জাহাঙ্গীর আলম লিটন, কলারোয়া : সাতক্ষীরা সরসকাটি দাখিল মাদ্রাসায় ১৫ লক্ষ টাকার বিনিময়ে নিয়োগ প্রদানের অভিযোগ উঠেছে। গত ২ই ডিসেম্বর ডিজি প্রতিনিধি ও কলারোয়া উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার কে ম্যানেজ করে মনোনীত প্রার্থীদের মাঝে প্রশ্ন পত্র ফাঁসের মাধ্যমে সরসকাটি দাখিল মাদ্রাসায় একটি সাজানো পাতানো নিয়োগ বোর্ড বসানো হয়। জানা গেছে, সাতক্ষীরা জেলার কলারোয়া উপজেলার সরসকাটি দাখিল মাদ্রাসার ইবতেদায়ী প্রধান ও গবেষনাগার ল্যাব সহকারী ২ পদে পত্রিকায় ১৯-০৯-২৩ তারিখ নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়।
স্থানীয়দের অভিযোগ, পত্রিকায় নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের পর সরসকাটি দাখিল মাদ্রাসার ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি মোখলেছুর রহমান বাবু বিধিবহির্ভূত ভাবে ২ জন প্রার্থীকে মনোনীত করে ১৫ লক্ষ টাকা উৎকোচ গ্রহণ করেন। নিয়োগ বোর্ডের পূর্বে টাকার বিনিময়ে মনোনীত প্রার্থীরা হলেনঃ কলারোয়া উপজেলার ক্ষেত্রপাড়া গ্রামের আব্দুল জব্বার এর ছেলে জাহিদ হোসেন কে গবেষনাগার ল্যাব সহকারী পদে মনোনীত করে তার নিকট থেকে ১০ লক্ষ টাকা উৎকোচ গ্রহণ করেন। কলারোয়া উপজেলার নজরুল ইসলাম কে ইবতেদায়ী প্রধান পদে মনোনীত করে তার নিকট থেকে ৫ লক্ষ টাকা উৎকোচ গ্রহণ করেন অত্র মাদ্রাসার ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি মোখলেছুর রহমান বাবু।
সম্প্রতি সময় কলারোয়া উপজেলার সরসকাটি দাখিল মাদ্রাসায় ২ পদে ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি দুইজন প্রার্থীকে মনোনীত করে অর্থ বানিজ্যের দূর্নীতির খবরটি বিভিন্ন পত্রিকায় প্রকাশিত হয়। প্রকাশিত সংবাদে একটি পাতানো নিয়োগ বোর্ড পরীক্ষার মাধ্যমে গবেষণাগার ল্যাব সহকারী পদে প্রার্থী জাহিদ হোসেন কে টাকার বিনিময়ে নিয়োগ প্রদান করা হবে মর্মে সংবাদ প্রকাশ হয়। এদিকে গত ২ই ডিসেম্বর সকালে ডিজি প্রতিনিধি আসার পূর্বে যশোর জেলার কেশবপুর উপজেলার বরনডালি ৭ নং ওয়ার্ড এর ইউপি সদস্য মাওলানা শহিদুল ইসলাম এর নিজ বাড়িতে গোপনে একটি সাজানো পাতানো নিয়োগ বোর্ডের মাধ্যমে ২জন প্রার্থী মনোনীত করা হয়। স্থানীয়দের দাবি ডিজি প্রতিনিধি আসার পূর্বে পাতানো নিয়োগ বোর্ডে মনোনীত করা ২ প্রার্থীকে ডিজি প্রতিনিধির সাক্ষর নিয়ে নিয়োগ প্রদান করার পায়তারা চালানো হয়। কিন্তু স্থানীয়দের প্রতিবাদ ও তোপের মুখে পড়ে পাতানো নিয়োগ বোর্ড ভেস্তে যায়। অবশেষে উপায়ন্ত না পেয়ে ডিজি প্রতিনিধি ড. মোঃ আবুল কালাম আজাদ এবং সংশ্লিষ্ট কলারোয়া উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মীর মস্তাফিজুর রহমান কলারোয়া উপজেলার সরসকাটি দাখিল মাদ্রাসায় নিয়োগ বোর্ড বসানোর ব্যবস্থা করেন। কিন্ত সেখানেও নিয়োগ পরীক্ষার আগেভাগেই প্রশ্ন পত্র ফাঁস করা একই প্রশ্ন পত্র নিয়োগ পরীক্ষায় ফাঁস করা হয়। এর আগে নিয়োগ বোর্ডে পরীক্ষায় প্রশ্ন পত্র করা নিয়ে ডিজি প্রতিনিধি ও কলারোয়া উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার নানা তালবাহানা শুরু করেন। তারা প্রশ্ন পত্র তৈরি করা নিয়ে প্রথমে জনসম্মুখে বলেন, প্রশ্ন পত্র হ্যান্ড রাইটিং করার জন্য কার্বন কপির প্রয়োজন কিন্ত কার্বন কপি নেই বিদ্যুৎ নেই। সে কারণে ব্লাকবোর্ডে আমরা প্রশ্ন করবো।
স্থানীয়রা প্রশ্ন পত্র করার জন্য প্রস্তাব রাখলে ৩ মিনিটের মধ্যে অত্র মাদ্রাসার অফিস সহকারী বাসুদেব আগে থেকে ফাঁস করা একই প্রশ্ন পত্র নিয়ে আসা হয় বলে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়। এদিকে লোক দেখানো সাজানো পাতানো নিয়োগ বোর্ড শেষে গবেষণাগার ল্যাব সহকারী পদে আব্দুল জব্বারের ছেলে জাহিদ হোসেন কে নিয়োগ প্রদান করা হয় এবং ইবতেদায়ী প্রধান পদে নজরুল ইসলাম কে নিয়োগ প্রদান করা হয়। এ বিষয় সরাসরি ডিজি প্রতিনিধি, কলারোয়া উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার এবং অত্র মাদ্রাসার ম্যানেজিং কমিটির সভাপতির সাথে সরাসরি বক্তব্য নেওয়ার চেষ্টা কালে তারা বক্তব্য দিতে অস্বীকৃতি জানান। সরসকাটি দাখিল মাদ্রাসায় পাতানো নিয়োগ কেন্দ্রিক ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি মোখলেছুর রহমান বাবুর সীমাহীন অনিয়ম, দূর্নীতি এবং সেচ্ছাচারিতার অভিযোগের ভিত্তিতে গণমাধ্যম কর্মীরা সরেজমিনে মাদ্রাসায় উপস্থিত হলে প্রথমে সভাপতি ভাড়াটিয়া ইউপি সদস্য রেজাউল ও ইউপি সদস্য উত্তম সাংবাদিকদের ম্যানেজ করার চেষ্টা অব্যাহত রাখে। কিন্ত গণমাধ্যম কর্মীরা তাদের পেশাগত দায়িত্ব পালনে অনড় থাকায় তারা ক্ষিপ্ত হয়ে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ এমনকি লাঠিপেটা করতে উদ্যত হয়। একপর্যায় গণমাধ্যম কর্মীদের মোবাইল ফোন কেড়ে নেয়। একপর্যায় কলারোয়া থানা পুলিশের উপস্তিতি টের পেয়ে গণমাধ্যম কর্মী রাসেল এর কাছ থেকে কেড়ে নেওয়া মোবাইল ফোনটি ইউপি সদস্য রেজাউল ফেরত দেয়।