নিজস্ব প্রতিনিধি : সাতক্ষীরা সদর উপজেলার আলীপুর ইউনিয়নের উপনির্বাচনকে ঘিরে রাস্তার উপর বোমা মেরে ত্রাস সৃষ্টি করে নির্বাচনী প্রচারনায় বিঘœ সৃষ্টির অভিযোগে দায়েরকৃত মামলায় ছয় আসামীর জামিন আবেদন না’মঞ্জুর করে জেল হাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। বৃহষ্পতিবার সাতক্ষীরার জেলা ও দায়রা জজ চাঁদ মোঃ আব্দুল আলীম আল রাজী এ আদেশ দেন।
জামিন না’মঞ্জুর হওয়া আসামীরা হলেন, সাতক্ষীরা সদরের আলীপুর ইউপি’র সাবেক চেয়ারম্যান আলীপুর গ্রামের মৃত আব্দুস সাত্তার সরদারের ছেলে মোস্তাফিজুর রহমান ছোট, একই গ্রামের আব্দুল কাদেরের ছেলে হাদিউজ্জামান বাদশা, দক্ষিণ আলীপুর গ্রামের হবু সরদারের ছেলে জাহাঙ্গীর হোসেন, আলীপুর ঢালীপাড়ার আব্দুল করিম সরদারের ছেলে আলাউদ্দিন সরদার, আলীপুর দীঘিরপাড়ের আব্দুর রহিম সরদারের ছেলে আব্দুর রব, ও সদর উপজেলার চাপারডাঙা গ্রামের আব্দুর রকিবের ছেলে রফিকুজ্জামান রিন্টু।
মামলার বিবরনে জানা যায়, চলতি বছরের ২৮ এপ্রিল সাতক্ষীরা সদর উপজেলার আলীপুর ইউনিয়নে উপনির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। এ নির্বাচনে ইউপি চেয়ারম্যান হিসেবে আব্দুর রউফ ঘোড়া প্রতীকে ও জিয়াউর রহমান জিয়া মোটর সাইকেল প্রতীকে প্রতিদ্বন্দিতা করেন। নির্বাচনী প্রচারণা শেষে গত ২২ এপ্রিল রাত ১১টা ৫০ মিনিটে আলীপুর ঢালীপাড়ায় তাসলিমা খাতুনের বাড়ির সামনে পাকা রাস্তার উপর ঘোড়া প্রতীকের সমর্থক মোস্তাফিজুর রহমান ছোট এর নেতৃত্বে সন্ত্রাসীরা বোমা ফাটিয়ে ত্রাস সৃষ্টি করে। সন্ত্রাসীরা মোটর সাইকেল সমর্থকদের প্রচারনা বন্ধ না করলে আবারো বোমা মেরে উড়িয়ে দেওয়ার হুমকি দিয়ে চলে যায়। এ ঘটনায় পরদিন মোটর সাইকেল প্রতীকের প্রার্থী জিয়াউর রহমান জিয়ার ভাই রফিকুল ইসলাম সরদার বাদি হয়ে সদর থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। মামলায় মোস্তাফিজুর রহমান ছোট, রেজাউল ইসলাম, ফরিদ হোসেন, হাদিউজ্জামান বাদশাসহ ২৫ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতনামা ৩০/৩৫ জনকে আসামী করা হয়। গত ২৬ এপ্রিল মোটর সাইকেল প্রতীকের তালবেড়িয়া গ্রামের নির্বাচনী কার্যালয়ে আগুন দেওয়ার ঘটনায় তালবেড়িয়া গ্রামের বদিউজ্জামান বাবলুর দায়েরকৃত মামলায় (জিআর-২০০/২৪ সদর) গ্রেপ্তার হয়। সাতক্ষীরা আদালত সূত্রে জানা গেছে, রফিকুল ইসলাম সরদারের দায়েরকৃত মামলার আসামীদের মধ্যে মোস্তাফিজুর রহমান ছোট, হাদিউজ্জামান বাদশা, জাহাঙ্গীর হোসেন, আলাউদ্দিন সরদার, আব্দুর রব ও রফিকুজ্জামান রিন্টু চলতি বছরের ২৫ এপ্রিল হাইকোর্টের বিচারপতি নাজমুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি কাজী এবাদত হোসেনের আদালতে অগ্রিম জামিনের আবেদন জানান। আদালত ওই ছয় আসামীকে আগামি সাত দিনের মধ্যে সাতক্ষীরা জেলা ও দায়রা জজ আদালতে হাজির হয়ে জামিন আবেদন করার নির্দেশ দেন। আসামীপক্ষের আইনজীবীরা ওই আদেশ গোপন রেখে ওই ছয় আসামীর সঙ্গে রেজাউল ইসলাম ও ফরিদ হোসেনের নাম যুক্ত করে একই আদালতে গত মে অন্তবর্তী জামিন আবেদন করেন। আদালত তাদেরকে ছয় সপ্তাহের সময় দিয়ে গত ১৮ জুনের মধ্যে সাতক্ষীরা জেলা ও দায়রা জজ আদালতে হাজির হয়ে জামিন আবদন করার নির্দেশ দেন। ১৮ জুন ঈদের ছুটি থাকায় বৃহষ্পতিবার রেজাউল ও ফরিদ ব্যতীত ছয় আসামী জেলা ও দায়রা জজ আদালতে হাজির হয়ে জামিন আবেদন করেন। রাষ্ট্রপক্ষ ও আসামীপক্ষের আইনজীবীদের বক্তব্য শোনার পর বিচারক ছয় আসামীর জামিন আবেদন না’মঞ্জুর করে জেল হাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেন। বাদিপক্ষের আইনজীবী অ্যাড. বাবলা শুনানীকালে আসামীপক্ষ হাইকোর্টে প্রথম যে অগ্রিম জামিন আবেদন করেছিলেন তা তুলে ধরেন। আসামীপক্ষের আইনজীবী ছিলেন অ্যাড. মিজানুর রহমান পিণ্টু, অ্যাড. জহুরুল ইসলাম। ছয় আসামীর জামিন আবেদন না’মঞ্জুর করার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন জজ কোর্টের পিপি অ্যাড. আব্দুল লতিফ।#