তরিকুল ইসলাম লাভলু : মুসলীম সম্প্রদায়ের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব হচ্ছে দুđটি ঈদ। এর মধ্যে পবিত্র ঈদ-উল-ফিতর একটি। আর এই উৎসবে মেতে উঠেছে গোটাবিশে^র মুসলমানরা। সকল হিংসা-বিদ্বেষ ভুলে একে অন্যের সঙ্গে কুশল বিনিময়ের মাধ্যেমে এ উৎসবটি পালন করবে। তবে ঈদকার্ডের বিষয়টি ভিন্ন। কয়েক বছর আগেও প্রচুর পরিমানে ঈদকার্ডের প্রচলন ছিলো। কিন্তু বর্তমান তথ্য-প্রযুক্তির ব্যবহার দ্রুত বেড়ে যাওয়ায় প্রায় বিলীন হতে চলেছে ঈদকার্ডের মাধ্যমে শুভেচ্ছা প্রচলনটি। হারিয়ে যাচ্ছে অনেকদিনের এই সাংস্কৃতি ও ঐতিহ্যর গতি। ফেসবুক, ম্যাসেঞ্জার, টুইটার, ইমো, স্কাইপ, ই-মেইল, হোয়াটসআপ, টেংগো, ভাইবারসহ নানা ধরনের প্রযুক্তি এই স্থানগুলো দখল করে নিয়েছে। প্রিন্টিং হাউসগুলো এখন আর আগের মতো অর্ডার পাচ্ছেনা। প্রায় বিলীন হয়ে যাওয়ার পথে এই শিল্প। অসাম্প্রদায়িক বাঙালির প্রাণের উৎসবকে সামনে রেখে একসময় প্রিন্টিং হাউসগুলো ব্যস্ত থাকতেন। কিন্তু এখন আর সেই ব্যস্ততা দেখা যাচ্ছেনা। প্রযুক্তির কাছে হার মানতে হচ্ছে ঈদকার্ড ব্যাবসায়ী মহলকে। সাতক্ষীরা জেলার কালিগঞ্জ উপজেলার নলতা বাজারে এক ষ্টেশনারী ব্যবসায়ী বলেন, আগের মত বর্তমানে ঈদ কার্ডের তেমন একটা বেচা-কেনা নেই। তথ্য প্রযুক্তির পাশে দাড়াতে পারছেনা ঈদ কার্ডের সাংস্কৃতি। একজন ঈদ কার্ড ক্রেতা বলেন, আমরা ছোট বেলায় ঈদ আসলে সর্বপ্রথম আমাদের বন্ধু এবং বান্ধবীদেরকে ঈদকার্ড দিয়ে শুভেচ্ছা জানাতাম। কিন্তু মানুষ এখন ভিন্ন ভিন্ন প্রযুক্তির মাধ্যমে একে অন্যকে শুভেচ্ছা বার্তা পাঠাচ্ছে। ক্ষুদে বার্তার মাধ্যমে অল্প টাকায় কম সময় ব্যয় করে অনেক দ্রুত শুভেচ্ছা বার্তা পৌঁছে দিচ্ছে শুভাকাঙ্খীদের হাতে। এ জন্য ঈদ কার্ডের চাহিদা আগের মতো নেই। আর এটির ব্যবহার ক্রমে বিলীন হয়ে যাচ্ছে। কলেজ ছাত্রী মৌসুমী জাহান নামের একজন ক্রেতা বলেন, ফেসবুকে ঢুকলেই হরেক রকমের ঈদ শুভেচ্ছা ছবি, আল্পনায় তুলি দিয়ে আঁকা অনেক শুভেচ্ছা বার্তা দেখা যায়। এজন্য মানুষ সময় বাঁচানোর জন্য বিভিন্ন প্রযুক্তির মাধ্যমে শুভেচ্ছা পাঠিয়ে দেয়। দেশে বর্তমানে অনলাইনের যুগ চলছে। ফেসবুক, ম্যাসেঞ্জার, টুইটার, ইমো, স্কাইপ, ই-মেইল, হোয়াটসআপ, টেংগো, ভাইবারসহ বিভিন্ন ধরনের যোগাযোগ মাধ্যমে মানুষ এখন আমন্ত্রন বা শুভেচ্ছা জানায়। তাই কেউ ঈদ কার্ডের প্রয়োজন আছে এমনটাই মনে করেনা। তারপরেও আমি ঈদের শুভেচ্ছা বার্তা কিনতে এসেছি কারণ বন্ধুদের কার্ডের মাধ্যমে দাওয়াত দেওয়ার মজাটাই অন্য রকম। নতুন আরও একটি প্রযুক্তির নাম হচ্ছে মোবাইল এসএমএস এর মাধ্যমে অল্প খরচে বন্ধুদের ঈদের নিমন্ত্রন জানানো। বর্তমানে মোবাইলে ১০ পয়সা খরচ করে এসএমএস এর মাধ্যমে শুভেচ্ছা বার্তা পাঠায় এতে সময় বাঁচে সাথে টাকাও বাঁচে সুতরাং সবাই সেটাই করছে। ১৫ টাকা দিয়ে কার্ড না কিনে একটা এসএমএস এর মাধ্যমে মাত্র ১০ পয়সা ব্যয় করবে এটাই স্বাভাবিক। কষ্ট করে দোকানে এসে কার্ড ক্রয় করে আবার বন্ধুদের কাছে পৌঁছে দেয়া কষ্টসাধ্য।