কালিগঞ্জ

কালিগঞ্জে নিখোঁজ দু’ছাত্রী ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ থেকে উদ্ধার

By daily satkhira

September 23, 2016

 

 

আহম্মাদ উল্যাহ বাচ্ছু : অবশেষে কালিগঞ্জের দুই নিখোঁজ স্কুল ছাত্রীদের ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ থেকে উদ্ধার করা হয়েছে। শুক্রবার সকালে ঝিনাইদাহ এলাকার কিছু সচেতন ব্যক্তি ও পুলিশের সহায়তায় ওই শিশু দু’টি তাদের মা-বাবার কাছে ফিরেছে। নিখোঁজ স্কুল ছাত্রীর পরিবারের সদস্যরা জানায়, ২১ সেপ্টেম্বর স্কুলে যাওয়ার পর কাউকে না জানিয়ে উধাও হয় পারম্নলাগাছা গ্রামের মনিরুল ইসলামের মেয়ে ৪র্থ শ্রেণির শিক্ষার্থী বাক প্রতিবন্ধী মমতাজ পারভীন (১০) এবং আব্দুর ছাত্তার ওরফে বাটুলের মেয়ে ৫ম শ্রেণির শিক্ষার্থী রীনা পারভীন (১২)। স্কুলের ছুটির পরও তারা বাড়িতে না ফেরায় অভিভাবকরা উদ্বিগ্ন হয়ে স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তি ও পুলিশিং কমিটির সহায়তায় থানায় অবহিত করেন। সন্দেহের ভিত্তিতে পারুলগাছা গ্রামের ইস্রাফিল (১৪) ও সুজন (১৩) নামে দু’জনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করলেও ঘটনার সাথে তাদের সংশিস্নষ্টতা না থাকায় অভিভাবকদের মুচলেকায় তাদের ছেড়ে দেয় পুলিশ। নিখোঁজ দুই ছাত্রীকে উদ্ধারের পর তারা জানায়, পাশ্ববর্তী এলাকায় মিলন নামের এক ছেলে রিনা পারভীনকে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে তাদের ঢাকায় যাওয়ার কথা বলে। প্রতারকের আশ্বাসে স্কুলছাত্রী ঢাকায় যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। তার কাছে খরচের টাকা না থাকায় তার বান্ধবী মমতাজকে বাড়ি থেকে কিছু টাকা নিয়ে তার সাথে যাওয়ার কথা বলে। বাক প্রতিবন্ধী মমতাজ তার মায়ের গচ্ছিত টাকা নিয়ে সরল বিশ্বাসে রীনা পারভীনের সাথে স্কুল থেকে পালিয়ে বুধবার দুপুরে চলে যায়। পরিবহণ যোগে ঢাকায় যেয়ে হোটেলে নাস্তা করার সময় এক ব্যক্তি ওই দু’জনের ঘোরাফেরা সন্দেহজনক হওয়ায় তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করে। তিনি বিষয়টি বুঝতে পেরে পুণরায় পরিবহণের টিকিট কেটে সুপারভাইজারকে ওই দু’জনকে কালিগঞ্জে নামিয়ে দিতে বলে। কিন্তু ভুলবশত: পরিবহনের সুপারভাজার তাদের দু’জনকে সাতক্ষীরার কালিগঞ্জে নামিয়ে দেওয়ার পরিবর্তে ঝিনাইদহের কালীগঞ্জে নামিয়ে দেয়। এসময় মমতাজ ও রীনা অচেনা যায়গায় ঘুরোফেরা করতে থাকলে স্থানীয় মসজিদের ইমাম ও কিছু গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ তাদেরকে আশ্রয় দেয়ার পাশাপাশি থানা পুলিশকে অবগত করে। এক পর্যায়ে রীনা পারভীনের কাছ থেকে বাড়ির মোবাইল নাম্বার সংগ্রহ করে বৃহস্পতিবার রাত ৮ টার দিকে তাদের বাড়িতে যোগাযোগ করে। এরই ভিত্তিতে রীনা ও মমতাজের মা’সহ পরিবারের সদস্যরা বৃহস্পতিবার রাতেই ঝিনাইদহের কালীগঞ্জে যেয়ে শুক্রবার দুপরের দিকে তাদের মেয়েদের নিয়ে বাড়িতে আসে। প্রসঙ্গত, প্রায় ৩ মাস পূর্বে রীনা পারভীনের সাথে পার্শ্ববর্তী চাঁচাই গ্রামে তার খালাত ভাইয়ের সাথে বিয়ে হয়। ওই শিশু কণ্যার সাথে স্বামীর মিলমিশ না হওয়ায় সে বাবার বাড়ি থেকে আর শ্বশুর বাড়িতে ফিরে যায়নি। এক পর্যায়ে অন্য এক প্রতারক তাকে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে ঘর থেকে বের করে। সরল বিশ্বাসে মাত্র ১২ বছর বয়সের শিশুকণ্যা রীনা পারভীন অনিশ্চিত ভবিষ্যতের দিকে পা বাড়ায়। একই সাথে দুই শিশু কন্যা নিখোঁজ ও উদ্ধারের ঘটনায় এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। কালিগঞ্জ থানার উপ-পরিদর্শক সেকেন্দার আলী দুই শিশুকে ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ থেকে উদ্ধারের বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন তারা এখন পিতা মাতার কাছে অবস্থান করছে।