আশাশুনি প্রতিনিধি: আশাশুনিতে টর্চার সেলে আটকে রেখে মধ্যযুগীয় কায়দায় নির্মমভাবে নির্যানকারী ব্যবসায়ী গাওছুল হোসেন রাজকে গ্রেফতার ও শাস্তির দাবীতে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হয়েছে। রবিবার বিকালে শোভনালী ইউনিয়নের ন’কাটি গ্রামে প্রথম দফা নির্যানের স্থানে এ মানববন্ধনের আয়োজন করা হয়।
এলাকার নারী পুরুষের সমন্বয়ে অনুষ্ঠিত মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন, প্রত্যক্ষদর্শী জামায়াতে ইসলামী শোভনালী ইউনিয়ন আমীর জিয়াউল ইসলাম, প্রত্যক্ষদর্শী রবিউল ইসলাম, মজিলা খাতুন, নাছিমা খাতুন প্রমুখ। বক্তাগণ বলেন, নির্যাতনের শিকার আমিনুর রহমানের চক খলিশানী মৌজায় বসুখালী বিলে বিসমিল্লাহ হ্যাচারীর মালিক গাউছুল আজম রাজের মৎস্য ঘের সংলগ্ন ৫ বিঘা ডিডকৃত জমির মৎস্য ঘের আছে। রাজের ঘেরের মাছ কে বা কারা চুরি করেছে দাবী করে ষড়যন্ত্রমূলক ভাবে তাকে সন্দেহ করে ৩ এপ্রিল সকাল ৯টার দিকে বাড়ি থেকে উঠিয়ে ঘেরে নিয়ে অভিযুক্তরা মারপিট করে। খবর পেয়ে ইউপি চেয়ারম্যান মাওঃ আবু বক্কর সিদ্দীক গ্রাম পুলিশ বিল্লালকে পাঠালে সে আমিনুরকে মোটর সাইকেলে করে নিয়ে যাওয়ার পথে ন’কাটিতে পৌছলে চেয়ারম্যানের চামচা তৌহিদ বাঁশ দিয়ে বাড়ি মেরে তাকে নামিয়ে নিয়ে নির্মম মারপিট করতে থাকে। গ্রাম পুলিশ চেয়ারম্যানের কথা বললে তৌহিদ বলে “কিসের চেয়ারম্যান! আমরা চেয়ারম্যান মানিনা”।
এসময় রাজের কুটুম সাইদুল আরও ৩/৪ জনকে নিয়ে সেখানে হাজির হয়ে মারপিট শেষে মোটর সাইকেলে করে আশাশুনির বিসমিল্লাহ হ্যাচারিতে নিয়ে টর্চার সেলে আটকে মারপিট করতে থাকে। আমীর জিয়াউর ও রবিউলদের সামনে সেখানে হাত-পা বেধে উপুর করে শুইয়ে মধ্যযুগীয় কায়দায় সন্ত্রাসী স্টাইলে অবর্ণনীয় নির্যাতন চালান হয়। আমরা হতবাক হয়ে পড়ি। এক পর্যায়ে জিয়াউল ইসলাম নিজেকে জামায়াতের ইউনিয়ন আমীর পরিচয় দিয়ে আইন হাতে তুলে নিচ্ছেন কেন, প্রয়োজনে থানায় দিন। বলার সাথে সাথে তিনি অশ্রাব্য ভাষায় কথা বলে তাদেরকে গেটের বাইরে বের করে দিতে হুকুম দিয়ে হুংকার দিয়ে ওঠেন। তার স্ত্রী নিরাপরাধ স্বামীকে ছেড়ে দিতে অনুনয় বিনয় করেন, কিন্তু কঠিন দিলকে স্পর্শ করেনি। বরং আয়না ঘরের মত টর্চার সেলে নির্মম টর্চার অব্যাহত রাখেন। বাধ্য হয়ে আমরা থানায় গিয়ে অভিযোগ করলে দীর্ঘ সাড়ে তিন ঘন্টা পর পুলিশ তাকে উদ্ধার ও আটকে রেখে নির্যাতনকারী রাজকে থানায় নিয়ে যায়।
পরবর্তীতে বিএনপি শীর্ষ নেতাদের মধ্যস্থতায় মিমাংসা করা হলেও হাসপাতালের বেডে শুয়ে কাতরানো আমিনুরকে চোর ডাকাতের মিথ্যা তকমা দিয়ে নির্যাতনের অপরাধ মুছে ফেলতে অপচেষ্টা চালান হচ্ছে। মানববন্ধন শেষে অমানবিক নির্যাতনকারী ও আইন অমান্যকারী রাজকে গ্রেফতার ও আইনের আওতায় নিতে জোর দাবী জানিয়ে শ্লোগানো শ্লোগানে আকাশ প্রকম্পিত করে বিক্ষোভ মিছিল বের করা হয়।