সাতক্ষীরা

আজ কিংবদন্তী চিকিৎসক ডা. এম আর খান এর জন্মদিন

By Daily Satkhira

August 01, 2017

ডেস্ক রিপোর্ট : আজ ১ অগাস্ট। ১৯২৮ সালের এই দিনে সাতক্ষীরা জেলার রসুলপুর গ্রামে জন্ম নেন বাংলাদেশের চিকিৎসকদের গর্ব স্বাধীনতা পুরস্কারপ্রাপ্ত জাতীয় অধ্যাপক ডা. এম আর খান (মো. রাফি খান)।

এম আর খান স্যার ১৯৫২ সালে কলকাতা মেডিকেল কলেজ থেকে এমবিবিএস এবং ১৯৬২ সালে যুক্তরাজ্য থেকে এমআরসিপি ডিগ্রি অর্জন করেন । দেশে ফিরে এসে তিনি রাজশাহী মেডিকেল কলেজ ও ঢাকা মেডিকেল কলেজে শিশু বিভাগ প্রতিষ্ঠা করেন। পরবর্তীতে তদানিন্তন পিজি হাসপাতালে শিশু স্বাস্থ্য বিষয়ে DCH ও FCPS ডিগ্রি চালু করেন। তারই ধারাবাহিকতায় আজ বাংলাদেশে প্রায় ১৩০০ জন শিশু চিকিৎসক দেশের শিশু স্বাস্থ্য উন্নয়নে কাজ করছেন। এই সূত্রে তিনি প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় প্রজন্মের শিশু বিশেষজ্ঞদের শিক্ষা গুরু। অসাধারণ এই মানুষটি খুবই সাধারণ আটপৌড়ে জীবনযাপন করতেন। কিন্তু মানুষের জন্য কাজ করেছেন জীবনের শেষ সময় পর্যন্ত। চিকিৎসক হিসাবে কিংবদন্তী এই মানুষটি শিশু চিকিৎসার জন্য ঢাকা, যশোর ও সাতক্ষীরায় প্রতিষ্ঠা করেছেন একাধিক শিশু হাসপাতাল। এর বাইরে সাধারণ মানুষের জন্য সাতক্ষীরা, চুয়াডাঙ্গা ও টাঙ্গাইলের প্রত্যন্ত অঞ্চলে মা ও শিশুদের স্বাস্থ্য ও পুষ্টি সেবা ছাড়া চালু করেছেন অনানুষ্ঠানিক সান্ধকালীন প্রাথমিক শিক্ষা, ভোকেশনাল ট্রেনিং, পরিবেশ উন্নয়ন, ক্ষুদ্র ঋণ কর্মসূচী, আর্সেনিক ফিল্টার বিতরণ, স্যানেটারী লেট্রিন স্থাপনসহ নানা কর্মকান্ড। এর জন্য অধিকাংশ অর্থই নিজস্ব উৎস থেকে দান করেছেন। অত্যন্ত সময়ানুবর্তী ছিলেন। ছিলেন রবীন্দ্র অনুরাগী। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের অনেক ছড়া, কবিতা তাঁর মুখস্ত ছিল। তাঁর সকল বক্তৃতায় একটি বা দুটি ছড়া-কবিতা সাবলীল উপস্থিতি থাকতই। তাঁর সাথে একবার শান্তি নিকেতনে একটি কনফারেন্সে গেলে রবীন্দ্র যাদুঘরের দেয়ালে লেখা একটি কবিতা আমি পড়ছিলাম শব্দ করে। দূর থেকে শুনে বললেন, ‘সাকিল, কবিতাটি ভুল পড়ছ।’ স্যার সঠিক ছিলেন। রবীন্দ্রনাথের কবিতা, ছড়া তার এতটাই ঠাসা ছিল মস্তিষ্কে। চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ বিএমএর একটি নবীনবরণ অনুষ্ঠানে স্যার কথা বলছিলেন ‘হিপোক্রেটিক ওথ এবং আজকের বাস্তবতা’ শিরোনামে। শেষটা ছিল হযরত ইমাম গাজ্জালী (র.)-এর সমাধিলিপিতে ফার্সীতে লেখা একটি কবিতাংশ-

‘মান তাজ্জুব মেকুনাম/ চেলা ডাকতুরা ওয়ালী-এ খোদা/লা মেশাওয়াত।’ বাংলা হচ্ছে—

‘আমি বিস্মিত হই বার বার/ কেন একজন ডাক্তার অলি হয় না আল্লাহর।’

কথাগুলো জাতীয় অধ্যাপক ডা. এম আর খান স্যার ছাড়া আর কারও জন্য এত বেশি প্রযোজ্য কি-না, আমার জানা নেই।

লেখক: ডা. সাকিল আহম্মদ, সহযোগী অধ্যাপক, শিশু বিভাগ, শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ, ঢাকা ।