খুলনা

খুলনায় ৪৫ ছাত্রীকে পিটুনি, শিক্ষক আটক

By Daily Satkhira

August 01, 2017

খুলনা মডেল স্কুল অ্যান্ড কলেজের তৃতীয় শ্রেণির ৪৫ জন ছাত্রীকে বেধড়ক মারপিটের অভিযোগে শিক্ষক মো. আবদুর রশিদকে আটক করেছে খালিশপুর থানার পুলিশ। আজ মঙ্গলবার স্কুলের শেষ ক্লাস চলার সময় বেলা ১২টার দিকে এই মারধরের ঘটনা ঘটে।

খুলনা মডেল স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ মো. হারুন অর রশিদ জানান, গত জুনে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের আদেশে কলেজে যোগ দেন প্রভাষক মো. আবদুর রশিদ। তিনি আজ তৃতীয় শ্রেণির ক্লাসে গিয়ে ছাত্রীদের আনন্দ-উল্লাস করতে দেখেন। এ সময় নিয়ন্ত্রণ করতে না পেরে তিনি উপস্থিত সব ছাত্রীকে স্কেল দিয়ে বেধড়ক মারধর করেন।

অধ্যক্ষ আরো বলেন, ছাত্রীদের পিটুনির খবর পেয়ে সেখানে গিয়ে প্রতিবাদ জানান অভিভাবকরা। মারধরে সুমি নামে এক ছাত্রীর মাথা কেটে রক্ত বের হলে অভিভাবকরা উত্তেজিত হয়ে তাঁর কাছে গিয়ে বিচার দাবি করেন। এ সময় অভিভাবকদের সঙ্গে স্থানীয়রাও যোগ দেন। অভিভাবকদের দাবির মুখে খালিশপুর থানার পুলিশ শিক্ষক আবদুর রশিদকে আটক করে নিয়ে যায়। এ সময় খুলনার অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার, সহকারী পুলিশ কমিশনার ও ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ঘটনাস্থলে যান।

অধ্যক্ষ হারুন অর রশিদ জানান, ছাত্রীদের দৈহিকভাবে মারধর করার অভিযোগে শিক্ষক আবদুর রশিদকে সাময়িক বরখাস্ত করা হবে।

খুলনা মডেল স্কুল অ্যান্ড কলেজের তৃতীয় শ্রেণির ছাত্রী সোমা বলে, ‘আমরা সবাই চিল্লাপাল্লা করছিলাম, কয়েকজন বেঞ্চের ওপর উঠছিল, তখন ওই দিকে আমিও উঠছিলাম এই জন্য বিজ্ঞানের স্যার সবাইকে মারছে, সবাইকে ফুলাই দিছে।’

তৃতীয় শ্রেণির ছাত্রী ইসরাত জাহান সায়মার মা বলেন, ‘আমরা বাচ্চাদের স্কুলে দিয়ে চলে যাই। আবার দেড়টার দিকে তাদের নিতে আসি। ওরা বলে আজকে এভাবে ক্লাস হইছে, এই ক্লাস হইছে। কিন্তু আজকে আমার বাচ্চা অনেক কান্নাকাটি করছে। ওর হাতের একপাশ ফুলে গেছে, এমনভাবে মারছে স্যার। বাড়িতে গিয়ে বাচ্চাকে বরফ দিছি আগে, দিয়ে তারপর আমি স্কুলে আসছি।’

ওই অভিভাবক আরো বলেন, ‘এখন আমার কথা হচ্ছে, বাচ্চাকে তো আমি আবার কালকে স্কুলে নিয়ে আসব। আমরা কীভাবে নিয়ে আসব? আমরা তো দিয়ে চলে যাই, এখন কি আমাদের বাচ্চারা ঠিক থাকবে? সেটাই স্যারদের কাছে দাবি।’

আরেক এক ছাত্রীর মা বলেন, ‘খুলনা মডেল স্কুল অ্যান্ড কলেজ ভালো বিধায় আমার মেয়েকে ভর্তি করেছিলাম, বুঝেছেন। কিন্তু এই প্রিন্সিপাল স্যারের ব্যবহার এত খারাপ। আমরা কয়েকবার মিটিংয়ে এসে ভালো ব্যবহার পাইনি। আমার সঙ্গে খুবই খারাপ ব্যবহার করিছে, আমি মনে খুব কষ্ট পাইছিলাম। প্রত্যেকটা গার্ডিয়ানের সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করে।’

খুলনা মহানগর পুলিশের সহকারী কমিশনার সোনালী সেন বলেন, ‘পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নিতে তাঁকে (শিক্ষক আবদুর রশিদ) এরই মধ্যে আটক করা হয়েছে। এখান থেকে যদি কোনো অভিযোগ যায়, তাহলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আইন অনুযায়ী যত রকম ব্যবস্থা নেওয়া যায় আমরা সেগুলো নেব।’