৃত্যুর পর উনার বংশের আর কোন খাদেম নিযুক্ত করে নাই। এই পীরত্ত সম্পত্তি নিজেদের বলে দাবি করিয়া আসিতেছে। উপ-পরিচালক, ইসলামিক ফাউন্ডেশন, সাতক্ষীরা জেলা কার্যালয় কর্তৃক গত ইং ২০/০৭/২০১৬ তারিখে আমি শেখ ফারুক হোসেন পীর কুতুবউদ্দীন আরব, পীর সাহাবুদ্দিন আরব, পীর আলী সাহা ওরফে মিয়া সাহেব এর মাজার ও দরগাহ শরীফের খাদেম নিযুক্ত হন। এর পরে আমি সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসক এর দপ্তরে উক্ত সম্পত্তি পীরত্ত কিনা মর্মে ০৬/০৬/২০১৬ ইং তারিখে একটি আবেদন করি। তখন জেলা প্রশাসক আবেদনটি তদন্তের দায়িত্ব মনিরা পারভীন, সহকারী কমিশনার(ভূমি), সাতক্ষীরা সদরে প্রেরণ করেন। সহকারী কমিশনার(ভূমি), মনিরা পারভীন তদন্ত প্রতিবেদনে উক্ত সম্পত্তি পীরত্ত সম্পত্তি মর্মে প্রতিবেদন দেন। তৎকালীন নায়েব কান্তীলাল সরকার উক্ত সম্পত্তি পীরত্ত বলে একটি প্রতিবেদন দেন। রেকর্ড ভ্রমাত্মক উপযুক্ত দেং আদালতের মাধ্যমে রেকর্ড সংশোধন করা যেতে পারে। আরো উল্লেখ করেন পীরের মাজারগুলো অবহেলিত অবস্থায় আছে, যা সংস্কার করা প্রয়োজন বলেন ০৯/০৮/২০১৬ তারিখে জেলা প্রশাসকের নিকট একই প্রতিবেদন প্রেরণ করেন। পরবর্তীতে ৩১/০৮/২০১৬ ইং তারিখে জেলা প্রশাসক কার্যালয়, সাতক্ষীরা (রাজস্ব শাখা) হইতে নুর মো: মাসুম, রেভিনিউ ডেপুটি কালেক্টর, সাতক্ষীরা ১৮/০৫/২০১৬ তারিখে আবেদনের প্রেক্ষিতে আমাকে বলেন, থানাঘাটায় স্থাপিত পীর কামেল মিয়াসাহেবের দরগার সম্পত্তি রেকর্ড সংশোধনের জন্য দেওয়ানী আদালতের আশ্রয় গ্রহণের পরামর্শ করা হলো। পরবর্তীতে আমি ল্যান্ড লার্ভে ট্রাইব্যুনালে সাতক্ষীরা আদালতে ৩৩৪২/২০২১নং মোকদ্দমা মহামান্য হাইকোর্ট ডিভিশন সিভিল রিভিশনাল জুডিশিয়াল সিভিল রিভিশন ২১০/২০১৭ নং মোকাদ্দমা চলমান থাকায় অত্র খতিয়ানে জমির নামজারী না হওয়ার জন্য তৎকালীন সহকারী কশিনার (ভূমি) মো: আজহার আলী ইং ১০/০৮/২০২২ তারিখে খাজনা দাখিলা ও নামজারী বন্ধ থাকার জন্য নায়েব কামরুল ইসলাম এর নিকট বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দেন।
নায়েব কামরুল ইসলাম নিজ হাতে ৫টি খতিয়ানে আদেশটি আঠা দিয়ে মেরে দেন। কিছুদিন পরে অফিস সহকারী(পিওন) সুরেন ও নায়েব কামরুল ইসলাম উক্ত উৎকোচের মাধ্যমে অফিসকে প্রভাবিত করে ঐ খতিয়ানের দরখাস্তটি উঠাইয়া খাজনা দাখিলা ও নামজারী করার সুযোগ করে দেন। যার জে এল নং ৯০ বিআরএস খতিয়ান নং ২৬৫, ৩৫৫, ১৭, ২৯৭৮, ৪৭৭,১৫২৪,১৯১২।
পীরত্ত সম্পত্তি রক্ষা কমিটির নেতৃবৃন্দ নায়েব কামরুল ইসলাম এর কাছে এ বিষয়ে জিজ্ঞাসা করলে তিনি প্রকাশ্যে ভুল স্বীকার করে দু:খ প্রকাশ করেন এবং উক্ত জমির নাম জারি ১৫০ ধারা মোতাবেক বাতিল করাসহ বিক্রিত জমি ফেরত আনার জন্য উক্ত কমিটির নেতৃবৃন্দকে আশ্বাস দেন। এছাড়া পূর্বের খতিয়ানে ফিরিয়ে আনার প্রতিশ্রুতিও ব্যক্ত করেন। তিনি ১৫০ ধারা মোতাবেক খাজনা দাখিলা বাতিলসহ নায়েব কামরুল ইসলাম ও অফিস সহকারী সুরেন এর বিরুদ্ধে সুষ্ঠু তদন্ত পূর্বক আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের দাবিতে প্রধানমন্ত্রীসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করেন।