স্বাস্থ্য

গরমে ঋতুভিত্তিক সবজির যত উপকারিতা

By Daily Satkhira

June 29, 2017

গরমের এ সময়টিতে আমাদের শরীরের তাপমাত্রা সূর্যের উত্তাপের কারণে বেড়ে যায়। অনেক সময় খাদ্য গ্রহণের কারণেও তাপমাত্রা বেড়ে যেতে পারে। গরমের সময় ভারী খাবার খাওয়ার ফলে অস্বস্তি হয়ে থাকে। সেই সঙ্গে বদহজমের কারণও হতে পারে। তবে এ সময় ঋতুভিত্তিক সবজি খাওয়া স্বাস্থ্যের জন্য খুবই উপকারী। প্রতিটি সবজিরই রয়েছে নিজস্ব পুষ্টিগুণ। তাহলে জেনে নিন এমনই কিছু সবজির কথা যেগুলো খেলে আপনার স্বাস্থ্য পর্যাপ্ত পুষ্টি পাবে এবং কোনো অস্বস্তিও তৈরি হবে না।

করলা : করলা সুগারের মাত্রা কমাতে এবং ক্যান্সার ও ইনফেকশন রোধে লড়াই করে। এটা কোষ্ঠকাঠিন্য থেকে পরিত্রাণ দেয়। করলা দেহে রক্তসঞ্চালন বৃদ্ধির পাশাপাশি রক্ত পরিশোধনে সাহায্য করে। গরমের দিনে চোখ ও ত্বকের বিভিন্ন ধরনের ইনফেকশনের প্রতিষেধক হিসেবে কাজ করে। সজনে : এটির শাক হিসেবে ব্যবহৃত পাতা ভিটামিন এ এর উৎস। সজনের পাতা এবং ফল উভয়ের মধ্যেই পর্যাপ্ত পরিমাণে পুষ্টি আছে। এতসব পুষ্টিগুণ একসাথে আছে বলেই এর মাধ্যমে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা এবং জীবন ধারনের পুষ্টি দুটোই পাওয়া যায়। বহু ধরনের ভিটামিন, মিনারেল, কার্বোহাইড্রেট, প্রোটিন ও ফ্যাটের সমাহার এই সজনে।

চিচিঙ্গা : দেহের তরল উৎপাদন বৃদ্ধি করে এবং শুষ্কতা দূর করতে সাহায্য করে চিচিঙ্গা। হৃদরোগীদের জন্যও অনেক উপকারী চিচিঙ্গা। বুক ধড়ফড় করা ও শারীরিক পরিশ্রমের ফলে সৃষ্ট বুকে ব্যথা দূর করতে সাহায্য করে চিচিঙ্গা পাতার রস। দেহে শীতল প্রভাব দান করে চিচিঙ্গা।

শসা : শসা হতে পারে আপনার জন্য পারফেক্ট একটি সবজি। এতে শতকরা ৯৬ ভাগ পানি রয়েছে এবং কাঁচা সবুজ অবস্থায় খাওয়া যায়। শসায় ভিটামিন সি এবং সিলিকা রয়েছে, যাতে টিস্যু বৃদ্ধি ও ত্বক পরিষ্কারকের বৈশিষ্ট্য বিদ্যমান। শসার উচ্চ পানীয় গুণ রয়েছে যা গরমের দিনের জন্য যথোপযুক্ত। শসার খোসাসহ খাওয়া খুবই জরুরি। কারণ, শসার খোসায় প্রচুর পরিমাণে পটাশিয়াম, ম্যাগনেশিয়াম এবং ফাইবার রয়েছে। স্বাস্থ্যের জন্য এই উপাদানগুলো অতি জরুরি।

কুমড়া : কুমড়া শীতলতা ও মূত্রবর্ধক বৈশিষ্ট্য ধারণ করে। এটি পরিপাকক্রিয়ায় ভালো কাজ করে এবং পাচনতন্ত্রের কৃমি দূর করতে বড় ধরনের ভূমিকা পালন করে থাকে। এতে পটাশিয়াম বিদ্যমান এবং ব্লাড প্রেসার নিয়ন্ত্রণ করে ও সুগারের ফলে অগ্ন্যাশয়ের উদ্দীপনা কমায়। কুমড়া ত্বকের রোগ নিরাময়ের ভালো একটি দাওয়াই হিসেবে কাজ করে। উচ্চ ফাইবার ও কম ক্যালোরিসমৃদ্ধ কুমড়ায় রোগ প্রতিরোধ পুষ্টিও বিদ্যমান। যেমন প্যানটোথেনিক অ্যাসিড, ম্যাগনেশিয়াম, ভিটামিন ই ও সি।

ঝিঙ্গা : ঝিঙ্গা গরমের দিনের সবজি হিসেবে খুবই উপকারী। এতে প্রচুর পরিমাণে পানি, ফাইবার ও পটাসিয়াম থাকে, যা দেহের ইলেক্ট্রোলাইটের ভারসাম্য রক্ষা করতে সাহায্য করে।

বেগুন : এটি একটি বহুল প্রাপ্য সবজি। এতে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট রয়েছে। বেগুনে মলিবডেনিয়াম, পটাশিয়াম, ভিটামিন কে, ম্যাগনেশিয়াম, কপার, ভিটামিন সি, ভিটামিন বি৬, ফলেট বিদ্যমান। এটি শক্তিশালী অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট হিসেবে পরিচিত, যা খারাপ কোলেস্টেরলও ধ্বংস করতে কাজ করে। কিন্তু যদি কিডনি ও পিত্তথলির সমস্যা থাকে তাহলে বেগুন এড়িয়ে চলাই ভালো।

লাউ : গরমের উত্তাপ থেকে বাঁচতে লাউ একটি অন্যতম সবজি হিসেবে বিবেচিত। এটি পেট ফাঁপা, কোষ্ঠকাঠিন্য ও অ্যাসিডিটি নিয়ন্ত্রণ করে। অধিক পুষ্টিগুণ এবং কম ক্যালোরি ও চর্বি জোগান দেয়া এই সবজিতে ৯৬ শতাংশ পানি রয়েছে। এটা গরমের দিনে সত্যিই উপকারী এবং হিট স্ট্রোক রোধের ক্ষমতা রাখে। পাশাপাশি গরমের দিনে ঘামের সাথে যে পানি বের হয়ে যায় শরীর থেকে তা পূরণে সহায়ক ভূমিকা পালন করে।