প্রেস বিজ্ঞপ্তি : দেবহাটার টাউনশ্রীপুর শরচ্চন্দ্র উচ্চ বিদ্যালয়ের চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী জান্নাতুল ফেরদৌস তাঁর বিরুদ্ধে ছড়ানো মিথ্যা ও ভিত্তিহীন অভিযোগের প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন করেছেন।
রোববার (১২ অক্টোবর) দুপুরে সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, কিছু ব্যক্তি ও মহল তাঁর ও বিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষক সঞ্জীব কুমার ব্যানার্জীর নাম জড়িয়ে “অনৈতিক সম্পর্কের” মিথ্যা অপবাদ ছড়িয়েছে। তিনি এসব অভিযোগকে সম্পূর্ণ মিথ্যা, বানোয়াট ও ষড়যন্ত্রমূলক বলে দাবি করেন।
জান্নাতুল ফেরদৌস লিখিত বক্তব্য বলেন, তাঁর স্বামী দেবহাটার নাংলা গ্রামের মহিদ বিশ্বাস দীর্ঘদিন ধরে তাঁকে নির্যাতন করে আসছিলেন। নির্যাতনের কারণে তিনি তাঁর মাকে নিয়ে কুলিয়া আশু মার্কেট এলাকার একটি ভাড়া বাড়িতে বসবাস শুরু করেন। ওই বাড়ির ম্যানেজারের সঙ্গে ভাড়াবিষয়ক একটি বিরোধ দেখা দিলে তিনি বিষয়টি বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষককে জানাতে চান। প্রধান শিক্ষক ফোনে না ধরায় সহকারী প্রধান শিক্ষক সঞ্জীব কুমার ব্যানার্জীকে জানান, যিনি পরে বিষয়টি সমাধানের জন্য তাঁর বাসায় আসেন।
ঠিক সেই সময় আমার স্বামীসহ কিছু লোক হঠাৎ আমাদের ঘিরে ধরে অশালীন আচরণ শুরু করে এবং পরিকল্পিতভাবে আমাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ তোলে।
তিনি দাবি করেন, আমার স্বামী আমাকে তালাক দিতে রাজি ছিলেন না। আমি যখন ডিভোর্সের কথা বলি, তখনই সে প্রতিশোধ নিতে এই নাটক সাজায়। সে ঐদিন নাটক সাজিয়ে মব তৈরি করে আমার কাছ থেকে তালাকনামায় সই করিয়ে নেয়। ঐ দিন ঘটনাস্থলে উপস্থিত দুষ্কৃতকারীরা সঞ্জীব স্যারের কাছে ২০ লাখ টাকা দাবি করে। পরে থানায় খবর দিলে পুলিশ গিয়ে তাঁদের উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যায় বলে জানান জান্নাতুল। পরদিন আদালত থেকে তাঁরা জামিন ও খালাস পান।
তিনি আরও বলেন, “সঞ্জীব স্যার হিন্দু ধর্মাবলম্বী, আমি মুসলমান। ধর্ম, সমাজ ও নৈতিকতার দিক থেকে এমন সম্পর্কের প্রশ্নই আসে না। এটি সম্পূর্ণ একটি কুচক্রী মহলের পরিকল্পিত ষড়যন্ত্র, যার উদ্দেশ্য আমাদের সামাজিক ও পেশাগত সম্মান নষ্ট করা।
জান্নাতুল অভিযোগ করেন, তাঁর সাবেক স্বামী ও স্থানীয় কিছু প্রভাবশালী ব্যক্তি এখন তাঁকে চাপ দিচ্ছে যেন সঞ্জীব স্যার ধর্ম পরিবর্তন করে তাকে বিয়ে করেন, না হলে চাকরি হারাতে হবে বলে হুমকি দেওয়া হচ্ছে।
তিনি দাবি করেন যে কুচক্রী মহল ও তার স্বামী তাঁকে ব্যবহার করে সঞ্জীব স্যারের বিরুদ্ধে মিথ্যা পরিবেশনার চেষ্টা করছে। জানতে চান, কেন তাদের বিরুদ্ধে পরিকল্পিতভাবে প্রচার চালানো হচ্ছে এবং কোন উদ্দেশ্য নিয়ে স্যারের জায়গায় অন্য শিক্ষক নিয়োগ করার চেষ্টা করা হচ্ছে।
সংবাদ সম্মেলনে জান্নাতুল ফেরদৌস কঠোর ভাষায় বলেন, আমি স্পষ্টভাবে বলতে চাই, আমার সঙ্গে সঞ্জীব স্যারের কোনো অনৈতিক সম্পর্ক নেই। তিনি হিন্দু ধর্মাবলম্বী, আমি মুসলমান। ধর্ম, সমাজ ও নৈতিকতার দিক থেকে এমন সম্পর্কের প্রশ্নই আসে না। এটি নিছক ষড়যন্ত্র।
তিনি প্রশাসন ও পুলিশি তদন্তের প্রতি আস্থা রাখার অনুরোধ জানিয়ে তার বিরুদ্ধে চালানো অপপ্রচার ও ষড়যন্ত্রের সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ তদন্ত, যারা মিথ্যা তথ্য ছড়িয়েছে তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা।, তার ও তার পরিবারের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার দাবি জানান।
তিনি বলেন, আমি একজন সাধারণ নারী, পরিশ্রমী কর্মচারী। এই চাকরিটিই আমার পরিবারের একমাত্র ভরসা। অথচ মিথ্যা অপবাদে এখন আমার জীবন ও সম্মান দুটোই হুমকির মুখে। সংবাদ সম্মেলন শেষে তিনি সাংবাদিকদের অনুরোধ করে বলেন, দয়া করে যাচাই না করে কোনো বিভ্রান্তিকর তথ্য প্রচার করবেন না। আমি নির্দোষ, আমি শুধু ন্যায়বিচার চাই। সত্যটা প্রকাশ হোক, মিথ্যার জাল ছিন্ন হোক।