‘সিমলা-মানালি-লেহ-খারদুংলা’ ভারতের হিমাচল এবং জম্মু-কাশ্মীর প্রদেশে অবস্থিত এই স্থানগুলো যেকোনো সাইক্লিস্টের কাছেই তীর্থস্থান তুল্য। এটিকে বলা হয় বিশ্বের সর্বোচ্চ মোটরেবল রোড। তবে তীর্থস্থান তুল্য এ সড়কগুলো দুর্গম। যার প্রতি পদে পদে মৃত্যু হাতছানি দিয়ে ডাকে।
সম্প্রতি সিমলা শহর থেকে শুরু করে হিমালয়ের এইসব দুর্গম রাস্তায় সাইকেল চালিয়ে মৃত্যুর সঙ্গে আলিঙ্গন করে এসেছেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের ছাত্র সাকিব মাহমুদ।
১৮ জুলাই দ্বিতীয় বাংলাদেশি হিসেবে এই রুটে সাইকেল চালিয়ে সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ১৮ হাজার ৩৮০ ফুট উচ্চতায় খারদুংলার পাশে বুকে ধারণ করেন লাল সবুজের পতাকা। এই উচ্চতায় উঠতে তাকে ১৯ দিনে পাড়ি দিতে হয়েছে ১১২৩ কিলোমিটার দীর্ঘ বন্ধুর পথ।
এর আগে ১৯ জুন চট্টগ্রাম থেকে ভারতের উদ্দেশে যাত্রা করেন সাকিব। কলকাতা থেকে দিল্লি হয়ে হিমাচল প্রদেশের সিমলা থেকে ২২ জুন শুরু করেন মূল রাইড। পথিমধ্যে ৩০০ কিলোমটার সাইকেল চালিয়ে নিরাপত্তাজনিত কারণে অনুমতি না পেয়ে মানালি থেকে ফিরতে হয় উল্টো পথে। এতে কিছুটা হতাশ হলেও একেবারে দমে যাননি এই কৃতি সাইক্লিস্ট। ফের নতুন উদ্যমে যাত্রা শুরু করেন খারদুংলার পথে। পুরো রাইডে বেশ কয়েকবার উচ্চতাজনিত ও শারিরীক সমস্যায় পড়তে হয় তাকে। এরসঙ্গে সঙ্গী হয় ভারী বৃষ্টি।
তবে সবকিছু উপেক্ষা করে অবশেষে ১৮ হাজার ফুট উচ্চতায় খারদুংলায় উঠতে সফল হন। অভিযাত্রার ৭ দিন আগেও জানতেন না তার আদৌ যাওয়া হবে কি না। অর্থের অভাবে ভিসাও করতে পারছিলেন না। আর্থিক পৃষ্ঠপোষকতার জন্য নিজ বিশ্ববিদ্যালয়সহ অনেকের দ্বারে গিয়েছেন। কিন্তু তাতে মেলেনি কোনো সাড়া।
পরবর্তীতে এগিয়ে আসেন কিছু বড়ভাই। যাদের ধার দেনায় আজ তার এ অর্জন। তীব্র একাগ্রতা আর অধ্যাবসায় ছিল বলেই আর্থিক সংকট থাকা সত্ত্বেও পৌঁছাতে পেরেছেন নিজের কাংঙ্ক্ষিত গন্তব্যে। যে গৌরবান্বিত করেছেন নিজের দেশ ও বিশ্ববিদ্যালয়কে।
অনুভূতি জানাতে গিয়ে সাকিব মাহমুদ বলেন, উপরে ওঠার পর মনে হলো আমি পেরেছি। আমার দেশের নাম সবার সামনে তুলে ধরতে।’
তার রাইডে যারা সহযোগিতা করেছেন তাদের জানিয়েছেন অসীম কৃতজ্ঞতা। তিনি আরো বলেন, আর্থিক পৃষ্ঠপোষকতা পেলে ভবিষ্যতে সাইকেলে বিশ্ব জয় করতে চাই।