ডেস্ক রিপোর্ট: সাতক্ষীরা ইটাগাছা পুলিশ ফাঁড়ির সামনে অবস্থিত ন্যাশনাল হাসপাতালটি কসাইখানায় পরিণত হয়েছে। দালালের মাধ্যমে রুগি বাগিয়ে হাতুড়ে ডাক্তার দিয়ে নাকি করা হচ্ছে অপারেশন। এতে রুগি ও রুগির স্বজনরা হচ্ছেন সর্বশান্ত। গরীব অসহায় রুগিদের সেবা দেওয়া নামে করা হচ্ছে প্রতারণা। কেউ প্রতিবাদ করতে গেলে মাস্তান ডেকে শাসানো হয়। দেওয়া হচ্ছে হুমকী। এমনই ঘটনা ঘটেছে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায়। গত ২৩ মে হার্নিয়ার সমস্যা নিয়ে এ হাসপাতালে ভর্তি হয় ভোমরার চৌবাড়িয়ার মৃত বাবর আলী মোল্লার ছেলে ইজাজুল ইসলাম। ভর্তির পর ৫দিন হাসপাতালে রেখে বিভিন্ন অজুহাতে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ মোটা অঙ্কের টাকা বাগিয়ে নেন। রুগির স্বজনদের বলা হয় রুগির অপারেশন করতে ১৭ হাজার টাকা লাগবে। রুমভাড়া বাবদ প্রতিদিন ৪০০টাকা দিতে হবে। ওষুধ বাইরে থেকে কিনতে হবে। এ চুক্তিতে অপারেশন করা হয়।
অপারেশন করেন হাতুড়ে ডাক্তার আশরাফুজ্জামান। রোগী স্বজনদের অভিযোগ অপারেশনের পর থেকে প্র¯্রাব হচ্ছে না। রুগির যন্ত্রণায় ছটফট করতে থাকলে নার্সদের ডেকেও মেলেনি সাড়া। রুগীর অবস্থা ধীরে ধীরে খারাপ হতে থাকে। অপারেশনের পর ডাক্তার আশরাফুজ্জামানকে আর হাসপাতালে দেখা যায়নি। বৃহস্পতিবার বিকেলে ডাক্তার আশরাফুজ্জামান হাসপাতালে অন্য আরেকজনকে অপারেশন করে পালিয়ে যাওয়ার সময় ধরে ফেলেন ইজাজুল ইসলামের জামাতা। এসময় হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র দেওয়ার চেষ্টা করা হয়।
কিন্তু তারা ছাড়পত্র না নিয়ে পুলিশ ও গণমাধ্যম কর্মীদের স্মরণাপন্ন হন। খবর পেয়ে গণমাধ্যম কর্মীরা হাসপাতালে গেলে রুগি ও তার স্বজনদের অবরুদ্ধ অবস্থায় দেখা যায়। পুলিশও খবর পেয়ে হাসপাতালে যায়। সাতক্ষীরা সদর থানার এসআই সাইদুর রহমানের নেতৃত্বে পুলিশ হাসপাতালে গেলে ম্যানেজার ও অন্যান্য কর্মকর্তারা গা-ঢাকা দেয়। পুলিশ এসময় খোঁজ খবর নিয়ে চলে আসে এবং বিষয়টি দ্রæত সমাধানের জন্য অন্যান্য কর্মচারীদের নির্দেশ দেন। এসআই সাইদুর রহমান জানান, খবর পেয়ে হাসপাতালে গিয়ে দায়িত্বশীল কাউকে পাইনি। রুগির স্বজনদের সাথে কথা বলে হাসপাতালের কর্মচারীদের বিষয়টি সমাধানের জন্য নির্দেশ দিয়েছি।
এদিকে রুগির স্বজনদের অভিযোগ পুলিশ ও সাংবাদিকদের জানানোর কারণে রাতে হাসপাতালের ম্যানেজার হুমকি দিয়ে শাসিয়েছেন। রুগি ইজাজুল ইসলামের স্ত্রী জানান বিষয়টি জানাজানি হওয়ার পর হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ দুদিন সময় নিয়েছে। এদিকে হাসপাতালের রিসিপশনে কর্মরত কর্মকর্তার সাথে এ ব্যাপারে বার বার কথা বলার চেষ্টা করা হলেও তিনি মুখ খুলতে চাননি।