নিজস্ব প্রতিনিধি : সীমান্ত জেলা সাতক্ষীরা। এখানে ভারতের সঙ্গে সীমান্ত রয়েছে ১৩৮ কিলোমিটার। এ সীমান্ত দিয়েই দীর্ঘদিন ধরে পাচার হয়ে আসছে নারী ও শিশু। পাচার হওয়া এসব নারী ও শিশুদের দুর্বিসহ জীবন নিয়ে তৈরি করা ছবি “মেঘনা কণ্যা” একদিকে যেমন গ্রামের মানুষকে সচেতন করতে ভূমিকা রাখছে । তেমনি পাচার প্রতিরোধে অগ্রণী ভূমিকা রাখবে।
সিনেমায় পরিচালক দীপ্ত টেলিভিশনের প্রধান নির্বাহী ফুয়াদ চৌধুরীর সুনিপুন লেখনীতে ফুটিয়ে তুলেছেন যে, শহরের মেয়ে প্রজ্ঞা, আর গ্রামের মেয়ে হাসি। ক্যাম্পাসে একটি অনুষ্ঠানে নাচতে যেয়ে প্রজ্ঞার সঙ্গে তার বয়ফ্রে-ের সম্পর্কের অবনতি হয়। বয়ফ্রে- তার বাবা মায়ের অপছন্দের কারণে প্রজ্ঞাকে নাচ ছেড়ে দিতে বলে। ক্ষুব্ধ প্রজ্ঞা চলে যায় গ্রামের বাড়ি উলানিয়ায়। সেখানে তাকে নতুন বাস্তবতার মুখোমুখি হতে হয়। গ্রামের এক প্রাচীন ভবনের মধ্যে টেরাকোটা খচিত বাহারী নকশা তার মনমুগ্ধ করে। সেই টেরাকোটা খচিত ভবনে সে নাচের ছন্দ ফিরে পায়। এমন নাচ নাকি নাচতে পারতো একজনই। তার নাম হাঁসি। এটি জানার পর হাসিকে খুঁজতে থাকে প্রজ্ঞা। কিন্তু গ্রামের মেয়ে হাসি পাচার হয়ে একটি পতিতা পল্লীতে দুর্বিসহ জীবন কাটাচ্ছেন।
এক সময় বন্দিদশা থেকে পালিয়ে গ্রামে ফিরে আসে হাসি। খবর পেয়ে প্রজ্ঞা তার সাথে দেখা করে। এরপরও থেমে থাকেনি দালাল চক্রের কালো থাবা। দালাল নুরুল আর গ্রামের চেয়ারম্যানের সংঘবদ্ধ চক্র কোন কিছুর পরোয়া না করে হাসিকে আবারো পাচার করতে চায়। এতে বাঁধ দেয় প্রজ্ঞা। তবে সংঘবদ্ধ এ চক্রের বিরুদ্ধে জয়ী হতে পারাটা প্রজ্ঞা ও তার কাছের মানুষের কাছে প্রশ্নবিদ্ধ হয়ে দাঁড়ায়। এমন গল্প সম্বলিত চিত্রনাট্য ও সংলাপ করে সাতক্ষীরা শিল্পকলা একাডেমীর দর্শকদের মুগ্ধ করেছেন ফাহমিদুর রহমান ও আহম্মেদ খান হীরক।
রবিবার বিকেল চারটা থেকে সাতক্ষীরা শিল্পকলা একাডেমীতে দেখানো হয় মেঘনা কণ্যা সিনেমা। দর্শণের আসনে বসে উপভোগ করেন সাতক্ষীরার অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক বিষ্ণুপদ পাল, পুলিশের ইনটেলিজেন্স বিভাগের কর্মকর্তা মোঃ নজরুল ইসলাম, সাতক্ষীরা জেলার ভারপ্রাপ্ত মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা নাজমুন্নাহার, মানবাধিকার কর্মী মাধব চন্দ্র দত্ত, আব্দুস সবুর, দৈনিক প্রথম আলোর নিজস্ব প্রতিবেদক কল্যাণ ব্যাণার্জী, দৈনিক জনতার জেলা প্রতিনিধি মুক্তিযোদ্ধা কালিদাস রায়, ডিবিসি’র বেলাল হোসেন, শিক্ষক ও সাংবাদিক অমিনুর রহমান, সাংবাদিক শহীদুল ইসলাম, সাংবাদিক মিনালসহ শিক্ষার্থীসহ বিভিন্ন পেশাজীবী সংগঠনের সদস্যরা। সিনেমা দেখার পর বিশিষ্ঠ জনেরা তাদের মতামত ব্যক্ত করে বলেন, মানবপাচার প্রতিরোধে এ সিনেমা যেমন মানুষকে সচেতন করবে, তেমনি পাচারকারিদের প্রতিহত করতে ভিকটিমদের শক্তি যোগাবে। #