বিরল রোগে আক্রান্ত সাতক্ষীরার শিশু মুক্তামনির চিকিৎসার দায়িত্ব নিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। মঙ্গলবার এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন ঢাকা মেডিক্যাল কলেজের (ঢামেক) বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইউনিটের সমন্বয়ক ডা. সামন্ত লাল সেন। তিনি বলেন, ‘মুক্তার চিকিৎসার দায়িত্ব প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিয়েছেন। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের পরিচালক ডা. জুলফিকার লেনিন আমাকে ফোন করে একথা জানিয়েছেন।’ প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব নেওয়ার খবর শুনে মুক্তামনির বাবা মো. ইব্রাহীম হোসেন ফোনে ডেইলি সাতক্ষীরাকে বলেন, ‘আলহামদুলিল্লাহ। আমরা প্রধানমন্ত্রীর কাছে কৃতজ্ঞ। আপনারা আমার মেয়ের জন্য দোয়া করবেন।’ এ বিষয়ে ডা. জুলফিকার লেনিন বলেন, ‘আমরা মুক্তামনি’র অসুখের সংবাদ দেখে সাতক্ষীরায় খোঁজ নেই। পরে ডা.সামন্ত লাল সেনকে ফোন করি বিষয়টি দেখার জন্য। তিনি জানান, ইতোমধ্যেই মুক্তামনিকে বার্ন ইউনিটে ভর্তি করা হয়েছে। তখন তাকে বলি, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী মুক্তামনির চিকিৎসার যাবতীয় দায়িত্ব নিয়েছেন, তার চিকিৎসায় যেন কোনও ঘাটতি না থাকে।’ বিরল রোগে আক্রান্ত সাতক্ষীরার ১১ বছরের মুক্তামনিকে মঙ্গলবার সকালে ঢামেকের বার্ন ইউনিটে ভর্তি করা হয়েছে। তার এক হাত ফুলে গিয়ে দেহের চেয়েও ভারি হয়ে গেছে। সাদা রঙের শত শত পোকা ঘুরে বেড়াচ্ছে সেই ফুলে যাওয়া অংশে। শরীরের অসহ্য ব্যথা ও যন্ত্রণায় মুক্তামনি বসতেও পারে না। খেলতে পারে না, স্কুলেও যেতে পারে না সে।
মঙ্গলবার মুক্তামনিকে ভর্তি করার পর বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইউনিটের সমন্বয়ক ডা. সামন্ত লাল বলেন, ‘আমরা মেয়েটির রোগের নাম এই মুহূর্তে বলতে পারছি না। তবে এটি একটি ইনফেক্টেড কেস। আজ তার সব ধরনের পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হবে। বুধবার (১২ জুলাই)এর রিপোর্ট নিয়ে আলোচনা করে আমরা একটা সিদ্ধান্তে আসব। বুধবারই হয়তো তার রোগের কারণ জানা যাবে।’
মুক্তামনির চিকিৎসার জন্য ৮ সদস্যের একটি মেডিক্যাল বোর্ড গঠন করা হয়েছে। মেডিক্যাল বোর্ডের সদস্যরা হলেন- বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইউনিটের সমন্বয়ক ডা. সামন্ত লাল সেন, ইউনিটের বর্তমান পরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল কালাম আজাদ, একই ইউনিটের চিকিৎসক অধ্যাপক ডা. সাজ্জাদ খন্দকার, ঢামেক হাসপাতালের সার্জারি বিভাগের অধ্যাপক ডা. এবিএম খুরশিদ আলাম, মেডিসিন বিভাগের অধ্যাপক ডা. টিটু মিয়া, বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইউনিটের চিকিৎসক অধ্যাপক ডা. রায়হানা আউয়াল ও ঢামেক হাসপাতালের চর্মরোগ বিভাগের চিকিৎসক অধ্যাপক ডা. রাশেদ মোহাম্মদ খান। এ বিষয়ে ডা. সামন্ত লাল সেন বলেন,‘আজকে আমরা মেডিক্যাল বোর্ড গঠন করেছি। মুক্তার চিকিৎসা সবকিছু এই বোর্ডের নির্দেশনা অনুযায়ী হবে। আজই আমরা তার সব ধরনের পরীক্ষা-নিরীক্ষা সম্পন্ন করব।’ তিনি আরও বলেন, ‘মুক্তামনি রক্তশূন্যতা ও পুষ্টিহীনতায় ভুগছে। তাকে রক্ত ও পুষ্টিকর খাবার দিতে হবে। অপারেশনের জন্য তাকে উপযুক্ত করতে দুই-তিন সপ্তাহ সময় লাগবে।’