জাতীয়

দেশের প্রথম নারী বিচারপতির আনুষ্ঠানিক বিদায় আজ

By Daily Satkhira

July 06, 2017

সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের প্রথম নারী বিচারপতি নাজমুন আরা সুলতানার বিদায় অনুষ্ঠান আজ। সুপ্রিম কোর্টের পক্ষ থেকে এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে।

বিচারপতি নাজমুন আরা ছিলেন দেশের প্রথম নারী মুন্সেফ (সহকারী জজ), প্রথম নারী জেলা জজ, প্রথম হাইকোর্টে বিভাগেরও নারী বিচারপতি। এরপর তিনি আপিল বিভাগের প্রথম নারী বিচারপতি হিসেবে অবসরে যাচ্ছেন।

বিচারপতি নাজমুন আরা সুলতানা অবসরে যাচ্ছেন শুক্রবার (৭ জুলাই)। কিন্তু শুক্রবার সুপ্রিম কোর্ট ছুটি থাকায় তাকে বিদায় দেওয়ার জন্য আয়োজিত সংবর্ধনা অনুষ্ঠান বৃহস্পতিবার অনুষ্ঠিত হচ্ছে।

জানা গেছে, ১৯৭৫ সালের ২০ ডিসেম্বর বিচার বিভাগে যোগদান করা এই বিচারপতির শেষ কর্মদিবস আজ (৬ জুলাই) বৃহস্পতিবার।

যদিও সুপ্রিম কোর্টের পঞ্জিকা অনুযায়ী তার অবসরের মেয়াদ ৭ জুলাই। ওই দিন শুক্রবার হওয়ায় আগের দিন বৃহস্পতিবারই তার শেষ কর্মদিবস। প্রথা অনুসারে ওই দিন তাকে সংবর্ধনা দেওয়ার কথা সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতি ও অ্যাটর্নি জেনারেল অফিসের পক্ষ থেকে। তাদের সংবর্ধনার জবাবে তিনিও বক্তব্য রাখতে পারেন আগতদের উদ্দেশ্য।

তিনি প্রথমবারের মতো নারী বিচারপতি হিসেবে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের একটি বেঞ্চেরও নেতৃত্ব দিয়েছিলেন।

১৯৫০ সালের ৮ জুলাই মৌলভীবাজারে জন্মগ্রহণ করেন বিচারপতি নাজমুন আরা সুলতানা। তবে তার শৈশব কেটেছে ময়মনসিসংহ জেলার গফরগাঁওয়ে।

বাবা আবুল কাশেম মঈনুদ্দীন ও বেগম রশীদা সুলতানা দীনের এই সন্তান ময়মনসিংহের বিদ্যাময়ী সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় থেকে ১৯৬৫ সালে তিনি এসএসসি পাস করেন। ১৯৬৭ সালে ময়মনসিংহের মুমিনুন্নেসা উইমেন্স কলেজ থেকে এইচএসসি এবং আনন্দমোহন কলেজ থেকে ১৯৬৯ সালে বিএসসি ডিগ্রি অর্জন করেন।

পরবর্তীতে বিচারপতি সুলতানা ১৯৭২ সালে এলএলবি পাস করেন। একই বছর তিনি ময়মনসিংহ জেলা আদালতের আইনজীবী হিসেবে অন্তর্ভুক্ত হন।

কিন্তু সেখানে থেমে থাকেননি বিচারপতি নাজমুন আরা সুলতানা।বিসিএস পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে ১৯৭৫ সালের ২০ ডিসেম্বর মুন্সেফ (সহকারী জজ) হন। সঙ্গে সঙ্গে তিনি অন্তর্ভুক্ত হয়ে যান ইতিহাসের অংশ হিসেবে। দেশ ও বিচার বিভাগের ইতিহাসে তিনিই প্রথম নারী বিচারক।

পরবর্তীতে যোগ্যতাই তাকে ১৯৯১ সালে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় জেলা জজের আসনে উন্নীত করে। আর এটাও প্রথম কোনো নারীর জেলা জজ হওয়ার ঘটনা।

তবে নিম্ন আদালতেই থেমে থাকেননি বিচারপতি নাজমুন আরা সুলতানার কর্মজীবন। ২০০০ সালের ২৮ মে তিনি হাইকোর্টে অতিরিক্ত বিচারপতি হিসেবে নিয়োগ পান। এর দুই বছর পর হাইকোর্টে স্থায়ী হন তিনি। হাইকোর্টেও তিনি প্রথম। সবশেষ ২০১১ সালের ২৩ ফেব্রুয়ারি তিনি আপিল বিভাগের প্রথম নারী বিচারপতি হিসেবে শপথ নেন। এর মধ্যে ২০১৩ সালের ১ এপ্রিল তৎকালীন প্রধান বিচারপতি মো. মোজাম্মেল হোসেন আপিল বিভাগের একটি বেঞ্চের নেতৃত্বে বসান বিচারপতি নাজমুন আরা সুলতানাকে।

বিচারিক কাজের পাশাপাশি বিচারপতি নাজমুন আরা সুলাতানা প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ছিলেন বাংলাদেশ ওমেন জাজেস অ্যাসোসিয়েশনের। দুইবার সেক্রেটারি ছিলেন ইন্টারন্যাশনাল অ্যাসোসিয়েশন অব ওমেন জাজেসের। বিশ্বের ৮২টি দেশে যে সংগঠনের সদস্য সংখ্যা প্রায় ৫ হাজারের মতো। তার বিদায় অনুষ্ঠান আজ সুপ্রিম কোর্টে।