সাতক্ষীরা

সাতক্ষীরায় নানা আয়োজনে রথযাত্রা অনুষ্ঠিত

By Daily Satkhira

June 26, 2017

নিজস্ব প্রতিবেদক: ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্যের মধ্য দিয়ে রোববার সারাদেশে পালিত হয়েছে হিন্দু সম্প্রদায়ের অন্যতম ধর্মীয় উৎসব শ্রী শ্রী জগন্নাথ দেবের রথযাত্রা। পরমাত্মায় জীবাত্মার মুক্তিকে চিরমুক্তি বলে বিশ্বাস করে হিন্দু সম্প্রদায়। সেই পারলোকিক মুক্তি কামনায় ভগবানের কৃপা প্রার্থনা করে রথযাত্রার র‌্যালি ও আলোচনা সভাসহ সকল কার্যক্রম পালন করে থাকেন তারা। মানভঞ্জনের পর শ্রীকৃষ্ণের বৃন্দাবন ফেরার তিথিকে হিন্দু সম্প্রদায় রথযাত্রা হিসেবে উদযাপন করে থাকে। আষাঢ় মাসের শুক্লা দ্বিতীয়া তিথিথে শুরু হয় এ উৎসব, আর একাদশী তিথিতে হয় প্রত্যাবর্তন। অর্থাৎ রথযাত্রার প্রথম দিন, যেখান থেকে টেনে নিয়ে যাওয়া হয়। আট দিন পর আবার সেখানেই ফিরিয়ে আনা হয়। সেটাই হলো উল্টো রথ। সারা দেশের ন্যয় পুরাতন সাতক্ষীরা মায়ের বাড়ির নাট মন্দিরে রোববার সকাল ৮টা থেকেশুরু হয় মুল আচার অনুষ্ঠান। বিকেল সাড়ে তিনটায় সময় রথযাত্রা উপলক্ষে আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়। জয়মহাপ্রভু সেবক সংঘের সভাপতি বিশ্বনাথ ঘোষের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নজরুল ইসলাম। সম্মানিত অতিথি ও উদ্বোধক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন শ্রী শ্রী রাধা শ্যামসুন্দর মন্দিরের অধ্যক্ষ পরমপুরুষ কৃষ্ণদাস ব্রহ্মচারি। বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন জেলা হিন্দু বৌদ্ধ খ্রীস্টান ঐক্য পরিষদের সভাপতি বিশ্বজিৎ কুমার সাধু। জয়মহাপ্রভু সেবক সংঘের কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সভাপতি ডাঃ সুশান্ত কুমার ঘোষ, সংগঠণের সাতক্ষীরা জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক রঘুজিৎ গুহ, জেলা হিন্দু বৌদ্ধ খ্রীষ্টান ঐক্য পরিষদের সভাপতি ম-লীর সদস্য গোষ্ট বিহারী ম-ল, জেলা মন্দির সমিতির উপদেষ্টা ধীরু ব্যানার্জী, রথযাত্রা আয়োজক কমিটির আহবায়ক জিতেন্দ্র নাথ ঘোষ, সদস্য সচিব প্রাণনাথ দাস, সদর উপজেলা হিন্দু বৌদ্ধ খ্রীষ্টান ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক নিত্যানন্দ আমিন, যুব কমিটির সভাপতি রণজিৎ বিশ্বাস, সহসভাপতি সুমন অধিকারী প্রমুখ। পরমপুরুষ কৃষ্ণদাস ব্রহ্মচারি বলেন, রথযাত্রায় ধর্ম বর্ণ নির্বিশেষে সকল জাতি ও জগতের সকল প্রাণীর মঙ্গল কামনা করা হয়। বিশ্ব শান্তির জন্য ভক্তরা আজ সম্মিলিত প্রার্থনায় জগন্নাথ দেবের আরাধনা করছেন। হিন্দুরা চায় সাম্প্রদায়িক শক্তি ও অশুভ চেতনার বিনাশ হোক। এ জগৎ যেন সকলের বাসযোগ্য ভূমিতে পরিণত হয়। আলোচনা সভা শেষে বিকেল সাড়ে চারটায় মায়ের বাড়ি থেকে জগন্নাথ, সুভদ্রা ও বলরামকে নানা উপাচারে সাজিয়ে বের হয় রথ। এর সঙ্গে যোগ দেয় বাজুয়ারডাঙার রথ। এ রথের রশি ধরে টেনে নিয়ে বের হন কয়েক হাজার নারী, পুরুষ ও শিশু। ভক্তদের বিশ্বাস এ রথের দড়ি ধরে টানলে তাদের আর পূর্ণজন্ম হবে না। রথযাত্রার র‌্যালিটি সাতক্ষীরা শহরের নবারুর মোড়, পৌরদীঘি, পাকাপুলের মোড়, পোষ্ট অফিস মোড়, ফুড অফিস মোড়, সরকারি কলেজ হয়ে আবারো মায়ের বাড়িতে ফিরে আসে। আগামি ৩ জুলাই আবারো বের হবে উল্টো রথ। এ উপলক্ষে আয়োজন করা হবে র‌্যালি ও আলোচনা সভার। মায়ের বাড়ি ছাড়া কাটিয়া মায়ের মন্দিরে রথযাত্রা উপলক্ষে এক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে ধুলিহার থেকে একটি রথ যোগ দেয়। এ ছাড়া কলারোয়া উপজেলার জয়নগর, তালা উপজেলার গোপালপুর, কালিগঞ্জের কালিবাড়ি,বালিয়াডাঙা, শ্যামনগর ও দেবহাটায় রথযাত্রা অনুষ্ঠিত হয়।