মনিরুজ্জামান মনি : হ্যাচারির নষ্ট ডিমের দুর্গন্ধে ভারী হয়ে উঠেছে কাটিয়ার নিরালা আবাসিক এলাকা। সাথে রয়েছে হ্যাচারির কাজে ব্যবহৃত জেনারেটরের বিকট শব্দ। বাতাসে ঘুরে বেড়াচ্ছে পোল্ট্রি মুরগির উড়ন্ত পাখনা ও পায়খানা। এতে করে নিরিবিলি এলাকা এখন নোংড়া দুর্গন্ধ যুক্ত পরিবেশে পরিণত হয়েছে। প্রতিনিয়ত সর্দি কাশিসহ দুরারোগ্য রোগে আক্রান্ত হচ্ছে শিশু, যুবকসহ বয়স্ক ব্যক্তিরা। দ্রুত এর প্রতিকার না হলে স্ত্রী সন্তান নিয়ে এখানে বসবাস করা অসম্ভব হয়ে পড়বে বলে মন্তব্য করেছেন এলাকাবাসী। এঘটনায় বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগ করেও কোন প্রতিকার পাচ্ছেনা তারা। এলাকাবাসী জানায়, কাটিয়া এলাকার আবেদার রহমান কাটিয়া হ্যাচারীজ নামক একটি ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠান পরিচালনা করে আসছেন। তার হ্যাচারির নষ্ট ডিম খোসার দুর্গন্ধ, মুরগির পায়খানা ও উড়ন্ত পশমের ফলে এলাকার ছেলেমেয়েরা সর্দি কাশীসহ নানা রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। এছাড়া হ্যাচারীতে ব্যবহৃত জেনাটেরের বিকট শব্দে এলাকার বাতাস বিষিয়ে উঠে। উপায় না পেয়ে এলাকাবাসী পক্ষে ফজলুর রহমানসহ কয়েকজন বিগত ২০১৩ সালের ৪ এপ্রিল খুলনা বিভাগীয় পরিবেশ অধিদপ্তরের পরিচালক বরাবর লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। পরিবেশ অধিদপ্তর অভিযোগটি আমলে নিয়ে সরেজমিনে তদন্ত করেন। তদন্তের পর অভিযোগের সত্যতা পেয়ে গত ২৯ এপ্রিল’১৩ তারিখে অধিদপ্তরের পরিচালক ড. তরুণ কান্তি শিকদার উক্ত পোল্ট্রি মুরগির হ্যাচারীটি পত্র প্রাপ্তির ১০ দিনের মধ্যে উক্ত স্থানে হ্যাচারির কার্যক্রম বন্ধ এবং পরিবেশ সম্মতস্থানে স্থানান্তর পূর্বক পরিবেশগত ছাড়পত্র গ্রহণের নির্দেশ প্রদান করেন। অন্যথায় তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে উক্ত নোটিশে উল্লেখ করা হয়। কিন্তু এরপর প্রায় ৪ বছর অতিবাহিত হলেও ব্যবসায়ী আবেদার রহমান তার হ্যাচারিটি স্থানান্তর না করে আরো প্রসারিত করেন। এতে করে এলাকার পরিবেশ মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে। বিষয়টি নিয়ে ইতোমধ্যে স্থানীয় কাউন্সিলর, সাতক্ষীরা পৌর মেয়রসহ বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগ করেও কোন ফলপাননি বলে জানান এলাকাবাসী। এঘটনায় দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য কয়েকদিন পূর্বে এলাকাবাসী সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসক বরাবর লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। এঘটনায় পোল্ট্রি হ্যাচারির মালিক আবেদার রহমানের সাথে যোগাযোগ করলে তিনি মোবাইল কোন বক্তব্য দিতে রাজি হননি। তবে সাক্ষাতে কথা বলবেন বলে জানান। এদিকে জনবসতিপূর্ণ এলাকায় এধরনের পরিবেশ বিধ্বংসী পোল্ট্রি হ্যাচারী পরিচালনা করায় তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন এলাকাবাসী। পরিবেশ অধিদপ্তরের নির্দেশ উপেক্ষা করে তিনি কিভাবে এধরনের পরিবেশ বিধ্বংসী ব্যবসা করে যাচ্ছেন। তা নিয়ে রয়েছে সংশয়। অবিলম্বে ওই পোল্টি হ্যাচারী বন্ধ পূর্বক এলাকায় শান্তিপূর্ণ পরিবেশ ফিরিয়ে আনতে সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসক, পরিবেশ অধিদপ্তর সহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন। এবিষয়ে সাতক্ষীরা পৌরসভার ১, ২ ও ৩নং ওয়ার্ডের সংরক্ষিত মহিলা কাউন্সিলর জ্যোৎস্না আরা বলেন, পরিবেশ নষ্ট হবে এধরনের কোন ব্যবসা জনবসতিপূর্ণ এলাকায় করা উচিত নয়। মানুষের ক্ষতি করে যদি কেউ কোন হ্যাচারী পরিচালনা করে থাকে তবে তা অবশ্যই আইন বিরোধী। আমি এ বিষয়ে পৌর মেয়রের সাথে কথা বলে দ্রুত সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করবো।