অনলাইন ডেস্ক : আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত পলাতক আসামি সাতক্ষীরার খান রোকনুজ্জামানকে (৭২) গ্রেপ্তার করেছে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব-২)। শনিবার (৩০ সেপ্টেম্বর) ঢাকার সাভার এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
র্যাব-২ এর সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার শিহাব করিম জানান, ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর সহযোগী হিসেবে যুদ্ধাপরাধী খান রোকনুজ্জামানসহ অন্যান্য দোসররা সাতক্ষীরা এলাকায় মুক্তিকামী মানুষের ওপর নির্যাতন, অপহরণ, লুণ্ঠন, অগ্নিসংযোগ, ধর্ষণ, হত্যা-গণহত্যাসহ বিভিন্ন মানবতাবিরোধী কাজ করে।
রাজাকার বাহিনীর সক্রিয় সদস্য হিসেবে খান রোকনুজ্জামান মানবতাবিরোধী কাজে সরাসরি অভিযুক্ত। ১৯৭১ সালে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীদের সঙ্গে নিয়ে খান রোকনুজ্জামান সাতক্ষীরা জেলায় পাঁচজনকে গলা কেটে ও একজনকে হত্যা, দুজনকে ধর্ষণ ও ১৪ জনকে আটক করে নির্যাতনের মতো অপরাধে জড়িত ছিল।
এসব ঘটনায় ২০১৫ সালে সাতক্ষীরায় খান রোকনুজ্জামানের বিরুদ্ধে একটি মামলা দায়ের করা হয়। পরে আদালত মামলাটি আমলে নিয়ে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে পাঠানোর আদেশ দেন।
ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থা ২০১৫ সালের ৭ আগস্ট তদন্ত কার্যক্রম শুরু করে। ২০১৭ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি খান রোকনুজ্জামানের বিরুদ্ধে প্রতিবেদন দাখিল করেন। তদন্ত শেষে ১৭ জন সাক্ষীর সাক্ষ্যের প্রেক্ষিতে আসামি খান রোকনুজ্জামানের বিরুদ্ধে ছয়জনকে হত্যা, দুজনকে ধর্ষণ, ১৪ জনকে আটক ও নির্যাতনের মতো মানবতাবিরোধী অপরাধের মোট ৬টি অভিযোগ আনা হয়।
ট্রাইব্যুনাল দীর্ঘ বিচারিক কার্যক্রম শেষে আসামির বিরুদ্ধে আনিত সব অভিযোগ প্রমাণ হওয়ায় গত ২০২২ সালের ২৪ মার্চ খান রোকনুজ্জামানকে মৃত্যুদণ্ডের আদেশ প্রদান করে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন।
এর প্রেক্ষিতে র্যাব-২ তাকে গ্রেপ্তারে গোয়েন্দা নজরদারি বাড়ায়। যার ধারাবাহিকতায় তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। তার বিরুদ্ধে পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন বলেও জানান তিনি।