স্বাস্থ্য

কীভাবে বাঁচবেন ১০০ বছর?

By Daily Satkhira

July 12, 2017

চিকিৎসা বিজ্ঞানের উন্নতির কারণে মানুষের গড় আয়ু বেড়ে ৬০ থেকে ৭০ এ পৌঁছেছে। কিন্তু এখনও মানুষ ১০০ বছর বেঁচে থাকার চিন্তা করতে পারে না। এক্ষেত্রে অনেকেই মনে করেন স্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়ার পাশাপাশি যদি জীবনযাপনে নিয়ন্ত্রণ আনা যায়, তাহলে দীর্ঘজীবন একেবারে হাতের মুঠোয় এসে যায়।

এছাড়াও আয়ু বাড়ানোর জন্য আরও যে সকল কাজ করতে হবে, তা নিয়ে আমাদের আজকের এই আলোচনা-

১. কম বয়সী মায়ের শরীর থেকে জন্ম নিলে আয়ু বাড়ে। শুনতে একটু অন্য রকম লাগলেও, বিজ্ঞান প্রমাণ করেছে এই ধরণা একেবারেই ভুল নয়। আসলে ২৫ বছর বা তার কম বয়সী মায়ের শরীরে যাদের জন্ম হয়, তাদের আয়ু সাধারণত ১০০ বছর হয়েই থাকে। সেই কারণে দেখবেন আগেকার দিনে মানুষেরা সুস্থ শরীরে অনেক দিন পর্যন্ত বাঁচতেন। কারণ সে সময় বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই মেয়েদের কম বয়সে বিয়ে এবং বাচ্চা প্রসব হয়ে যেত। এখন পরিস্থিতি একেবারে বদলে গেছে। স্বামী-স্ত্রী দুজনের কর্মরত হওয়ার কারণে পরিবার পরিকল্পনায় অনেক ক্ষেত্রেই দেরি করে ফেলছে। ফলে প্রসবের সময় মায়ের জীবনহানীর আশঙ্কা যেমন বাড়ছে, তেমনি বাচ্চাও একাধিক শারীরিক সমস্যা নিয়ে জন্ম নিচ্ছে।

২. গ্রিন টি এবং কালো চায়ে প্রচুর পরিমাণে রয়েছে ক্যাটাচিন নামে একটি উপাদান। এটি হার্টের স্বাস্থ্যের উন্নতিতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে। সেই সঙ্গে সারা শরীরে রক্ত প্রবাহ যাতে ঠিক মতো হতে পারে সেদিকেও খেয়াল রাখে। ফলে সার্বিকভাবে শরীরের উন্নতি ঘটে। প্রসঙ্গত, বেশ কিছু বছর আগে হওয়া একটি গবেষণায় দেখা গিয়েছিল দিনে এক কাপ লাল চা অথবা গ্রিন টি খেলে আয়ু চোখে পরার মতো বৃদ্ধি পায়। এবার বুঝেছেন তো ব্রিটিশ, জাপানি এবং ভারতীয়দের গড় আয়ু বাকিদের থেকে কেন বেশি হয়!

৩. যারা প্রতিদিন কম করে ৩০ মিনিট হাঁটেন তাদের আয়ু প্রায় চার গুণ বৃদ্ধি পায়, এমনই দাবি করে থাকেন চিকিৎসকেরা। হাঁটার সময় হার্টে অক্সিজেন সমৃদ্ধ রক্তের সরবরাহ বেড়ে যায়, ফলে স্বাভাবিকভাবেই হৃদপিণ্ডের স্বাস্থ্যের উন্নতি ঘটে। আর হার্ট ঠিক মতো দৌড়াবে তো সুস্থ শরীর এবং আয়ু বৃদ্ধি নিয়ে কোনও চিন্তাই থাকবে না।

৪. ১৪-২১, এই বয়সেই শরীরের বেশি করে খেয়াল রাখতে হবে। আর কেউ যদি এমনটা না করেন তাহলেই কিন্তু বিপদ! যেমন ধরুন ১৪ পার হতে না হতেই যদি কেউ ওজন বৃদ্ধি করে ফেলে তাহলে আগামী সময়ে গিয়ে টাইপ ১ এবং টাইপ ২ ডায়াবেটিস আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা বৃদ্ধি পায়। সেই সঙ্গে নানাবিধ হার্টের রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কাও বাড়তে থাকে। তাই যৌবনে শরীর যত তরতাজা এবং চনমনে থাকবে, পরবর্তী জীবনে তাত বেশি সুফল পাওয়া যাবে।

৫. জাম খান বেশি করে। কারণ, এই ফলে রয়েছে পনিফেনালস নামে একটি উপাদান, যা হার্টের স্বাস্থ্যের উন্নতি ঘটায়। সেই সঙ্গে স্মৃতিশক্তির রক্ষাকবচ হিসেবে কাজ করে অ্যালঝাইমারসের মতো রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কাও কমায়। ফলে সুস্থ এবং দীর্ঘ জীবনের পথ প্রশস্ত হয়।

৬. কেস স্টাডি করে দেখা গেছে যারা কম করে ১২ বছর আনন্দের সঙ্গে স্কুল এবং কলেজ লাইফ কাটিয়েছেন তাদের আয়ু বাকিদের থেকে বেশি হয়। কেন এমনটা হয় জানেন? আসলে স্কুল বা কলেজ আমাদের শুধু শিক্ষিত করে তোলে না, সেই সঙ্গে অনেক বিষয়ে সচেতনও করে। তাই তো জীবন সম্পর্কে ধারণাটা স্পষ্ট হয়ে যায়। সেই সঙ্গে শরীরে পক্ষে কী খারাপ এবং কী ভাল সে বিষয়েও জ্ঞান অর্জন করার সুযোগ মেলে। ফলে স্বাভাবিকভাবেই সুস্থ জীবনের পরিধি বাড়তে থাকে।

৭. শুনতে অবাস্তব লাগলেও বিজ্ঞান প্রমাণ করে ছেড়েছে যে যারা প্রতিদিন কাপড় কাচা, ঘর মোছা এবং রান্না করার মতো কাজগুলি করে থাকেন তাদের আয়ু বৃদ্ধি পায়। কারণ এই কাজগুলি করার সময় শরীর এবং মস্তিষ্কের সচলতা মারাত্মকভাবে বেড়ে যায়। সেই সঙ্গে প্রায় ৩০০ ক্যালরি বার্ন হয়। ফলে কম বয়সে মৃত্যুর আশঙ্কা প্রায় ৩০ শতাংশ কমে যায়।