মাহফিজুল ইসলাম আককাজ : সাতক্ষীরা পৌরসভা ও সড়ক ও জনপদ বিভাগের উদ্যোগে রাস্তার সংস্কার কাজ করা হয়েছে। বুধবার সকালে শহরের বিভিন্ন পয়েন্টে চলাচলের অনুপযোগী স্থানগুলো বালি ও ইট বসিয়ে প্রাথমিকভাবে চলাচলযোগ্য করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
সাতক্ষীরা-০২ আসনের সংসদ সদস্য মীর মোস্তাক আহমেদ রবির নির্দেশে ও তার ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় সাতক্ষীরা পৌরসভার স্কেভেটর মেশিন, ভেকো মেশিন ও বালি টানা মেশিন এবং পর্যাপ্ত শ্রমিক দিয়ে সহযোগিতা করেছে। কিন্তু পর্যাপ্ত মামামালের অভাব বলে জানান পৌর মেয়র তাজকিন আহমেদ চিশতি। ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান মেসার্স মহিউদ্দিন বাশির প্রজেক্ট ম্যানেজার মো. শরিফুল ইসলাম বলেন, “জনগণের দুর্ভোগ লাঘবের জন্য আমরা প্রাথমিকভাবে রাস্তার সংস্কার করছি। গত কয়েক দিনের টানা বর্ষণের ফলে আমরা কাজ শুরু করতে পারছিনা। তবে ৩/৪ দিন রোদ্র হলে আমরা পুরোদমে কাজ শুরু করতে পারবো। আমরা চেষ্টা করছি পর্যাপ্ত ইট বালি দিয়ে চলাচলযোগ্য করতে।”
সাতক্ষীরা পৌর মেয়র তাজকিন আহমেদ চিশতি বলেন, “সাতক্ষীরা ০২ আসনের সংসদ সদস্য মহোদয়ের নির্দেশে এবং জেলা প্রশাসনের সহযোগিতায় আমরা সড়ক জনপদ বিভাগ ও ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানকে সাথে নিয়ে শহরের এ প্রধান সড়কটির সংস্কার কাজ করছি। কয়েকদিনের টানা বৃষ্টির কারণে সড়কটির বেহাল দশা হয়েছে এবং জনগণ চলাচলে কষ্ট পাচ্ছে। আমরা চেষ্টা করছি রাস্তাটি সংস্কার করে প্রাথমিকভাবে চলাচলের উপযোগী করতে।”
সাতক্ষীরা ০২ আসনের সংসদ সদস্য মীর মোস্তাক আহমেদ রবি বলেন, “জনগণের ভোগান্তি মানে আমারই ভোগান্তি। আমি নিজেও এই রাস্তায় চলাচল করি। আমাদের শহরের এই রাস্তাটি দিয়ে সাতক্ষীরার ২২ লক্ষ মনুষ যাতায়াত করে থাকে। টানা কয়েকদিনের বৃষ্টিতে রাস্তায় সাধারণ জনগণ যেভাবে কষ্ট পচ্ছে আমি নিজে তা অবলোকন করেছি। রাস্তাটি দ্রুত নির্মাণ এবং প্রাথমিকভাবে চলাচলের উপযোগী করে রাখার জন্য আমি সড়ক জনপদ ও ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানকে বর্ষার আগেই নির্দেশ দিয়েছিলাম। আশা করছি চলতি সপ্তাহে পুরোদমে কাজ শুরু হবে। এতে সাতক্ষীরাবাসীর মাঝে স্বস্তির নিঃশ^াস ফিরে আসবে। এছাড়াও অন্যান্য চলাচলের অনুপযোগী রাস্তারগুলোর টেন্ডার হয়ে গেছে। বর্ষার পরেই কাজ শুরু হবে।”
উল্লেখ্য, বহুদিন ধরে সাতক্ষীরা জেলা শহরসহ বিভিন্ন স্থানের প্রধান সড়কগুলো চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। প্রতিনিয়িত জনসাধারণকে হয়রানি হতে হচ্ছে এসব রাস্তায় চলাচল করতে গিয়ে। চলতি বর্ষা মৌসুমে রাস্তার দুর্দশা ভয়াবহ রূপ ধারণ করেছে। এসব রাস্তায় একবার চলাচল করলে প্রবল ঝাঁকুনি, অধিক ভাড়ার পাশাপাশি পোশাক-পিরচ্ছদও নোংরা হয়ে যাচ্ছে। আর এসব নিয়ে ব্যাপক জনরোষ সৃষ্টি হয়েছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এবং গণমাধ্যমে প্রচুর লেখালেখি হচ্ছে। এরই জের :ধরে জোড়াতালি দিয়ে আপাতত সংস্কারের এ উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। তবে, এভাবে আর কতদিন জনগণকে ভুগতে হবে তা কেউ জানেন না। অন্যদিকে কেন এত জনদুর্ভোগ সত্বেও অনেক আগেই এই সড়কগুলো যথাযথভাবে সংস্কার করা হয়নি সে প্রশ্নের কোন সন্তোষজনক উত্তর নেই কারও কাছে। এ যেন মৃত্যুর পরে রোগীকে ওষুধ দেয়ার চেষ্টা!
এদিকে, বুধবার সকালে রাস্তার সংস্কার কাজ শুরুর সময় উপস্থিত ছিলেন সাতক্ষীরা পৌর মেয়র তাজকিন আহমেদ চিশতি, সাতক্ষীরা সড়ক ও জনপদ বিভাগের উপ বিভাগীয় প্রকৌশলী সৈয়দ গিয়াস উদ্দিন, ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান মেসার্স মহিউদ্দিন বাশির প্রজেক্ট ম্যানেজার মো. শরিফুল ইসলাম, পৌর কাউন্সিলর শেখ শফিক উদ দৌলা সাগর, ফারহা দিবা খান সাথী, শফিকুল আলম বাবু, সাতক্ষীর পৌরসভার নির্বাহী প্রকৌশলী নাজমুল করিম, শহর পরিকল্পবিদ শুভ্র চন্দন মহলী, সাবেক কাউন্সিলর আব্দুল আনিছ খান চৌধুরী বকুল প্রমুখ। উল্লেখ্য যে, সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজের সামনে থেকে সার্কিট হাউজ মোড় পর্যন্ত সাড়ে ৫ কিঃ মিঃ রাস্তা ১৬ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মাণ করা হবে।