সাতক্ষীরা

৪ রোগের একটিতে আক্রান্ত মুক্তামনি : প্রয়োজন এ পজেটিভ রক্ত

By Daily Satkhira

July 12, 2017

ডেস্ক রিপোর্ট : সাতক্ষীরার ১১ বছরের মুক্তামনির রোগ এখনও শনাক্ত করতে পারেননি চিকিৎসকরা। ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইউনিট থেকে বুধবার (১২ জুলাই) জানানো হয়, মুক্তামনি চর্মরোগে আক্রান্ত। ডারমাল ভাসকুলার ম্যালফরমেশন, লিমফেটিক ম্যালফরমেশন, নিউরোফাইব্রোম্যাটোসিস, কনজেনিটাল হাইপারক্যারাটোসিস-এই চারটি চর্মরোগের মধ্যে যে কোনও একটা হতে পারে বলে প্রাথমিকভাবে তারা মনে করছেন। মুক্তামনির জন্য এই মূহুর্তে প্রচুর এ পজেটিভ ব্লাড প্রয়োজন বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা।

এ ব্যাপারে বার্ন ইউনিটের সমন্বয়ক ড. সামন্ত লাল সেন বলেন, ‘সময় মতো যদি মেয়েটির সঠিক চিকিৎসার ব্যবস্থা করা যেতো তাহলে আজ এ অবস্থা হতো না। তার হাতের ফাংশন ঠিক আছে। সে হাত মুঠি করতে পারে।কিন্তু তাকে অপারেশনের উপযোগী করে তুলতে ৭-১০ দিন সময় লাগবে। তার রক্তশূন্যতা ও অপুষ্টিজনিত সমস্যা রয়েছে। মুক্তামনির চিকিৎসার জন্য মঙ্গলবার (১১ জুলাই) ৮ সদস্যের একটি মেডিক্যাল বোর্ড গঠন করা হয়। বুধবার (১২ জুলাই) তারা শিশুটিকে পর্যবেক্ষণ করেন এবং তার চিকিৎসার ব্যাপারে সম্ভাব্য মতামত জানান। বিরল রোগে আক্রান্ত মুক্তামনি এখন ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইউনিটে ভর্তি আছে। তার এক হাত ফুলে গিয়ে দেহের চেয়েও ভারি হয়ে গেছে। চার বছর ধরে এই হাতের ‘বোঝা’ বয়ে বেড়াচ্ছে শিশুটি। শরীরের অসহ্য যন্ত্রণায় খেলাধুলা তো দূরের কথা, ঠিকমতো বসতেও পারে না মেয়েটি।

মুক্তামনির চিকিৎসার বিষয়ে সার্বিক খোঁজ-খবর নিতে সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী সাতক্ষীরা-০৩ আসনের সংসদ সদস্য প্রফেসর ডা. আ ফ ম রুহুল হক বুধবার দুপুরে ঢাকা মেডিকেলে যান। সেখানে তিনি চিকিৎসা বোর্ডের সদস্যদের সাথে মুক্তামনির চিকিৎসা নিয়ে বিস্তারিত আলাপ করেন। এদিকে, বিরল রোগে আক্রান্ত মুক্তামনিকে শারীরিকভাবে সুস্থ করে তুলতে প্রচুর রক্ত প্রয়োজন। তার জন্য ‘এ পজেটিভ’ গ্রুপের রক্ত দিতে সুস্থ সহৃদয় মানুষদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের বার্ন এন্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইউনিটের সমন্বয়ক ড. সামন্ত লাল সেন। তিনি আজ বুধবার বলেছেন ‘‘মেয়েটি রক্তশূন্যতা এবং অপুষ্টিতে ভূগছে। তার জন্য ‌‘ফ্রেশ ব্লাড’ চাই।’’

তিনি জানান, মুক্তামনির রক্তের গ্রুপ ‘এ পজেটিভ’। হাসপাতালে থাকা ব্লাড ব্যাংকে সবসময় রক্ত পাওয়া যায় না। একই সঙ্গে আমরা চাই, ব্লাড ব্যাংকে জমিয়ে রাখা রক্ত না দিয়ে তাকে তাজা রক্ত দিতে। এজন্য আমরা মুক্তাকে রক্ত দেওয়ার জন্য ‘এ পজেটিভ’ রক্তের সহৃদয় মানুষদের আহ্বান জানাচ্ছি। যদি রক্তদান করার জন্য মানুষ এগিয়ে আসেন, তাহলে মেয়েটিকে আমরা তাড়াতাড়ি চিকিৎসার উপযোগী করতে পারতাম। কেউ মুক্তামনিকে রক্ত দিতে আগ্রহী হলে তাদেরকে আমরা বার্ন ইউনিটের ষষ্ঠ তলায় নার্সেস স্টেশনে যোগাযোগ করার জন্য অনুরোধ করছি। ড. সামন্ত আরও বলেন, আগামী তিন দিন মুক্তামনিকে আমরা তিন ব্যাগ রক্ত দিতে চাই। তারপর একদিন বন্ধ রেখে আমরা ওর হিমোগ্লোবিন পরীক্ষা করব। তখন দেখা যাবে মেয়েটা কতোটা উপযুক্ত হয়।