সাতক্ষীরা

জানাযায় মানুষের ঢল ; শ্রদ্ধা আর ভালবাসায় সমাহিত মুফতি কচি

By Daily Satkhira

July 01, 2017

নিজস্ব প্রতিবেদক : সর্বস্তরের মানুষের ভক্তি শ্রদ্ধা আর অফুরান ভালবাসায় সিক্ত হয়ে চির বিদায় নিলেন সাতক্ষীরার প্রবীণ সাংবাদিক সাপ্তাহিক দখিনায়ন সম্পাদক মুফতি আবদুর রহিম কচি। বেদনাশ্রু আর ফুলেল শুভেচ্ছায় একাকার হয়ে সবার প্রিয় কচি ভাই শায়িত হয়েছেন চির নিদ্রায়। শনিবার দুপুরে সুলতানপুর ক্লাব ময়দানে অনুষ্ঠিত হয় তার জানাযার নামাজ। এতে শরিক হন অগনিত মানুষ। তাদের শোক শ্রদ্ধা আর ভালবাসা নিয়ে শেষ বিদায় নেন মুফতি আবদুর রহিম কচি। পরে তাকে কামাননগর গোরস্থানে দাফন করা হয়। জানাযার নামাজে অংশ নিয়ে বক্তারা তার জীবনের নানা দিক তুলে ধরে বলেন মুফতি আবদুর রহিম কচি ছিলেন একজন নির্লোভ, নির্মোহ সজ্জন ব্যক্তি। সততার পরীক্ষায় তিনি ছিলেন শীর্ষ স্থানে। কোনো লোভ, ক্রোধ, অহংকার বা কোনো হিংসা-দ্বেষ কিছুই তাকে স্পর্শ করতে পারেনি। কোনো বিলাসিতা তাকে কখনও ছুঁতে পারেনি। প্রচার বিমুখ অবস্থায় নিজেকে আড়ালে রেখে একদিকে যেমন সাংবাদিকতা করেছেন অন্যদিকে সংস্কৃতি চর্চায় তিনি ছিলেন প্রথম কাতারে। দারিদ্য ও অভাব অনটন যার নিত্য সঙ্গী ছিল সে মানুষটি কখনও বাণিজ্যিক সাংবাদিকতার পথ অনুসরণ করে দারিদ্য দূরীকরণের চেষ্টা করেন নি। বরং দারিদ্র্যের সাথে লড়াই করে টিকে থাকবার অবিরাম চেষ্টা করে গেছেন তিনি। তিনি ভেবেছেন সমাজের নিপীড়িত মানুষের কথা। নির্ভয়ে নিঃসংশয়ে লিখেছেন দুর্নীতি ও সন্ত্রাসের বিপক্ষে। কোনোদিন উঁচু স্বরে কথা বলেন নি। কোনো কটূ বাক্য উচ্চারন করে কাউকে আঘাত করেন নি। একটি আলোকিত সংস্কৃতিমনা সমাজ গড়তে তিনি ছিলেন একজন নির্ভেজাল কারিগর। তার অকাল প্রয়াণ আমাদের সমাজকে বহুলাংশে ক্ষতি করে দিয়েছে। বক্তারা তার প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করে তার রুহের মাগফিরাত কামনা করেন। মুফতি আবদুর রহিম কচির জানাযায় অন্যান্যদের মধ্যে শরিক হন জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ও জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. নজরুল ইসলাম, জেলা আওয়ামী লীগের প্রচার সম্পাদক শেখ নুরুল হক, শিল্প ও বণিক সমিতির সভাপতি নাসিম ফারুক খান মিঠু, জেলা কমিউনিটি পুলিশিং কমিটির আহবায়ক ডা. আবুল কালাম বাবলা, সাতক্ষীরা প্রেসক্লাব সভাপতি আবুল কালাম আজাদ, জেলা আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক শেখ হারুন অর রশীদ, মুক্তিযোদ্ধা বিএম আবদুর রাজ্জাক, শিল্পকলা একাডেমির সম্পাদক মুশফিকুর রহমান মিল্টন, পৌর কাউন্সিলর ফিরোজ হাসান, সাংস্কৃতিক পরিষদ সম্পাদক হেনরি সরদার, সভাপতি সুভাষ চৌধুরী ও অধ্যক্ষ আনিসুর রহিম, এম কামরুজ্জামান, মো. আমিনুর রশীদ, জেলা সাহিত্য পরিষদ সভাপতি শহিদুর রহমান, সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব মঞ্জুরুল হক, লিনেট ফাইন আর্টসের আবু আফফান রোজ বাবু, সাংবাদিক ফিফা রেফারী তৈয়ব হাসান বাবু, ফয়সাল মসজিদের ইমাম হাফেজ সাইফুদ্দিন, শিক্ষক মো. তমিজউদ্দিনসহ প্রয়াত আবদুর রহিম কচির বন্ধু বান্ধব আত্মীয় স্বজন সহপাঠী ও অগণিত গুণগ্রাহী। জানাযায় আবদুর রহিম কচির একমাত্র ছেলে মুফতি মখদুম আবদুর রহিম বাপী তার প্রয়াত বাবার পক্ষে সবার দোয়া চান এবং তিনি তার জীবদ্দশায় কাউকে কোনোভাবে কষ্ট দিয়ে থাকলে তার জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করেন। পরে বিভিন্ন সংগঠনের পক্ষ থেকে ফুল দিয়ে তাকে শেষ শ্রদ্ধা জানানো হয়।