আন্তর্জাতিক

রণক্ষেত্র দার্জিলিং, নিহত আরো ২

By Daily Satkhira

July 09, 2017

গোর্খা ন্যাশনাল লিবারেশন ফ্রন্টের (জিএনএলএফ) এক সদস্যের মৃত্যুকে কেন্দ্র করে ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের দার্জিলিং জেলাসহ পাহাড় অঞ্চল আবারও রণক্ষেত্রে পরিণত হয়েছে। এ ঘটনার জের ধরে দাঙ্গায় নিহত হয়েছেন আরো একজন।

স্থানীয় সময় গতকাল শুক্রবার রাত ১১টার দিকে দার্জিলিংয়ের সোনাদা এলাকায় গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হন জিএনএলএফ সদস্য তাসি ভুটিয়া। এর পর থেকে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে পাহাড়ের পরিবেশ।

স্থানীয় কয়েকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, শুক্রবার রাত ১১টার দিকে কার্শিয়াং ও দার্জিলিংয়ের মধ্যবর্তী সোনাদা এলাকায় একটি ওষুধের দোকান থেকে বাড়ি ফিরছিলেন তাসি। পথে গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হন তিনি।

জিএনএলএফের মুখপাত্র নিরাজ জিম্বা জানিয়েছেন, মৃত তাসি ভুটিয়া তাঁদের সমর্থক। পুলিশের গুলিতেই তাসির মৃত্যু হয়েছে বলে দাবি করেন তিনি। তবে সেদিন রাতে গোর্খা জনমুক্তি মোর্চার হয়ে পুলিশের গাড়িতে আগুন লাগাতে এলে তাসিকে গুলি করে হত্যা করা হয় বলেও অভিযোগ উঠেছে।

এই বিষয়ে পুলিশ জানিয়েছে, জিএনএলএফের দাবি ভুল। কোনো ব্যক্তিগত শত্রুতা থেকে খুন হয়েছেন তাসি। এখানে পুলিশের কোনো ভূমিকা নেই। মোর্চাই এই ঘটনায় রাজনৈতিক রং লাগাতে চাইছে।

এদিকে তাসি হত্যার পরিপ্রেক্ষিতে শনিবার দার্জিলিংসহ পাহাড়ে মিছিল করে মোর্চা। ফলে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। সকাল থেকেই পাহাড়ের বিভিন্ন এলাকায় নিরাপত্তা জোরদার করা হয়। দার্জিলিংয়ের মোড়ে মোড়ে মোতায়েন করা হয় পুলিশ। এ ছাড়া পাহাড়ের কার্শিয়াং, কালিম্পংসহ বিভিন্ন স্থানে চলে পুলিশের কড়া নজরদারি।

নিরাপত্তা সত্ত্বেও শনিবার সকালে সোনাদা থানায় ব্যাপক ভাঙচুর চালায় মোর্চা সমর্থকরা। বেশ কয়েকজন পুলিশ কর্মীকে মারধর করা হয় বলেও জানায় পুলিশ। সোনাদার পাশাপাশি ঘুম স্টেশনও অবরুদ্ধ করে দেয় মোর্চার সমর্থকরা। মোর্চার সঙ্গে দাঙ্গায় হাত জিএনএলএফের কর্মী-সমর্থকরাও।

এদিকে তাসি ভুটিয়ার মৃতদেহ নিয়ে মিছিল করে মোর্চা ও জিএনএলএফ সমর্থকরা। দার্জিলিংয়ের টয়ট্রেন স্টেশন ও ডিএসপি অফিসে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। অন্যদিকে কালিম্পংয়ের গরুবাথান ন্যাওড়া রেঞ্জের ফরেস্ট কোয়ার্টারেও আগুন দেওয়া হয়। দার্জিলিংয়ের চকবাজার এলাকায় পুলিশ-বিক্ষোভকারীদের ব্যাপক সংঘর্ষ হয়। এতে সুরজ সুনদাসসহ আরেক ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে বলে জানা গেছে। কমবেশি আহত হয়েছেন অনেক। পরিস্থিতি সামাল দিতে নামানো হয়েছে সেনাবাহিনী।

পৃথক গোর্খাল্যান্ড রাজ্যের দাবিতে এক মাস ধরে দার্জিলিংসহ পাহাড়ে আন্দোলন চালাচ্ছে গোর্খা জনমুক্তি মোর্চা। চলছে অনির্দিষ্টকালের বন্ধ।