ভিন্ন স্বা‌দের খবর

যে স্কুলে নেই ক্লাসরুম, নেই বাড়ির কাজ

By Daily Satkhira

June 22, 2017

নিউজিল্যান্ডে গড়ে উঠেছে দারুণ মজার এক স্কুল। সেই স্কুলে ক্লাসরুম নেই, চেয়ার টেবিল নেই। খোলা মাঠে শিশুরা খেলছে, গাছে উঠছে, পানিতে মাছ ধরছে। আর বাড়ির কাজ? তার তো কোনো বালাই-ই নেই।

স্কুলটির নাম ডিপ গ্রিন বুশ স্কুল। মজার এই স্কুলের সহপ্রতিষ্ঠাতা জো মনকার্জ। স্কুলটি সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘আমরা এটাকে স্কুল বলি ঠিকই, কিন্তু এখানে স্কুলের মতো কিছু নেই। আমরা কখনো শিশুদের বলি না যে এখন শেখার সময়। যখন তাদের এটা করতে ইচ্ছে করে তখন তারা এটা করে।’

আগে প্রথাগত স্কুলগুলোতে শিক্ষকতা করতেন মনকার্জ। পাঁচ বছর সেখানে কাজ করার পর হতাশ হয়ে তিনি সেই কাজ ছেড়ে দিয়ে প্রতিষ্ঠা করেন ডিপ গ্রিন বুশ স্কুল। যেখানে নেই ক্লাসরুমের কোনো দেয়াল, চেয়ার বা পরীক্ষা দেওয়ার বিষয়।

মূলধারার স্কুলগুলো শিশুদের ভবিষ্যতের বৈশ্বিক সমস্যাগুলোর মোকাবিলা করতে শেখায় না এমন ভাবনা থেকে মনকার্জ তাঁদের স্কুলের জন্য পরিকল্পনা করেছেন। যেমন জলবায়ু পরিবর্তনের সমস্যার কথা মাথায় রেখে এখানে শিশুদের শিকার, সংগ্রহ এবং টিকে থাকার প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়।

আবহাওয়া ভালো থাকলে বেশিরভাগ সময় বাইরেই কাটায় শিক্ষার্থীরা। এ সময় তারা ঝোপঝাড়ে ঘুরে বেড়ায়, মাছ ধরে, শিকার করে, কীটপতঙ্গ ধরে এবং বিভিন্ন গাছ ও গুল্ম সম্পর্কে বিস্তারিত জানে।

যখন শিক্ষার্থীরা নিজেরাই আগ্রহী হয় তখন তাদের নিজ নিজ দক্ষতা অনুযায়ী পড়তে, লিখতে ও অঙ্ক করতে শেখানো হয়। তখন নয়, যখন শিক্ষকরা প্রয়োজন মনে করেন। মনকার্জ বলেন, ‘আমরা প্রথাগতভাবে বাচ্চাদের সমস্যাগুলো নিয়ে চিন্তা করি না। আমাদের অভিভাবকরা মূলধারার শিক্ষা ব্যবস্থায় তাঁদের সন্তানদের অখুশী এবং চাপের মধ্যে থাকতে দেখেন। কিন্তু একজন শিশুর কি স্কুল থেকে অসন্তোষ হয়ে বাড়ি ফেরা উচিত? কিন্তু বেশিরভাগ মূলধারার স্কুলে তাই হয়।’

স্বাধীন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান হিসেবে নিউজিল্যান্ডের শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে বুশ গ্রিন স্কুলটির নিবন্ধন করা। যুক্তরাজ্যের সামারহিল স্কুল থেকে অনুপ্রেরণা নিয়ে এই স্কুলটি তৈরি করা হয়েছে। জানুয়ারিতে স্কুলের কার্যক্রম শুরু পর থেকে নিউজিল্যান্ডের অন্য শহর ও অন্য দেশ থেকে স্কুলের শাখা খোলার অনুরোধ আসতে শুরু করে মনকার্জের কাছে।

ধীরে ধীরে মূল ধারার শিক্ষা ব্যবস্থায় পরিবর্তন আনতে চান মনকার্জ। তিনি বলেন, তাঁরা আলাদা বা বিশেষ ধরনের কোনো শিক্ষা দিচ্ছেন না। লাখ লাখ বছর ধরে অভিভাবকরা এভাবেই তাঁদের সন্তানদের শিক্ষা দিয়ে গেছেন। তারা শুধু সেই পদ্ধতিন নতুন করে প্রয়োগ করছেন।