প্রতিদিন ২টি মুরগীর ডিম আমাদের নিত্যদিনের খাবারের একটি অংশ হলে এর গুণাগুণ সম্পর্কে অনেকেরই অজনা রয়ে গেছে।
কেউ কেউ মনে করেন এতে কোলেস্টেরল বাড়ায়, বাড়ায় ওজন। কেউ কেউ আবার এতে অ্যালার্জির উদ্রেক হয়। কিন্তু শরীরের বিভিন্ন অঙ্গের জন্য দিনে ২টি ডিম খাওয়া যে কতটা উপকারী তা জানেন না অনেকেই। চলুন সাধারণ ডিমের অসাধারণ কিছু উপকারিতা সম্পর্কে জেনে নেই।
ভিটামিন ডি ক্যালসিয়াম শোষণে সাহায্য করে এক চামচ মাছের তেল এবং একটি সেদ্ধ ডিমে একই পরিমাণ ভিটামিন ডি থাকে। শুধু তাই নয়, এই ভিটামিন ডি শরীরে ক্যালসিয়াম শোষণেও কাজে আসে। এটা আপনার হাড় ও দাঁত মজবুত করে।
মস্তিষ্ককে নিরাপদ রাখে কোলিন মস্তিষ্কের কোষগুলোর মাঝে যোগাযোগ স্বাভাবিক রাখতে সাহায্য করে বিভিন্ন ফসফোলিপিড আর এর মাঝে একটি হলো কোলিন। মস্তিষ্কের জন্য প্রয়োজনীয় উপাদানগুলোর মাঝে কোলিন অন্যতম। প্রতিদিন ২টি করে ডিম খাওয়া হলে যথেষ্ট পরিমাণে কোলিন পায় আপনার শরীর। কোলিনের অভাবে স্মৃতিশক্তি কমে যেতে পারে।
দৃষ্টিশক্তি সুরক্ষিত রাখে লুটেইন মুরগীর ডিমে যথেষ্ট পরিমাণে লুটেইন থাকে। এই উপাদানটি দৃষ্টিশক্তি পরিষ্কার ও তীক্ষ্ণ রাখতে সহায়ক।
ভিটামিন বি কমপ্লেক্স ত্বক, চুল ও যকৃৎ ভালো রাখে বায়োটিন, ভিটামিন বি ১২ এবং কিছু প্রোটিন চুল ও ত্বকের স্বাস্থ্য বজায় রাখে। ডিমে থাকা ফসফোলিপিড যকৃৎ থেকে টক্সিন বের হয়ে যেতে সাহায্য করে।
কার্ডিওভাস্কুলার রোগের ঝুঁকি কমায় আপনি ভাবতে পারেন ডিম খেলে কোলেস্টেরল বাড়ে। আসলে কিন্তু ডিমের কোলেস্টেরল আমাদের শরীরের জন্য খারাপ নয়। এর পাশাপাশি ডিমে থাকে ওমেগা-৩ ফ্যাটি এসিড যা হৃদরোগের ঝুঁকি কমায়।
ক্যান্সারের ঝুঁকি কমায় মস্তিষ্কের জন্য উপকারী কোলিন ক্যান্সারের ঝুঁকি কমাতেও কাজে আসে। গবেষণায় দেখা যায়, যেসব তরুণীরা প্রতিদিন ডিম খেতেন, পরবর্তীতে তাদের ব্রেস্ট ক্যান্সার হবার সম্ভাবনা কমে ১৮ শতাংশ।
ওজন কমাতে সহায়ক লো ক্যালোরি ডায়েটের সাথে সকালের নাশতায় ডিম খাওয়া হলে দ্রুত কমতে থাকে ওজন- মত দেন আমেরিকাল গবেষকেরা। ব্রেকফাস্টে ডিম খাওয়া হলে অনেকটা সময় পেট ভরা থাকে, ফলে বারবার জাঙ্ক ফুড খাওয়া থেকে বিরত থাকা যায়।
বয়স বৃদ্ধির প্রক্রিয়াকে ধীর করে দেয় হল্যান্ডের এক গবেষণায় দেখা যায়, নিয়মিত ডিম খাওয়ার ফলে ৩৫-৪০ বছর বয়সী নারীদের বয়সজনিত দাগ দূর হয় এবং ত্বক আগের মতো টানটান হয়ে আসে। চোখের আশেপাশের বলিরেখাও কমে আসতে দেখা যায়।
সন্তান ধারণে শরীরকে প্রস্তুত করে ডিমে থাকা ভিটামিন বি ৯ বা ফলিক এসিড ভ্রূণের মস্তিষ্কে কোনো সমস্যা হওয়ার ঝুঁকি কমায়। এ কারণে গর্ভবতী এবং গর্ভধারণে উৎসাহী নারীদের জন্য ডিম খাওয়া জরুরী।