আসাদুজ্জামান : রমজানের শেষ মুহুর্তে সাতক্ষীরায় জমে উঠেছে ঈদ বাজার। শহরের অভিজাত শপিং মল থেকে শরু করে ফুট পাতের দোকান গুলোতে তিল ধরনের ঠাই নেই। ঈদে চাই নতুন পোশাক। তাইতো সাধ আর সাধ্যের মধ্যে না থাকলেও প্রিয় জনের উপহার দিতে ধনী ও মধ্যবিত্তদের পাশাপাশি কেনা কাটায় ব্যস্থ সময় পার করছে নি¤œ বিত্তের মানুষও। আর কয়েকদিন বাদেই ঈদ। শেষ মূহুর্ত্বে কেনা কাটা সারতে ব্যস্থ সময় পার করছেন ক্রেতারা। আর সেকারনে সাতক্ষীরা শহরের নিউমার্কেট, চায়না-বাংলা শপিং সেন্টার, আল বারাকা সিটি কমপ্লেক্স, বসুন্ধরা টাওয়ার, মেহেরুন প্লাজা, লন্ডন পালাজা, মেহেদি সুপার মার্কেট, আমিনিয়া মার্কেট, সুলতানপুর বড় বাজার ও থানা সড়কের দোকান গুলোতে রয়েছে ক্রেতাদের উপচে পড়া ভিড়। সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত ক্রেতারা এ মার্কেট থেকে ও মার্কেট ঘুরছেন নিজেদের পছেন্দের পোশাক কিনতে। সাধ্যের মধ্য থেকে কেনা কাটা করতে অনেকে আবার শপিং মল ছেড়ে ফুটপাতের দোকান গুলোতে ভিড় করছেন। এদিকে ঈদ উপলক্ষ্যে সাতক্ষীরার বিভিন্ন মার্কেট গুলোতে ভারতীয় পোষাকে ছেয়ে গেছে। তবে এসব মার্কেটে মান সম্মত দেশীয় পোষাক সামগ্রী থাকলেও ক্রেতাসাধারনের চাহিদা ভারতীয় পোশাকের প্রতি একটু বেশী। এবার ঈদে মেয়েদের জন্য আকর্ষনীয় পোশাকের মধ্যে রয়েছে বাহুবলি টু, রাখিবন্ধন, পটল কুমার, বাজরাঙ্গি ভাইজা, ফ্লোর টার্চ, লাসা, লং স্কট, শর্ট স্কটসহ বিভিন্ন নামের থ্রি-পিস ও ফোর পিস পোশাক। তবে, দেশী অনেক পোশাক ক্রেতাদের আকৃষ্ট করেছে। আকৃষ্ট করেছে দেশীয় পণ্য টাঙ্গাইল শাড়ি, জামদানী, খদ্দর, মনীপুরী, রাজগুরু, বালুচুরী, জর্জেট শাড়ি ইত্যাদি। গত বছরের তুলনায় এবার পোশাকের দাম বেশি হওয়ায় নিম্নবিত্তরা পড়েছেন বিপাকে। অবশ্য নিম্নবিত্তদের কথা চিন্তা করে ইতোমধ্যে থানা মসজিদের সামনে ফুটপাতে বেশ কয়েকটি পোশাকের দোকান দিয়েছে স্বল্প পুঁজির ব্যবসায়ীরা। বড় বড় মার্কেটের চেয়ে এই সব মার্কেটে জমে উঠেছে বেচাকেনা। তাছাড়া জুতার দোকানেও ভিড়ের কমতি নেই, বেড়েছে কসমেটিকসের বেচা কেনাও। বড়দের সাথে পাল্লা দিয়ে পছেন্দের জুতা, স্যান্ডেল, প্যান্ট, জামা কিনছে শিশুরা। সব ধরনের ক্রেতাদের চাপে দোকানীদের এখন দম ফেলার ফুরসত নেই বললে চলে। শহরের মিম গামের্ন্টেসের সত্ত্বাধিকারী শাহিনুর রহমান বলেন, তিনি শূন্য থেকে সাত বছরের শিশুদের পোশাক বিক্রি করছেন। ঈদ উপলক্ষে বিক্রি বাড়লেও লাভ কম হচ্ছে। পণ্যের দাম গত বছরের তুলনায় বেশি হওয়া এবং ক্রেতাদের গত বছরের দাম ধরে রাখার চেষ্টার কারণে এবার লাভ কম হচ্ছে। সাত রং বস্ত্র বিপনীর সত্তাধিকারী আকবার হোসেন বলেন, ঈদের বাজারে শাড়ির প্রতি আকর্ষণ কম। তারপরও কিছু শাড়ি বিক্রি হচ্ছে। তার দোকানে টাঙ্গাইল শাড়ি ৬০০ টাকা থেকে ১২০০ টাকা, জর্জেট শাড়ি ১২০০ টাকা থেকে তিন হাজার টাকা, সিল্ক শাড়ি দুই হাজার থেকে সাত হাজার টাকা পর্যন্ত বিক্রি হচ্ছে। নবরূপা ফ্যাশনের সত্ত্বাধিকারী মো: জহিরুল ইসলাম বাবু ও ফ্যাশন এশিয়ার সত্তাধিকারী রুহুল কুদ্দুস বাবলু বলেন, তার দোকানে পাঞ্জাবি, শার্ট-প্যান্ট বিক্রি হয়। পাঞ্জাবির মধ্যে সূতি পাঞ্জাবি ৩০০ টাকা থেকে ২১০০ টাকা, জর্জেট পাঞ্জাবি দেড় হাজার টাকা থেকে সাড়ে তিন হাজার টাকা, সিল্ক পাঞ্জাবি (ভারতীয়) দুই হাজার থেকে আড়াই হাজার টাকা, জামদানি পাঞ্জাবি ৭০০ টাকা থেকে ১৬০০ টাকা, টিস্যু পাঞ্জাবি সাড়ে তিন হাজার টাকা থেকে পাঁচ হাজার টাকা, মটকা পাঞ্জাবি ১২০০ টাকা থেকে আড়াই হাজার টাকা পর্যন্ত দাম রয়েছে। তবে, নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন ব্যবসায়ী জানান, ঈদের আগেই পুলিশ প্রশাসন সাতক্ষীরা শহরে ইঞ্জিন ও ব্যাটারিচালিত ভ্যান ও ইজিবাইকসহ অবৈধ যান চলাচল বিরোধী অভিযানে নামায় শহরের বড় বড় বিপনী গুলোতে এবার ক্রেতার সংখ্যা গতবারের তুলনায় কিছুটা কমে গেছে। ফলে তারা অনেকটা দূশ্চিন্তা গ্রস্ত হয়ে পড়েছেন। সাতক্ষীরা অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মেরিনা আক্তার বলেন, পবিত্র ইদুল ফিতর উপলক্ষ্যে জনসাধারনের জানমালের নিরাপত্তার স্বার্থে সাতক্ষীরার পুলিশের পক্ষ থেকে বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে। যাহাতে সাধারণ মানুষ ঈদের কেনাকাটা করে নির্বিঘেœ বাড়িতে ফিরতে পারে সে জন্য জেলা শহরের চারটি পয়েন্টে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে।