জাতীয়

ফরহাদ মজহারের অবস্থান খুলনা অঞ্চলে: পুলিশ

By Daily Satkhira

July 03, 2017

‘অপহৃত’ কবি-কলামনিস্ট ফরহাদ মজহারের অবস্থান খুলনা অঞ্চলে বলে জানতে পেরেছে পুলিশ। তাকে উদ্ধারের চেষ্টা চলছে বলেও জানিয়েছেন ঢাকা মহানগর পুলিশের তেজগাঁও বিভাগের উপ-কমিশনার বিপ্লব কুমার সরকার। সোমবার সকালে পরিবার থানায় অভিযোগ করার পর বিকালে একথা জানান এই পুলিশ কর্মকর্তা। বিপ্লব বলেন, “দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের দিকে তার অবস্থান শনাক্ত হয়েছে। আমরা সার্বক্ষণিক পর্যবেক্ষণ রাখছি। তাকে উদ্ধারের চেষ্টা চলছে।” সকাল ১০টার দিকে ফরহাদ মজহারের এক আত্মীয় আদাবর থানায় গিয়ে মৌখিক অভিযোগ জানানোর পর পুলিশ বিষয়টি নিয়ে অনুসন্ধানে নামে। আদাবর থানার এসআই মহসিন আলী জানান, ফরহাদ মজহারের একজন আত্মীয় সকাল ১০টার দিকে থানায় আসেন। “তিনি বলেছেন, ফরহাদ মজহার সাহেব কোনো একজনের ফোন পেয়ে ভোর সাড়ে ৪টা থেকে ৫টার মধ্যে বাসা থেকে বের হয়ে যান। পরে সকাল সাড়ে ৯টার দিকে তিনি নিজেই স্ত্রীকে ফোন করে ৩৫ লাখ টাকা যোগাড় করতে বলেন।” ফরহাদ মজহার থাকেন শ্যামলী রিং রোডের হক গার্ডেন নামের একটি ভবনে। আদাবর থানার ওসিসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা সেখানে গেছেন। ফরহাদ মজহারের স্ত্রী ফরিদা আখতার এ বিষয়ে কথা বলতে চাননি। তাদের পারিবারিক বন্ধু পরিচয় দিয়ে গৌতম দাশ বলেন, “ফরহাদ মজহার সাহেবকে ভোরে কয়েকজন ডেকে নিয়ে যায়। ২৪ মিনিট পর উনি টেলিফোনে বলেছেন, ‘আমাকে তুলে নিয়ে যাচ্ছে’।” টাকা দাবির বিষয়ে গৌতম কিছু না বললেও ফরহাদ মজহারের পরিবারের এক সদস্য বলেন, “উনি (ফরহাদ) নিজের মোবাইল থেকেই ফোন করেছিলেন। বলেছেন, ৩৫ লাখ টাকা না দিলে মেরে ফেলবে।” কিন্তু কারা ফরহাদ মজহারকে ধরে নিয়ে গেছে, সে বিষয়ে কোনো তথ্য পরিবারের সদস্যদের কাছে পাওয়া যায়নি। তাদের কোনো সন্দেহর কথাও জানা যায়নি। এসআই মহসীন বলেন, “উনার ওয়াইফ বলেছেন তিনি সকাল ৫টা ৫ মিনিটে বের হয়েছিলেন। আমরা সিসিটিভি ফুটেজে দেখেছি, তিনি ৫টা ২৫ মিনিটে বের হয়েছেন।” ২০১৩ সালে যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের দাবিতে শাহবাগে গড়ে ওঠা গণজাগরণ আন্দোলনের সমালোচক ফরহাদ মজহার বিভিন্ন বক্তব্যের জন্য আলোচিত। ৭০ বছর বয়সী ফরহাদ মজর নিজেকে মার্কসিস্ট হিসেবে পরিচয় দেন। তবে হেফাজতে ইসলামের সঙ্গে সম্পৃক্ততা নিয়ে বাম দলগুলো তার কঠোর সমালোচনা করে আসছে। শাহবাগের ওই আন্দোলনের বিরোধিতাকারী হেফাজতে ইসলামের পক্ষে বিভিন্ন সভা সমাবেশে বক্তব্য দিতেও দেখা গেছে তাকে।

ওই সময় বিএনপি নেতৃত্বাধীন ১৮ দলের হরতালের মধ্যে সংবাদকর্মীদের ওপর হামলার প্রেক্ষাপট হিসেবে একুশে টেলিভিশনের ‘টকশো’তে বিভিন্ন গণমাধ্যমকে ‘সন্ত্রাসী’ আখ্যায়াতি করে গণমাধ্যমের ওপর হামলাকে ‘সঠিক’ বলে মন্তব্য করেন তিনি। ওই সময় বিএনপি নেত্রী খালেদা জিয়াকে এক সভায় আরও কঠোর আন্দোলনে যেতে আহবান জানান ফরহাদ মজহার। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ফার্মেসিতে পড়ার পর যুক্তরাষ্ট্রে গিয়ে অর্থনীতিতে ডিগ্রি নেন ফরহাদ মজহার। দেশে ফিরে তিনি উবিনীগ নামে একটি এনজিও গড়ে নয়াকৃষি আন্দোলন শুরু করেন। চিন্তা নামে একটি পত্রিকার সম্পাদক দীর্ঘকেশী ফরহাদ মজহার সব সময় লুঙ্গি পরে থাকেন, যা নিয়েও রয়েছে আলোচনা।