প্রথমবারের মতো মুখোমুখি বৈঠকে মিলিত হলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এবং রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। শুক্রবার জার্মানির হামবুর্গে জি-টোয়েন্টি সম্মেলনের প্রক্কালে দুই নেতা এ বৈঠকে অংশ নেন। এ সময় তাদের করমর্দনের বিষয়টিও উঠে এসেছে আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমগুলোর প্রতিবেদনে। বৈঠকটি এখনও চলছে। রুশ সংবাদমাধ্যমগুলো বলছে, দুই নেতার মধ্যে আধঘণ্টার একটি বৈঠকের কথা রয়েছে। তবে বৈঠক শেষে তারা সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলবেন কিনা তা এখনও পরিষ্কার নয়।
প্রথম সাক্ষাতে পুতিনের উদ্দেশে ট্রাম্প বলেন, আপনার সঙ্গে সাক্ষাৎ সম্মানের। উত্তরে পুতিন বলেন, আপনার সঙ্গে দেখা হওয়ায় আমি আনন্দিত।
শুক্রবারের বৈঠক দুই নেতার প্রাথমিক সাক্ষাৎ বলে জানিয়েছে বিবিসি। পরে দীর্ঘ সময়ের জন্য আরেকটি বৈঠকে মিলিত হবেন তারা।
দুইদিনের জি-টোয়েন্টি সম্মেলনের প্রথম দিনেই সামনে আসতে পারে ধনী দেশগুলোর নিজেদের মধ্যকার অনৈক্য। জলবায়ু আর বাণিজ্য নীতি নিয়ে রুশ-মার্কিন-তুর্কি অবস্থানের দ্বন্দ্ব প্রাধান্য নিতে পারে আলোচনায়। অবশ্য শুক্রবার মূল সম্মেলনস্থল নয়, সাইডলাইন নিয়েই বেশি আগ্রহ বিশ্ববাসীর। এরইমধ্যে বৈঠকে মিলিত হয়েছেন বিশ্বের দুই ক্ষমতাকেন্দ্র যুক্তরাষ্ট্র আর রাশিয়ার দুই শীর্ষ নেতা ডোনাল্ড ট্রাম্প আর ভ্লাদিমির পুতিন। সম্মেলন আর সাইড লাইন বৈঠকের প্রশ্ন ছাপিয়ে গেছে উত্তাল প্রতিবাদে। বিক্ষোভে প্রকম্পিত হচ্ছে সম্মেলনস্থল জার্মানির হামবুর্গ শহর। পুলিশি বাধার এক পর্যায়ে সেই বিক্ষোভ সহিংসতায় রূপ নিয়েছে বলেও খবর পাওয়া গেছে। আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমগুলো বলছে, বাণিজ্য ও পরিবেশগত ইস্যুতে ন্যায়বিচার ও সমতার আকাঙ্ক্ষায় বিভিন্ন অ্যাক্টিভিস্ট গ্রুপের ১ লাখ বিক্ষোভকারীর জমায়েত হতে পারে সম্মেলনস্থলে। বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছে অন্যান্য শহরেও।
২০০৭ সালে জার্মানির বাল্টিক সি রিসর্ট হাইলিগেনডামে জি-সেভেন বৈঠকের আয়োজন করা হয়। ২০১৫ সালে বাভারিয়ার এলমাওতে জি-সেভেনের আরেকটি বৈঠকের আয়োজন করা হয়। এখন হামবুর্গে আয়োজিত হচ্ছে জি-টোয়েন্টি সম্মেলন। এ আয়োজনের সভাপতিত্বের দায়িত্বে রয়েছে জার্মানি। যুক্তরাষ্ট্র, রাশিয়া, তুরস্কসহ ১৯টি ধনী দেশ ও ইইউ’র প্রতিনিধিরা এই সম্মেলনে অংশ নিচ্ছেন।
সদ্য নিরঙ্কুশ মার্কিন আধিপত্যের কাল পেরিয়ে বিশ্ব রাজনীতিতে প্রকট হচ্ছে কর্তৃত্বের দ্বন্দ্ব। ঐক্যের অভাব স্পষ্ট হয়েছে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প, রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন এবং তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রজব তাইয়্যেব এরদোয়ানের কর্মকাণ্ডে। তিন নেতাই জি-টোয়েন্টি বৈঠকে অংশ নিচ্ছেন। এটাও পরিষ্কার যে, তিন নেতাই বৈঠকে নিজেদের এজেন্ডা এগিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করবেন। সম্মেলনে জলবায়ু পরিবর্তন, সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে যৌথ লড়াই, নারী নীতি এবং স্বাস্থ্যসেবা ছাড়াও প্রাধান্য পাবে মুক্তবাণিজ্যের নীতি। সূত্র: বিবিসি।