দেবহাটা

দেবহাটায় প্রতিপক্ষের হামলায় এক গৃহবধূ নিহত, আটক ১

By Daily Satkhira

June 28, 2017

কেএম রেজাউল করিম: দেবহাটার কুলিয়ায় গরু চরানোকে কেন্দ্র করে কল্পনা দাস(৫০) কে পিটিয়ে হত্যার ঘটনা ঘটেছে। ঘটনাটি উপজেলা কুলিয়া ইউনিনের পূর্ব কুলিয়া এলাকায় ঘটেছে। নিহতর স্বামী গোবিন্দ দাস জানান, গত রবিবার গরুচরানো নিয়ে কথাকাটি হয় স্থানীয় বাসীন্দা গুরুপদ হালাদারের পুত্র পবিত্র হালদারের সাথে। পরদিন আবার গরু নিয়ে একই সমস্যা সৃষ্টি হলে সোমবার পবিত্র হালদার ও তার ভাই রতন হালদার সঙ্গবদ্ধ হয়ে গালিগালাজ ও হুমকি দিতে থাকে। এসময় আমি বাড়ি না থাকায় তাদের কথায় উত্তর না দিয়ে আমার স্ত্রী বাড়িতে চলে আসে। সন্ধায় আমি বাড়ি ফিরে আসার পর সম্পূর্ণ বিষয়টি শুনে পবিত্র’র বাড়িতে মিমাংসার জন্য যায়। পবিত্র ও তার স্ত্রী ভারতী রানী এবং তার ছোট দেবর রতন হালদার আমাকে ও আমার স্ত্রীকে বেধরক পেটাতে থাকে। একপর্যয়ে আমরা মাটিতে লুটিয়ে পড়ি। এসময় পবিত্র ও রতন প্রথমে বাঁশের লাঠি ও পরে ইট দিয়ে আমার স্ত্রী কল্পনা দাসকে পেটাতে থাকে। তাদের আক্রমনে আমার স্ত্রী জ্ঞান হারিয়ে ফেল। তারপরও তারা তাকে রেহাই দেয়নি। তার উপর আরো অত্যাচার করতে থাকে। ইট দিয়ে তারা মাথা ও বুকে আঘাত করতে থাকে। এসময় আমার আতœচিতকারে স্থানীয়রা ছুটে আসলে কল্পনা কে ফেলে রেখে চলে যায়। পরে স্থানীয়দের সহযোগীতায় প্রথমে সখিপুর হাসপাতালে নেওয়া হলে উন্নত চিকিৎসার জন্য সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে নিয়ে যায়। ঈদের ছুটিতে ডাক্তার সংকট থাকায় পরদিন মঙ্গলবার খুলনা মেডিকেল হাসপাতালে নেওয়ার আগেই সদর হাসপাতালে মৃত্যু বরণ করেন। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের সাথে কথা বলে সদর থানা পুলিশকে অবহিত করলে আইনীয় প্রক্রিয়া শেষে মঙ্গলবার বাড়িতে এনে সৎকার করা হয়। এঘটনায় নিহত কল্পনা দাসের পুত্র বিশ্বজিত দাস বাদী হয়ে দেবহাটায় একটি এজাহার দায়ের করেছেন। একই দিনে পুলিশ হত্যার দায়ে উল্লেখিত ২নং আসামী পবিত্র হালদারের স্ত্রী ভারতী হালদার(৩৫)কে গ্রেপ্তার করেন। এবিষয়ে নিহত কল্পনা দাসের পুত্র বিশ্বজিত দাস বলেন, ঘটনার দিন আমার কেউ বাসায় ছিলাম না। পবিত্র ও রতন বিভিন্ন মানুষের কাছে টাকা সুধে খাটায়। তাদের অনেক টাকা থাকায় বিভিন্ন সময়ে মানুষের উপর অত্যাচার করে আসছে। বড় কোন সমস্যা সৃষ্টি হলে স্থানীয় মেম্বারকে বললে কোন রকম অন্যায় শিকার করে পাত্তা পায়। এলাকাবাসী জানায়, পবিত্র এলাকার ত্রাস হিসাবে পরিচিত। তার সব কাজের মদদ ও সহায়তাকারী তার ভাই রতন। এমনকি তারা কথায় কথায় নারীদের সাথে খারাপ আচারন ও মারধোর শুরু করে। তার এই স্বাভাবের কারণে ইতোপূর্বে ২জন স্ত্রী আতœহত্যা করেছেন। অপরদিকে কল্পনা দাসের উপর হামলার পর থেকে পবিত্র ও রতন এলাকায় হুমকি দিতে থাকে। বিষয়টি নিয়ে রতনের স্ত্রী শিখা রানীর কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমার স্বামী ৩দিন ধরে বাহিরে আছেন। আমার নিজের ফোন নেই তাই তার কোন খবর বলতে পারব না। তার স্বামীর বিরুদ্ধে হত্যা অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বিষয়টি পুরোপুরি অস্বীকার করেন। তবে কুলিয়া পালপাড়া এলাকায় তার স্বামীর দোকান টি ঘটনার পর থেকে খোলা ছিল। গত মঙ্গলাবার দুপুরে কল্পনার মৃত্যুর খবর পাওয়ার পর থেকে বন্ধ থাকতে দেখা যাচ্ছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয় দোকানদাররা। এদিকে, ওসি কাজী কামাল হোসেন জানন, দেবহাটা থানা পুলিশের পক্ষ থেকে আসামীদের গ্রেপ্তারের সকল প্রকার তৎপরতা চালানো হচ্ছে। নিহতের পরিবার ও এলাকাবাসীর দাবী অতিদ্রুত আসামিদের গ্রেপ্তার করে দৃষ্টান্তমূলক শান্তি প্রদান করা হোক। যাতে আর কেউই এমন অপরাধে সামিল না হতে পারে।