ফিচার

সাতক্ষীরা জজ কোর্টের সাবেক পিপি ও তার ছেলেকে কারাগারে প্রেরণ

By daily satkhira

December 13, 2025

নিজস্ব প্রতিনিধি :  সাতক্ষীরা জজ কোর্টের সাবেক পিপি ও আওয়ামী লীগ নেতা এড. আব্দুল লতিফ এবং তার ছেলে রাসেলকে দুপুরে কারাগারে প্রেরণ করেছে আদালত। এর আগে শনিবার (১৩ ডিসেম্বর) বেলা ১১টার দিকে তাদেরকে সাতক্ষীরা আমলী আদালত- ১ এ হাজির করানো হয়। এসময় বিচারক তাদেরকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।

অ্যাড. আব্দুল লতিফ (৫৮) সাতক্ষীরা সদরের কামারবাসয়সা গ্রামের বর্তমানে সাতক্ষীরা শহরের রসুলপুরের মৃত মুনসৃর রহমানের ছেলে। তার ছেলে রাসেল (৩৫) কামারবায়সা গ্রামের বসবাস করতেন।

একাধিক দায়িত্বশীল সূত্র জানায়, বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ে সাবেক সাংসদ মীর মোস্তাক আহম্মেদ রবির মাধ্যমে পিপি হয়ে আদালত পাড়া থেকে বহু টাকা উপার্জন করেন আব্দুল লতিফ। এর আগে তিনি দূর্ণীতির দায়ে বিডিআর থেকে চাকুরিচ্যুত হন। ভারতীয় গরুর খাটাল পরিচালনা করার সূযোগে তিনি বহু টাকার মালিক বনে যান। এরপর সাতক্ষীরা শহরের রসুলপুরে তৈরি করেন ৫ তলা বিশিষ্ট চোখ ধাঁধানো অট্টালিকা।

কারাগারে প্রেরণের বিষয়টি নিশ্চিত করে অতিরিক্ত পিপি এড. আরিফুর রহমান আলো জানান, সাতক্ষীরা সদর থানায় তাদের নামে হত্যা, চাঁদাবাজির মামলা রয়েছে। এই মামলায় গ্রেফতার দেখিয়ে তাদেরকে আজ আদালতে হাজির করেছিলো পুলিশ। জানা যায়- চব্বিশের জুলাই আন্দোলনের পর সাবেক পিপি আব্দুল লতিফ ও তার ছেলে রাসেল খুলনায় পালিয়ে ছিলেন। এরপর শুক্রবার (১২ ডিসেম্বর) সাতক্ষীরা শহরের রসুলপুর এলাকার ৫ তলা বাড়ি ফ্লাট আকারে উকিল কমিশন করে বিক্রিকালে শুক্রবার সকাল ১০টার দিকে খুলনার বয়রা এলাকা থেকে গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশের একটি দল তাদেরকে আটক করে।

স্থানীয় মাসুম বিল্লাহ শাহীন বলেন- সাবেক পিপি লতিফ সাহেব মারাত্মক খারাপ মানুষ। বিগত ফ্যাসিস্ট সরকারের পক্ষে হাজার হাজার মানুষকে মিথ্যা মামলায় জেল খাটিয়েছিল। আল্লাহ পাক ছাড় দেন কিন্তু ছেড়ে দেন না।

প্রসঙ্গত: ২০২৪ সালের ৫ আগষ্ট আওয়ামীলীগ সরকারের পতনের পর আব্দুল লতিফ আটটি হত্যা ও নাশকত মামলার এবং তার ছেলে রাসেল তিনটি মামলার আসামী হন। এক পর্যায়ে তারা বাবা-ছেলে পালিয়ে খুলনায় গিয়ে বয়রা এলাকায় একটি বাড়িতে বসবাস করতেন। সম্প্রতি তারা সাতক্ষীরা শহরের রসুলপুর এলাকার পাঁচতলা বাড়িটির একাংশ উকিল কমিশনের মাধ্যমে ফ্লাট আকারে বিক্রি করেন। পরবর্তীতে আরো কয়েকটি ফ্লাট বিক্রি করার জন্য রেজিস্ট্রি করতে সাতক্ষীরায় আসতে না পেরে উকিল কমিশন করে সাব রেজিস্ট্রারকে খুলনার বয়রায় নিয়ে ৩০ লাখ টাকা বিশেষ সুবিধা দিয়ে ফ্লাট রেজিস্ট্রি করার উদ্যোগ নেন। দলিল লেখক হিসেবে দায়িত্ব পালন করার জন্য সাতক্ষীরা সদর দলিল লেখক সমিতির সাংগঠনিক সম্পাদক মহিদুল ইসলামকে দায়িত্ব দেন। সে অনুযায়ি শুক্রবার সকাল ১০টার দিকে আরেক দুর্নীতিবাজ সদরের সাব রেজিষ্ট্রার অমায়িক বাবুও বয়রায় পৌঁছানোর পরপরই গোপন সংবাদের ভিত্তিতে সাতক্ষীরা গোয়েন্দা শাখা পুলিশের (ডিবি) একটি দল খুলনার বয়রা এলাকার ওই বাড়িতে অভিযান চালিয়ে অ্যাড. আব্দুল লতিফ ও তার ছেলে রাসেলকে আটক করে।