ফিচার

আশাশুনিতে শিক্ষা পদক বাছাই প্রতিযোগাতায় শ্রেষ্ঠ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বাওচাষ প্রাথমিক বিদ্যালয়

By daily satkhira

September 17, 2024

আবু ছালেক : সাতক্ষীরা জেলার আশাশুনি উপজেলায় প্রাথমিক শিক্ষা পদক ২০২৪ এর উপজেলা পর্যায়ে শ্রেষ্ঠ বাছাই প্রতিযোগিতায় আশাশুনি উপজেলার শ্রেষ্ঠ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় হিসাবে নির্বাচিত হয়েছে ৩নং বাওচাষ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। ১৯২১ সালে প্রতিষ্ঠিত ঐতিহ্যবাহী বিদ্যালয়টি সুনাম সুখ্যাতি নিয়ে স্বগৌরবে পরিচালিত হয়ে আসছে।

উপজেলার শোভনালী ইউনিয়নের বাওচাষ গ্রামে প্রতিষ্ঠিত বিদ্যালয়টির বর্তমান প্রধান শিক্ষক সন্তোষ কুমার দাশ। তিনি ২০০৫ সাল থেকে অদ্যাবধি এই বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব পালন করে আসছেন। এর আগে একই প্রতিষ্ঠানে ১৯৯৩ সাল থেকে ২০০০ সাল পর্যন্ত সহকারী শিক্ষক হিসাবে সুনামের সাথে শিক্ষকতা করেন। বিদ্যালয়ে বর্তমানে ২১২ জন ছাত্রছাত্রী রয়েছে। ৯ জন শিক্ষক ও ১জন কর্মচারী নিয়ে সুচারু ভাবে বিদ্যালয় পরিচালিত হচ্ছে। সরকারি বিধিবিধান যথাযথ ভাবে প্রতিপালন করে মানোন্নয়ন, পরিবেশ বজায় রাখা ও শিক্ষাদান কার্যক্রম পরিচালিত হয়ে থাকে। শিক্ষা অধিদপ্তরের নির্দেশনা বাস্তবায়ন, পরিচালনা কমিটির সার্বিক সহযোগিতা মাথায় রেখে প্রধান শিক্ষকের নেতৃত্বে শিক্ষকমন্ডলী সাবলীল ভাবে দায়িত্ব পালনের ফলে বিদ্যালয়ের অভ্যান্তরিন ও মেধা যাচাই পরীক্ষার ফলাফল বরাবরই ভাল হয়ে আসছে। ২০০৪ সাল থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত বিদ্যালয় থেকে ৫১ জন শিক্ষার্থী বৃত্তিপ্রাপ্ত হয়েছে।

যার মধ্যে ট্যালেন্টপুলে ৩৭ জন ও সাধারণ গ্রেডে ১৪ জন বৃত্তি পেয়েছে। ২০০৬ সাল থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত সমাপণী পরীক্ষায় বিদ্যালয়ের ঈর্ষণীয় সফলতা অর্জন করতে সক্ষম হয়েছে। ২০০৯ সালে কেবলমাত্র একবারই শতভাগের কমে ৯৭% কৃতকার্য হয়েছিল, আর প্রতিবারই ১০০% কৃতকার্য হয়েছে। ২০১২ থেকে ২০১৯ পর্যন্ত ৫৭ জন ছাত্রছাত্রী এ+ প্রাপ্তির অধিকারী হয়। এছাড়া বিদ্যালয়ের নিয়মিত অভ্যান্তরিন পরীক্ষায় বরাবরই ফলাফল ভাল হয়ে আসছে। বিদ্যালয় থেকে প্রাথমিক নিয়ে উচ্চতর শিক্ষা নিতে যাওয়া পুরাতন ছাত্রছাত্রীদের অনেকেই দেশ বিদেশে ভাল পর্যায়ে পৌছাতে সক্ষম হয়েছে।পুঁথিগত বা সরকারি কারিকুলাম অনুযায়ী শিক্ষাদানের পাশাপাশি স্ট্রা কারিকুলাম, সাধারণ জ্ঞান ও শিক্ষার্থীদের মান সম্মত করে গড়ে তুলতে অন্যান্য কার্যক্রমও বিদ্যালয়ে সফলতার সাথে বাস্তবায়ন করা হয়ে থাকে। এজন্য শিক্ষার্থীরা স্কুলকে আকর্ষণের জায়গা হিসাবে মনে গ্রথিত করে সময়মত প্রতিষ্ঠানে ছুটে আসতে অনুপ্রাণিত হয়ে থাকে।

বিদ্যালয়ে কাবদল কার্যক্রম চলমান রয়েছে। একটি বলিষ্ট গার্ড অব অনার প্রদর্শন দল আছে, যারা বিভিন্ন জাতীয় দিবসে উপজেলা পর্যায়ে অংশ গ্রহণ করে গার্ড অব অনার প্রদর্শণ করে থাকে। জাতীয় সঙ্গীত পরিবেশনে রয়েছে সুন্দর ব্যবস্থা। রয়েছে শিক্ষার্থীদের সঙ্গীত পরিচর্চা ও পরিবেশনে মান সম্মত ব্যবস্থা। ছায়াশীতল পরিবেশে শিক্ষার্থীরা মনোযোগ সহকারে পাঠ গ্রহনে মনোনিবেশ ও টিফিনে সময় কাটানোর সুন্দর মুহুর্ত কাটাতে সুযোগ পায়। বিদ্যালয়টি বিভিন্ন ফল ও ফুলের বাগান দ্বারা সুশোভিত করা। যা এলাকাবাসীসহ ভ্রমণ পিপাসুদের মনোরঞ্জন ও আকৃষ্ট করে থাকে। বিদ্যালয়ে দৃষ্টি নন্দন অভিভাবক সেড রয়েছে। যেখানে অভিভাবকরা শান্তিতে ও সুন্দর পরিবেশে সময় কাটিয়ে থাকেন। ছাত্রছাত্রীদের জন্য সুন্দর ও সুসজ্জিত হ্যান্ড ওয়াশের ব্যবস্থা ও সুপেয় পানীয় জলের ব্যবস্থা আছে। ফলে স্বাস্থ্যকর পরিবেশে স্বাস্থ্য সম্মত পরিবেশে পানির তৃষ্টা নিবারণ, পরিস্কার পরিচ্ছন্নতা ও প্রাকৃতিক ডাকে সাড়া দিতে কোন সমস্যার সৃষ্টি হয়না। রয়েছে বিদ্যালয় ক্যাম্পাসে শিশুদের জন্য আকর্ষণীয় খেলনা সামগ্রী। যার মধ্যে দোলনা, ঢেকিকল, চরকা, স্লিপার ইত্যাদি।

উপযুক্ত ও সংগত কারণে উপজেলা শিক্ষা পদক ২০২৪ বাছাই কমিটি প্রতিযোগিতা শেষে বিদ্যালয়টিকে উপজেলা পর্যায়ে শ্রেষ্ঠ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় হিসাবে নির্বাচিত করেছেন। শ্রেষ্ঠ বিদ্যালয় হিসাবে গড়ে তোলার পিছনে যারা সুনিপুন ভাবে দায়িত্ব পালন করেছেন তাদের মধ্যে অন্যতম প্রধান হলেন শিক্ষকমন্ডলী। বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সন্তোশ কুমার দাশের নের্তৃত্বে বিদ্যালয়টি দিনে দিনে আকর্ষণীয় পরিবেশ ও সুশিক্ষা দানের কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়েছে। তবে তিনি আর বেশীদিন থাকবেন না। আগামী নভেম্বর মাসে তার চাকুরি জীবনের পরি সমাপ্তি ঘটবে। চলে যাবেন অবসরে। আমরা তার বাকী জীবনের সফলতা, সুস্বাস্থ্য ও দীর্ঘায়ু কামনা করছি।

ইতি মধ্যেই সাংবাদিক মো: আবু ছালেক সহ বিভিন্ন সময়ে স্হানিয়,আঞ্চলিক,জাতিয় পত্রিকার সাংবাদিক সহ বিভিন্ন টেলিভিশনের সাংকাদিকরা বাওচাষ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের বিভিন্ন কার্যক্রম পরিদর্শন করছে।বাউচাষ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শরাপপুর গ্রামের কৃষ্ন পদ দাশ, ও আয়না দাশের পুত্র সন্তোষ কুমার দাশ সোমবার বিকাল ৫ টার সময় স্হানিয় সাংবাদিকদের জানান বিদ্যালয়ের সহকারি শিক্ষক,কার্যকরি কমিটির সহযোগিতা নিয়েই আজ এ সফলতা, তবে খোজ নিয়ে জানা গেছে ২ সন্তানের জনক,স্ত্রী, সন্তান,সংসারের পাশাপাশি স্কুলের প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব নিয়ে সন্তোষ কুমার দাশ সরকারি বরাদ্ধের বাহিরে নিজের ব্যাক্তিগত অর্থ দিয়েও বিদ্যালয়ের উন্নয়নে সর্বদা কাজ করে আসছে,২০২৪ সালের শেষ প্রান্তে যখন অবসরে যাবেন প্রধান শিক্ষক সন্তোষ কুমার দাশ তখন ভুলতে পারবে কি এলাকা বাসি,এমন প্রশ্ন সচেতন মহলের,তবে বাংলাদেশের সকল শিক্ষক সন্তোষ কুমার দাশের মত কাজ করে সফলতা অর্জন করুক এটাই দাবি সর্বস্তর অভিভাবকের।