এম বেলাল হোসাইন/আমির হোসেন খান চৌধুরী : ঠিকমত খাদ্য না দেওয়া, ভয়ংকর যৌন নিপীড়নসহ বিভিন্ন অত্যাচারে অতিষ্ঠ হয়ে সাতক্ষীরা সরকারি শিশু সনদের ৪ কর্মকর্তা-কর্মচারীকে মারপিট করেছে শিক্ষার্থীরা। রোববার রাত সাড়ে ৮টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। ওই কর্মকর্তারা হলেন, অফিস সহকারী সাতক্ষীরার দেবনগর এলাকার খলিলুর রহমানের ছেলে তানভীর হোসেন, গোপালগঞ্জ জেলার বিমল বৈরাগী, বড় ভাই (পদের নাম) নওগা জেলার মোজাফফার হোসেনের ছেলে আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ বিন হোসেন ও কৌশিক। শিশু পরিবারের এতিম শিশুরা জানায়, সরকার কর্তৃক দেওয়া সুযোগ সুবিধা থেকে তারা বঞ্চিত। তারা অসুস্থ হলেও তাদের ঠিকমত চিকিৎসা করানো হয় না। সবচেয়ে বড় অভিযোগ হলো ওই কর্মকর্তারা এতিম শিশুদের দিয়ে বিকৃত যৌনাচার করে। পুরুষের বিশেষ অঙ্গ না চুষলে তাদের অকথ্য নির্যাতন করা হয় বলেও জানিয়েছে শিশুরা। কথা না শুনলে ছোট ছোট বচ্চাদের বেদম মারপিট করে তারা। এবিষয়ে কারো কাছে নাশিল করলে তাদের জন্য আরও কঠিন শাস্তির ব্যবস্থা করা হয়। তারপরও তারা উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে বার বার বিচার দিলেও কোন ফল পায়নি বলে জানিয়েছে। কোন উপায় না পেয়ে রবিবার রাতে শিশুরা এধরনের কাজ করতে বাধ্য হয়েছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সরকারি শিশু পরিবারের ব্যবস্থাপনা কমিটির একজন সদস্য বলেন, “তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগের অন্ত নেই। এখানকার কর্মকর্তারা শিশুদের উপর অমানুষিক নির্যাতন করে। এমনকি ন্যাক্কারজনক যৌন নির্যাতনও করা হয় তাদের সাথে। আমরা সদস্য হলেও কোন মিটিংয়ে আমাদের ডাকা হয় না। তবে আহত অফিস সহকারীরা এধরনের অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, আমাদের সাথে তাদের কোন সমস্যা নেই। কিন্তু কি কারণে তারা আমাদের মারপিট করেছে তা তাদের জানা নেই। কতজন মেরেছে এমন প্রশ্নের জবাবে তারা বলেন ৭২ জন শিক্ষার্থীই তাদের উপর হামলা করেছে। এঘটনার খবর পেয়ে সেখানে উপস্থিত সদর সহকারী কমিশনার(ভূমি)ও ভারপ্রাপ্ত ইউএনও দিবাশিষ চৌধুরী বলেন, যেহেতু অনেক রাত হয়েছে। আমি আপাতত তাদের শান্ত থাকতে বলেছি। পরবর্তীতে শিক্ষার্থীদের বক্তব্য শুনে একটা ব্যবস্থা করা হবে। সাতক্ষীরা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা(ওসি) মারুফ আহমেদ বলেন, “পুলিশ খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়। আমরা যতদূর জেনেছি শিশু পরিবারের একজন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে শিশুদের নির্যাতন, গা-হাত-পা টিপিয়ে নেয়ার অভিযোগে শিশুরা এমনটি করেছে। তবে বিষয়টি যেহেতু প্রশাসনের তাই তারাই এবিষয়ে ব্যবস্থা করবেন।” এদিকে এ ঘটনায় সাতক্ষীরার সচেতন নাগরিকরা গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। জেলা প্রশাসক যে প্রতিষ্ঠানের সভাপতি সেখানে এতিম শিশুদের উপর এমন অমানবিক নির্যাতন দিনের পর দিন চলছে- এটা মেনে নেয়া যায় না।