ভারতে গবাদি পশুর পাইকারি বাজারে মাংসের জন্য গরু-মোষ বিক্রিতে সরকার যে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছিল, দেশের সুপ্রিম কোর্ট তার ওপর স্থগিতাদেশ জারি করেছে।
দেশের সর্বোচ্চ আদালতের এই রায়ের ফলে অন্তত আগামী তিন মাসের জন্য গোটা ভারতে আবার আগের মতোই বাজারে গবাদি পশু কেনাবেচা করা যাবে।
সুপ্রিম কোর্টের এই রায়ে আপাতত স্বস্তির নি:শ্বাস ফেলছেন হাজার হাজার ব্যবসায়ী – গবাদি পশুর মাংস বেচেই যাদের দিন চলে।
সরকারকে রীতিমতো অস্বস্তিতে ফেলে আদালত আরও জানিয়েছে, মানুষের জীবন-জীবিকাকে হঠাৎ করে এভাবে অনিশ্চয়তার মুখে ঠেলে দেওয়া যায় না।
ভারতে পশুর মাংস বিক্রির ব্যবসার সঙ্গে মুসলিমরাই বেশি জড়িত।
ভারতে হিন্দুদের কাছে গরু অত্যন্ত পবিত্র বলে বিবেচিত এবং অনেক রাজ্যেই গরু জবাই নিষিদ্ধ। কিন্তু এই প্রথম গরুর পাশাপাশি মহিষ জবাই করার ওপরও নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়।
ভারতের মাংসের বেশিরভাগ আসে গরু থেকে নয়, মহিষ থেকে। ভারত বিশ্বের সবচেয়ে বড় মাংস রফতানিকারক দেশ।
এই মামলার রায়ে প্রধান বিচারপতি জগদীশ সিং খেকার বলেছেন, সরকারের এই নিষেধাজ্ঞার কারণে মানুষের জীবিকা বিপন্ন হওয়া উচিৎ নয়।
ভারতের একটি মুসলিম সংগঠন ‘মুসলিম অল ইন্ডিয়া জামিয়াতুল কোরেশ একশন কমিটি’ আদালতের রায়কে তাদের বিজয় বলে বর্ণনা করেছে।
২০১৪ সালের নির্বাচনে হিন্দু জাতীয়তাবাদী দল ভারতীয় জনতা পার্টি জয়লাভ করার পর ভারতের বহু রাজ্য গরু জবাই নিষিদ্ধ করতে শুরু করে।
গুজরাটে গরু জবাই করলে শাস্তি হিসেবে যাবজ্জীবন কারাদন্ডের বিধান করে আইন করা হয় গত মার্চ মাসে। এর পাশাপাশি গরু জবাই করেছে এমন সন্দেহে মুসলিমদের ওপর বিভিন্ন রাজ্যে হামলা শুরু হয়।।
স্বঘোষিত গো রক্ষা কমিটির সদস্যরা গরু জবাই করার মিথ্যে গুজবের ভিত্তিতে বেশ কিছু মুসলিমকে পিটিয়ে হত্যা করে।
সূত্র : বিবিসি বাংলা।