শ্যামনগর

শ্যামনগর কৃষি খাস জমি বন্দোবস্ত বাস্তবায়ন কমিটির সদস্য পরিচয়ে প্রতারণা : ভূমিহীন নেতা মোকছেদ আটক

By daily satkhira

June 03, 2024

শ্যামনগর প্রতিনিধি:

সাতক্ষীরার শ্যামনগরে প্রতারণার অভিযোগে স্বঘোষিত ভূমিহীন নেতাকে আটক করেছে শ্যামনগর থানা পুলিশ। আটককৃত ব্যক্তি হলেন, শ্যামনগর পৌরসভার নকিপুর গ্রামের ছকিমুদ্দীন গাজীর ছেলে মোকছেদ আলী গাজী (৫৫)। এজেহার সূত্রে জানাজায়, মোকছেদ আলী নিজেকে ভূমিহীন নেতা ও শ্যামনগর উপজেলা কৃষি খাস জমি বন্দোবস্ত ও বাস্তবায়ন কমিটির সদস্য পরিচয় দিয়ে এবং বিভিন্ন সংগঠনের সাথে সম্পৃক্ত এই মর্মে এলাকার সাধারণ মানুষকে ভুল বুঝিয়ে খাস জমি পাওয়ে দেওয়া নাম করে টাকা তোলেন। কিন্তু মাসের পরে মাস, বছরের পর বছর হয়ে গেলেও তারা জমি না পেয়ে টাকা ফেরত চেয়েও টাকা ফেরত না পেয়ে শ্যামনগর থানায় মামলা করেন।

মোকছেদ ও পাতাড়াখোলা গ্রামের আব্দুল করিম এর স্ত্রী জাহানারা খাতুন সহ ৪/৫ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামী করে মামলা করেন শ্যামনগর উপজেলা ডুমুরিয়া গ্রামের শহিদুল ইসলামের স্ত্রী আনোয়ারা খাতুম (৪৩)। ভুক্তভোগীরা থানায় হাজির হয়ে ভূমিহীন নেতা মোকছেদের বিরুদ্ধে মামলা করেন। মামলা নং -৪। মোকছেদ শ্যামনগর সদরে ট্রাক টার্মিনাল সংলগ্ন রাস্তার পূর্ব পাশে ‘ভূমিহীন উন্নয়ন সংস্থা” নামীয় অফিস স্থাপন করে বিগত ইং-২০২০ সাল হতে জাহানারা সহ অজ্ঞাতনামা ৪/৫ জনের সাথে পরস্পর যোগসাজসে পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী শ্যামনগর থানা এলাকার বিভিন্ন গ্রামে যেয়ে, বিশেষ করে সহজ সরল নিরীহ মহিলাদের সরকারী খাস জমি চিরস্থায়ী বন্দোবস্ত সহ দলিল করে দিবে বলে মিষ্টি মিষ্টি কথায় ভুলিয়ে জন প্রতি ৬০ হাজার টাকা করে দাবী করে। এবং বলে যে, প্রথমে জন প্রতি ১০ টাকা দিলে তাদের নামে চিরস্থায়ী বন্দোবস্ত এর প্রপোজাল হবে। পরবর্তীতে বাঁকী টাকা প্রাপ্তির পর স্ব-স্ব নামে ১০ কাঠা থেকে দেড় বিঘা জমির দলিল করে দিবে এবং সরকারী ঘর পাইয়ে দিবে।

গত ইং-০৩/০৩/২০২০ তারিখ হতে ইং-০৭/০৭/২০২০ তারিখের মধ্যে মোকছেদ এর অফিস, ভূমিহীন উন্নয়ন সংস্থায় এসে আনোয়ারা ২৬ হাজার, ছফুরা ২১ হাজার, নাছিরুন ৩৫ হাজার, জেসমিন ৩৭ হাজার, রাবেয়া ২১ হাজার, ফিরোজা ২১ হাজার, পূর্নিমা ২১ হাজার, প্রভাষ ২১ হাজার, শাফিরুন ২১ হাজার, ইসমাইল ২১ হাজার, জাহানারা ১১ হাজার, জয়নাব ২১ হাজার, হালিমা ২১ হাজার, ফতেমা ১১ হাজার, আম্বিয়া ১১ হাজার , হালিমা ১১ হাজার , সুফিয়া ১২ হাজার, শাজিদা ১১ হাজার, জবেদা ২১ হাজার, মিনা ১১ হাজার, ২০। আছমা ২১ হাজার টাকা। সর্বমোট ৪ লক্ষ ৭ হাজার টাকা।

আরও জানাজায়, শ্যামনগর উপজেলার বিভিন্ন গ্রামের মহিলাদের সরকারী খাস জমি বন্দোবস্ত দলিল করে দিবে বলে লক্ষ লক্ষ টাকা প্রতারনামূলক ভাবে আত্মসাৎ করেছে। মোকছেদ সহ তার সহযোগীদের সাথে যোগাযোগ করলে তারা অফিসের ঝামেলা আছে, খুব তাড়াতাড়ি তোমরা আমাদের কথামত সরকারী খাস জমির চিরস্থায়ী বন্দোবস্ত পেয়ে যাবে এতে কোন সন্দেহ নাই। এভাবে তার সহযোগীরা একেক সময় একেক ধরনের কথাবার্তা বলে তালবাহনা করতে থাকে। সর্ব শেষ ২ রা জুন ২০২৪ তারিখ বিকাল অনুমান ০৪ টার সময় ১নং মোকছেদ এর বাড়ীতে যেয়ে জাহানারা খাতুনকে পেয়ে উল্লেখিত সকলে তাদের টাকা ফেরৎ চাইলে তারা পূর্বের ন্যায় তালবাহনা করে তাড়িয়ে দেয় এবং বলে যে, এব্যাপারে বাড়াবাড়ি করলে প্রয়োজনে তোদের নামে মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানী করব। জেল হাজত খাটাবো, শ্যামনগর সদরে পেলে মেরে হাত-পা ভেঙ্গে দিবো ইত্যাদি বিভিন্ন প্রকার ভয়ভীতি সহ হুমকি ধামকি দেয়।

শ্যামনগর থানার অফিসার ইনচার্জ আবুল কালাম আজাদ সত্যতা নিশ্চিত করেন বলেন, তার বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। তাকে আটক করে জেল হাজতে প্রেরণ করা হয়েছে।