আশাশুনি

আশাশুনিতে নিরাপদে বাগদা চিংড়ীতে অপদ্রব্য পুশ চলছে

By daily satkhira

May 21, 2025

আশাশুনি প্রতিনিধি: আশাশুনি উপজেলা সাদাসোনা খ্যাত বাগদা চিংড়ী চাষে সফল উপজেলা। এখানের অধিকাংশ চাষী চিংড়ী চাষের সাথে জড়িত। দীর্ঘদিন চিংড়ীতে অপদ্রব্য পুশ করে ওজন বাড়ানোর কারবার চলে আসছে। প্রশাসন প্রতারোধে উদ্যোগ নিয়ে থাকলেও বিগত ৭/৮ মাসে তেমন কোন তৎপরতা দেখা যায়নি। বরং প্রশাসনের অসাধু দু’ একজন কর্মচারীর বিরুদ্ধে পুশ কারবারের সাথে জড়িতদের সাথে যোগসাজস ও সখ্যকার অভিযোগ পাওয়া গেছে। ফলে উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় চিংড়ীতে অপদ্রব্য পুশের অপতৎপরতা ব্যাপক আকার ধারন করেছে।

আশাশুনি উপজেলার বুধহাটা ইউনিয়ন, কুল্যা ইউনিয়ন, কাদাকাটি ইউনিয়ন, শোভনালী ইউনিয়ন, আশাশুনি সদর, বড়দল, দরগাহপুর, খাজরা, আনুলিয়া, শ্রীউলা ও প্রতাপনগর ইউনিয়নের সকল মাছের সেট ও বাজারে কমবেশী পুশকৃত চিংড়ী পাওয়া যায়। সেট বা বাজারের নির্ধারিত স্থানে, আশপাশের কিছু স্পটে ও ব্যবসায়ীদের বাড়িতে প্রতিদিন ঘর বা ছাবড়ার মধ্যে চুক্তিবদ্ধ শ্রমিকরা সিরিঞ্জের মাধ্যমে জেলি বা বিভিন্ন প্রকার অপদ্রব্য পুশ করে থাকে। চিংড়িতে জেলি/অপদ্রব্য পুশ বেড়ড়েই চলেছে, এটা অশনিসংকেত। ওজন বাড়ানোর জন্য অসাধু ব্যবসায়ীরা সিরিঞ্জ দিয়ে চিংড়িতে জেলিসহ বিভিন্ন অপদ্রব্য পুশ করেন। জেলিযুক্ত চিংড়ি মাছে ক্রেতারা তিনভাবে প্রতারিত হচ্ছেন। প্রথমত: ওজন প্রতারণা; দ্বিতীয়ত: দাম বেশি ও তৃতীয়ত: মাছের গুণগত মান নিয়ে প্রতারিত হচ্ছেন। এতে স্বাস্থ্যঝুঁকি রয়েছে। এ ছাড়া ভেজাল চিংড়ি রপ্তানি হলে দেশের সুনাম নষ্ট হওয়ার সঙ্গে ঝুঁকিতে পড়বে প্রতিযোগিতাপূর্ণ আন্তর্জাতিক বাজারে টিকে থাকার সুযোগ।

খাদ্য ও পুষ্টিবিষয়ক বিভিন্ন গবেষণা নিবন্ধ থেকে জানা যায়, চিংড়ি মাছের ভেতরে জেলিসহ অন্যান্য অপদ্রব্য মিশ্রিত চিংড়ি খেলে কিডনি, লিভার ও পাকস্থলীর নানাবিধ জটিলতা তৈরি হতে পারে। জেলির যে রাসায়নিক উপাদান রয়েছে, সেটা মানবদেহের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর। তাছাড়া খাবারের সঙ্গে যেকোনো অপ্রত্যাশিত বস্তু, যা খাবার নয়, সেটা থাকাটাই ক্ষতিকর।

বুধহাটার চিংড়ী চাষী আঃ রাজ্জাক জানান, আমরা লাভের আশায় চিংড়ী মাছ চাষ করে থাকে। নানা প্রতিকুলতা মোকাবলা করে অভিজ্ঞদের পরামর্শ মেনে প্রচুর টাকা ইনভেস্ট করে চাষ করে থাকি। এক পর্যায়ে মাছ ধরে বিক্রয় করি। আমরা কোন প্রকার পুশ করা, মাছ ভেজান বা অপরাধের সাথে জড়িত হইনা। ফড়িয়া বা ব্যবসায়ীরা এসব অপরাধ করে থাকে। মৎস্য অফিস, প্রশাসন ও থানা পুলিশকে যখন সুযোগ পাই অপরাধ রোধের দাবী জানিয়ে থাকি। কিন্তু কেন জানিনা থামছেনা। তবে আইন প্রয়োগকারী সংস্থা, মৎস্য অফিস তথা প্রশাসনকে ম্যানেজ করে পুশকারীরা এক প্রকার প্রকাশ্যে অপকর্ম করে যাচ্ছে বলে তিনি দাবী করেন।

আশাশুনির মাছ ব্যবসায়ী আমিরুল ইসলাম জানান, আমরা পুশকৃত মাছ কিনতে চাইনা, বলতে গেলে ব্যবসা বাঁচিয়ে রাখার সার্থে বাধ্য হয়েই পুশকরা চিংড়ী কিনতে হয়।

মাছ ব্যবসায়ী ও কাটা ব্যবসায়ী আমিন উদ্দীন জানান, অপদ্রব্য পুশের কারনে মাছ রপ্তানীতে ঝুঁকি দেখা দিয়েছে। মাছের মূল্য নিয়েও অনেক ঝামেলি সৃষ্টি হচ্ছে। বিদেশ থেকে মাছ ফেরৎ পাঠানোর ঘটনাও ঘটেছে। চিংড়ী শিল্প এখন সংকটময় পরিস্থিতিতে রয়েছে। তারপরও কেন জানিনা প্রশাসন ব্যবস্থা নিতে গড়িমশি করছে। মৎস্য অফিস মাঠে নামছেনা। মাঠে নামা পড়ে থাক, তাদের বিরুদ্ধে উৎকোচ লেনদেনের মত অনৈতিক অপরাধের অভিযোগের কথা শোনা যাচ্ছে। আর অভিযোগের স্বপক্ষে প্রমান মিলছে, বিগত অর্ধ বছরে অপরাধ রোধে কোন ব্যবস্থা না নেওয়া।

এব্যাপারে সিনিয়র উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তার সাথে মোবাইলে যোগাযোগ করে বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।