সাতক্ষীরা

টানা বর্ষণে সাতক্ষীরার জনজীবন বিপর্যস্ত, প্লাবিত নিম্নাঞ্চল

By Daily Satkhira

July 25, 2017

আসাদুজ্জামান : নিম্নচাপ ও মৌসুমি বায়ুর প্রভাবে সাতক্ষীরায় গত কয়েক দিনের টানা বর্ষণে জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। জেলার সাতটি উপজেলার নিম্নাঞ্চল ইতিমধ্যে পানিতে নিমজ্জিত হয়েছে। তলিয়ে গেছে শত শত বিঘা মৎস্য ঘের ও ফসলি জমি। গত কয়েকদিনের টানা বর্ষণে সাতক্ষীরা সদর, আশাশুনি, তালা, কলারোয়া ও শ্যামনগর উপজলোর কয়েক হাজার হেক্টর মৎস্য ঘের, ফসলি জমি ও সবজির ক্ষেত পানিতে তলিয়ে গেছে। তবে সবচেয়ে বেশ ক্ষতিগ্রস্ত হেেয়ছ আশাশুনি ও তালা উপজলোর কয়েকটি গ্রামে। এদিকে, পানি নিষ্কাশনের কোনো ব্যবস্থা না থাকায় সাতক্ষীরা শহররে বদ্দীপুর কলোনী, পুরতান সাতক্ষীরা সরদার পাড়া, ডেইয়ের বিল, কামালনগর, মধুমোল্যারডাঙ্গী, মহেদেীবাগ, মাছখোলা, বিনেরপোতা ও লাবসা এলাকার নিম্নাঞ্চল পানরি নিচে তলিয়ে গেছে। পানিতে তলিয়ে থাকায় জেলার বিভিন্ন এলাকার মানুষের মাঝে সাপ আতঙ্ক বিরাজ করছে। বৃষ্টির কারণে ঘর থেকে বের হতে পারছে না সাধারণ মানুষ। বাজারেও নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসের দাম বেড়ে গেছে। স্কুল কলেজের শিক্ষার্থীরা বাধ্য হয়ে ভিজতে ভিজতে স্কুল-কলেজে যাতায়াত করছে। খেটে খাওয়া দিন মজুর মানুষেরা কর্মহীন হয়ে পড়েছে। তারা বৃষ্টিতে বের হতে না পেরে অলস সময় কাটাচ্ছেন। ব্যবসা বাণিজ্যে প্রতিষ্ঠান গুলোও ক্রেতাশূন্য হয়ে পড়েছে। সংশি¬ষ্টরা বলছেন, পানি নিষ্কাশনের পথ বন্ধ করে অপরিকল্পিত মৎস্য ঘের ও জেলার কয়েকটি নদ-নদীর তলদেশ ভরাট হয়ে যাওয়ার কারণে এ জেলার নিম্নঞ্চল প্লাাবিত হচ্ছে।

সাতক্ষীরা জেলা গণফোরামের সাধারন সম্পাদক আলীনুর খান বাবুলসহ একাধিক স্থানীয়রা অভিযোগ করে বলেন, অপকিল্পিত বেড়িবাধ দিয়ে মৎস্য ঘের তৈরী করে পানি নিষ্কাশনের পথ বন্ধ করায় প্রত্যেক বছরই বর্ষা মৌসুমে জেলা শহরের নি¤œাঞ্চলে জলবদ্ধতার সৃষ্টি হয়। তারা জানান, শহরের কামাননগর, পলাশপোল ও মাছখোলা এলাকায় কয়েক জন প্রভাবশালী ঘের মালিক পানি নিষ্কাশনের পথ বন্ধ করে চিংড়ি ঘের করায় এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। ঘের মালিকরা পানি নিষ্কাশনের কোন পথ রাখেননি। যার ফলে একটু বৃষ্টি হলেই এসব এলাকার বাড়ি, ঘর ও রাস্তায় পানি উঠছে। তাই মাছের ঘের কেটে পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা করা অতীব জরুরি। আর তা না হলে এলাকার হাজার হাজার মানুষ স্থায়ী ভাবে পানিবন্দি হয়ে পড়বে। তারা আরো বলেন, সাতক্ষীরা শহরের বড় একটি অংশের পানি নিষ্কাশনের একমাত্র উপায় পৌরসভার ৭ নং ওয়ার্ডের খড়িবিলা খাল। অথচ সে খালে নেটপাটা দিয়ে স্থানীয় কয়েজন ব্যক্তি ঘের ব্যবসা শুরুকরায় কয়েক হাজার মানুষ আজ পানিবন্দী। ভেলায় করে রাস্তা পারাপার করতে হচ্ছে। এ ব্যাপারে স্থানীয়রা পৌর মেয়র ও জেলা প্রশাসনের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন। অপরদিকে, তালা উপজেলা সদরসহ কয়েটি স্থানের রাস্তাঘাট পানিতে নিমজ্জিত হয়েছে। অনেক স্থানে পানি জমে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। আশাশুনি উপজেলা মৎস্য অফিসার সেলিম সুলতান জানান, গত কয়েক দিনের টানা বর্ষনে এ উপজেলার প্রায় ২৭’শ হেক্টর মৎস্য ঘের ইতিমধ্যে পানিতে তলিয়ে গেছে। সাতক্ষীরা আবহাওয়া অধিদপ্তরের দায়িত্বরত কর্মকর্তা জুলফিকার আলি রিপন জানান, বৃষ্টি আরো কয়েকদিন যাবত হতে পারে।