নারীর সুডৌল আঙ্গুলের মতো আকৃতি হওয়ায় ইংরেজ রসিকরা এর নাম দেন ‘লেডিস ফিঙ্গার’। ঢেঁড়স একটি জনপ্রিয় সবজি— হোক সেটা শহরে কিংবা গ্রামে। এছাড়া পুষ্টিগুণের বিচারে এর মূল্য অনেক। এতে রয়েছে প্রোটিন, ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেশিয়াম, লোহা ও ভিটামিন এ বি সি। ঢেঁড়সে রয়েছে ক্যারোটিন, ফলিক এসিড, থায়ামিন, রিবোফ্লাভিন, নিয়াসিন, আঞ্চলিক এসিড এবং অত্যাবশ্যকীয় অ্যামাইনো এসিড। এর রিবোফ্লাভিনের পরিমাণ বেগুন ও শিমের চেয়েও বেশি। প্রতি ১০০ গ্রাম ঢেঁড়সে ৬৬ মিলিগ্রাম ক্যালসিয়াম, ১.৫ মিলিগ্রাম লোহা, ৫২ মিলিগ্রাম ক্যারোটিন, দশমিক শূন্য ৭ মিলিগ্রাম থায়ামিন, দশমিক ১ মিলিগ্রাম রিবোফ্লাভিন, দশমিক ৬ মিলিগ্রাম নিয়াসিন ও ১৩ মিলিগ্রাম ভিটামিন বিদ্যমান। শত রকমের সুস্বাদু শাকসবজির মধ্যে ঢেঁড়স এমন একটি সবজি যা আপনার স্বাস্থ্যের জন্য খুব উপকারী। অনেকেই ঢেঁড়স খেতে ভালোবাসেন কারণ এর স্বাদ অন্য সবজিগুলো থেকে অনেকটাই ভিন্ন। আবার রাঁধতেও সময় লাগে বেশ কম। চলুন তাহলে জেনে নিই নানা ধরণের ভিটামিনে ভরপুর ঢেঁড়সের কিছু স্বাস্থ্য গুনাগুন। প্রাণবন্ত চুল
সুস্বাদু সবজি ঢেঁড়স চুলের জন্য খুব উপকারী এবং ঢেঁড়সে আছে এমন কিছু উপাদান যা চুলের কন্ডিশনার হিসেবে কাজ করে, খুশকি ও উকুন রোধ করে, স্কাল্পের শুষ্কতা ও চুলকানি দূর করে থাকে এবং চুলের স্বাস্থ্য ভালো রাখে।
ডায়াবেটিক রোগীদের জন্য ভাল ঢেঁড়সে আছে দেহের গ্লুকোজের মাত্রা কিমিয়ে রাখার উপাদান ও এক ধরণের ফাইবার উপাদান যা দেহের সুগার নিয়ন্ত্রনে রাখে।
দেহের রক্ত ধমনী গঠন করে ঢেঁড়স খাওয়ার ফলে দেহে প্রচুর পরিমাণে ফ্লেভনয়েড( flavonoid ) ও ভিটামিন সি পৌছায় যার মাধ্যমে রক্ত ধমনী সুগঠিত হয়ে থাকে।
রক্তশূন্যতা রোধ করে ঢেঁড়সের হিমোগ্লোবিন, আয়রন ও ভিটামিন কে দেহে রক্ত জমাট সমস্যা রোধ করে, দেহে প্রয়োজনীয় লাল প্লেটলেট তৈরি করে এবং দেহের দুর্বলতা রোধ করে থাকে। তাই রক্তশূন্যতার সমস্যায় বেশি করে ঢেঁড়স খাওয়া ভালো।
ওজন কমাতে সহায়ক ঢেঁড়সের ফাইবার অনেকটা সময় পেট ভরা রাখে ও ভিটামিন উপাদানগুলো দেহে দীর্ঘক্ষণ পর্যন্ত থাকে এছাড়াও ঢেঁড়সে ক্যালরির পরিমাণ খুব কম তাই এটি ডায়েট মেন্যুতে রাখতে পারেন।
আলসার সমস্যা রোধ করে ঢেঁড়সের soluble adhesive উপাদান আলসারের সমস্যা রোধ করতে খুব সহায়ক। সুস্থ থাকতে ও আলসার সমস্যা রোধ করতে ঢেঁড়স রাখুন খাদ্য তালিকায়।
মজবুত হাড় গঠন করে ঢেঁড়সের ভিটামিন কে উপাদান দেহের হাড় মজবুত করে এবং অস্টিওপরোসিস রোগ রোধ করে হাড় পুনরূদ্ধার করে থাকে।
কলেস্টরোলের মাত্রা ঠিক রাখে ঢেঁড়সের ফাইবার ও পেক্টিন দেহের খারাপ কলেস্টরোলের মাত্রা নিয়ন্ত্রনে রাখে এবং atherosclerosis সমস্যা রোধ করে।
এই সকল স্বাস্থ্যগুন ছাড়াও ঢেঁড়সের নানা ধরণের উপাদান আমাদের ত্বকের সমস্যা ও কোলন ক্যানসার প্রতিরোধ, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি, চোখের দৃষ্টি শক্তির উন্নয়ন ইত্যাদি নানা ধরণের কাজে আসে। তাই সুস্থ থাকতে আপনার প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় রাখুন স্বাস্থ্যগুনে ভরপুর ঢেঁড়স।