চিকিৎসা ও পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে সময় কাটাতে আগামী ১৫ জুলাই, শনিবার যুক্তরাজ্যের রাজধানী লন্ডন যাচ্ছেন বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। বিষয়টি নিশ্চিত করেছে দলের একাধিক সূত্র। লন্ডনে খালেদা জিয়া তাঁর বড় ছেলে ও দলের সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বাসায় উঠবেন। চোখ ও পায়ের চিকিৎসায় প্রায় ছয় সপ্তাহর মতো সেখানে অবস্থান করবেন তিনি। ধারণা করা হচ্ছে, ঈদুল আজহার আগে আগে তিনি দেশে ফিরতে পারেন। বিএনপি চেয়ারপারসনের সঙ্গে যাচ্ছে দলের নীতিনির্ধারকদের একটি দলও। সেই দলে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল আউয়াল মিন্টু, তাঁর ছেলে ও বিএনপি জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য তাবিথ আউয়াল যাচ্ছেন। এ ছাড়া একটি সেমিনারে অংশ নিতে শুক্রবার লন্ডন যাচ্ছেন বিএনপি স্থায়ী কমিটির সদস্য আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী ও আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক রুমিন ফারহানা। সফরে যুক্তরাজ্য বিএনপি, যুক্তরাজ্য প্রবাসী বাংলাদেশি কমিউনিটির সঙ্গে কয়েকটি অনুষ্ঠানে অংশ নেবেন তিনি। এ ছাড়া বিদেশি কূটনীতিকদের সঙ্গে দু-একটি বৈঠকের সম্ভাবনাও রয়েছে। বিএনপির দলীয় বিভিন্ন সূত্রে জানা যায়, সফরে বিএনপি চেয়ারপারসন তাঁর বড় ছেলে তারেক রহমানের সঙ্গে নির্বাচনকালীন সহায়ক সরকার, আগামী নির্বাচনে দলের সম্ভাব্য প্রার্থী, দল ও অঙ্গসংগঠনের নেতৃত্বসহ বিভিন্ন বিষয়ে পরামর্শ করবেন। বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল বলেন, ‘ দলীয় পোর্টফোলিওতে এক নম্বর, দুই নম্বর দুই শীর্ষনেতার কথা হবে এ সফরে। এর ফলাফল কী হয়, এটা দেখার জন্য তো আগ্রহের মাত্রাটা একটু বেশিই থাকবে। আওয়ামী লীগ খুব বেশি গুরুত্ব দিচ্ছে আগামী জাতীয় নির্বাচনকে ঘিরে। তো সঙ্গত কারণেই নেতাকর্মীদের মধ্যে একটা আগ্রহ থাকে যে আমরা কি নির্বাচনে যাচ্ছি, না কী নির্বাচন একটা সহায়ক সরকারের অধীনে করার যে প্রস্তাব সেটা আদায় না হওয়া পর্যন্ত যাব না- এ আগ্রহের কারণেই এই সফরটাকে ঘিরে আগ্রহ মূলত।’ বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য ডক্টর খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, ‘চেয়ারপারসন সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সাথে কিছু ব্যাপারে গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নেবেন। লন্ডন ভিজিটে উনি হয়তো কোনো আন্তর্জাতিক রাজনৈতিক ক্ষেত্রে বিভিন্ন যোগাযোগের চেষ্টা করবেন। এটা হতেও পারে।’ এদিকে খালেদা জিয়ার লন্ডন সফর নিয়ে রাজনৈতিক অঙ্গনে নানা আলাপ-আলোচনা চলছে। আগামী নির্বাচনের আগে চেয়ারপারসনের এই সফরকে গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে দেখছেন দলের নেতাকর্মীরা। দলের শীর্ষ দুই নেতা আগামী দিনের আন্দোলন, দল পরিচালনার কর্মপরিকল্পনাসহ বিভিন্ন বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবেন বলে মনে করছেন তাঁরা। গত বছর ১৫ সেপ্টেম্বর চিকিৎসার জন্য লন্ডনে গিয়েছিলেন বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। সেখানে তিনি চোখ ও বাতের চিকিৎসা নেন। দুই মাসের বেশি সময় লন্ডনে অবস্থান শেষে গত বছরের ২১ নভেম্বর দেশে ফেরেন। লন্ডনে পারিবারিক পরিমণ্ডলে সময় কাটানোর পাশাপাশি তখন বিএনপির আয়োজনে দুটি অনুষ্ঠানেও অংশ নেন খালেদা জিয়া।