সৌদি আরবসহ চারটি দেশের দাবি সত্ত্বেও কাতারে সামরিক ঘাঁটি বন্ধ করবে না বলে জানিয়েছে তুরস্ক। উপসাগরীয় অঞ্চলের নিরাপত্তা ও কাতারের সঙ্গে সম্পর্ক রক্ষার্থেই এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে দেশটির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে। স্থানীয় সময় শুক্রবার তুরস্কের টেলিভিশন চ্যানেল এনটিভিকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে ওই সিদ্ধান্তের কথা জানান দেশটির প্রতিরক্ষামন্ত্রী ফিকরি ইসিক।
ফিকরি বলেন, কাতারে সামরিক ঘাঁটি বন্ধের বিষয়ে তাঁদের কাছে কোনো অনুরোধ আসেনি। ২০১৪ সালে কাতারের সঙ্গে চুক্তি অনুযায়ী ঘাঁটিগুলো চালু থাকবে।
তুরস্কের প্রতিরক্ষামন্ত্রী বলেন, কাতারে অবস্থিত তাঁর দেশের সামরিক ঘাঁটি নিয়ে কারো মাথাব্যথা থাকা উচিত নয়। সৌদি নেতৃত্বাধীন দেশগুলোর পক্ষ থেকে ঘাঁটি বন্ধের অনুরোধ হবে কাতার ও তুরস্কের দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কে হস্তক্ষেপ।
উপসাগরীয় সহযোগিতা সংস্থার (জিসিসি) সদস্য দেশগুলোর পক্ষ থেকে সব ধরনের সম্পর্ক বিচ্ছিন্ন করার পর একরকম একঘরে কাতারের পাশে শুরু থেকেই দাঁড়িয়েছে তুরস্ক। সৌদি আরব সীমান্ত বন্ধের পর মধ্যপ্রাচ্যের প্রাকৃতিক সম্পদে সমৃদ্ধ ছোট দেশটিতে দুধ, দই ও মুরগি পাঠিয়েছে তুরস্ক। বৃহস্পতিবার কাতারে পাঁচটি সাঁজোয়া যান ও ২৩ সেনাসদস্যকে পাঠায় দেশটি। সেনা প্রশিক্ষণের অংশ হিসেবে তাঁদের পাঠানো হয়েছে বলে জানায় তুরস্ক।
কাতারে তুরস্কের সেনা রয়েছে ৮৮ জন। সেনার সংখ্যা এক হাজারে পৌঁছাতে পারে বলে জানিয়েছে ‘হুরিয়েত’ নামের একটি সংবাদপত্র।
সম্প্রতি মধ্যপ্রাচ্যের ছয়টিসহ সাত দেশ কাতারের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক ছিন্ন করে। সৌদি আরবের পাশাপাশি অন্য দেশগুলো হচ্ছে বাহরাইন, সংযুক্ত আরব আমিরাত (ইউএই), ইয়েমেন, লেবানন, মিসর ও দক্ষিণ এশিয়ার দেশ মালদ্বীপ। এসব দেশের অভিযোগ, সন্ত্রাসবাদে সমর্থন জুগিয়েছে কাতার। যদিও বিষয়টি বরাবরই অস্বীকার করেছে কাতার।
চলমান সংকট নিরসনে কাতারের কাছে ১৩ দফা দাবি জানায় চার আরব দেশ। সেখানে কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আলজাজিরা বন্ধসহ দেশটি থেকে তুরস্কের সামরিক ঘাঁটি সরিয়ে নেওয়ার কথাও বলা হয়।
১৩ দফা দাবির তালিকা কুয়েতের মাধ্যমে দোহার কাছে পাঠানো হয়েছে। কুয়েত কাতার-সংকট নিরসনে মধ্যস্থতাকারীর ভূমিকা পালনের কথা জানিয়েছে।
সংবাদ সংস্থা রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, দাবিনামা পূরণের জন্য কাতারকে ১০ দিন সময় বেঁধে দেওয়া হয়েছে।