নিজস্ব প্রতিবেদক : সাতক্ষীরা সরকারি শিশু পরিবার। সম্প্রতি এখানে ঘটে যায় কিছু অঘটন। শিশুদের প্রতি সদনের দায়িত্বরত শিক্ষকদের বিভিন্ন নির্যাতনের কারণে শিশুরা ক্ষুব্ধ হয়ে কয়েকজন শিক্ষকদের মারপিট করে। সরেজমিনে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে জানা যায়, এখানকার দ্বায়িত্বরত শিক্ষকরা এতিমখানাকে নিজেদের বাড়ির মত ব্যবহার করছে এবং শিশুদের প্রতি নির্দয় আচরণ করার ফলে ঘটেছে শিক্ষককে মারপিটের ঘটনা। তারা বলছে, অন্যায় আচরণের প্রতিবাদ করলে বা হুকুম তামিল না করলে শিশু পরিবারের কর্মচারীরা এতিম শিশুদের গলায় পা দিয়ে দাঁড়িয়ে নির্যাতন করে। গা-হাত-পা টিপতে বলে, প্রায়ই পুরুষের বিশেষ অঙ্গে মুখ দিতে বলে। না দিতে চাইলে নির্মমভাবে নির্যাতন করে। ছাত্রদের সাথে কথা বললে নির্যাতনের কিছু ঘটনা জানা যায়। ছাত্ররা বলেন, আমরা এখানে মোট ৬৮ জন থাকি। আমরা বিভিন্ন সময় সাংবাদিকদের সাথে কথা বলার চেষ্টা করি আমাদের নির্যাতনের কথাগুলো বলার জন্য। কিন্তু এখানের একজন শিক্ষক মোস্তফা মো. নুরুজ্জামান আমাদের বলেন, তোরা এখানকার নির্যাতনের কাহিনি যদি বাইরের কারও সাথে বলিস তবে ২০ টাকা খরচ করে আমার লোক দিয়ে তোদের হাত পা ভেঙে দেব। আর বাইরের লোকের সাথে বলে পরে এখানে থাকবিনা ? মেরে হাত পা ভেঙে দেব। এছাড়া আরও জানা যায় আলিম নামে একজন কেয়ারটেকারই নাকি এখানকার সবকিছু। ছাত্ররা কেউ অসুস্থ হলে চিকিৎসা না করে বাড়িতে পাঠিয়ে দেয়া হয়। তাছাড়া বিভিন্ন সময় শারিরিক নির্যাতনসহ এতিমখানায় অবস্থিত ছাত্রদের পিতা মাতাকে ছাত্রদের সাথে দেখা করতে দেয় না এই শিক্ষক আলিম। এছাড়া আরও জানা যায়, এতিমখানায় ছাত্রদের এই গরমে ফ্যান চালাতে দেওয়া হয় না অথচ এই এতিমখানায় কেয়ারটেকার আলিম সপরিবারে দ্বিতীয় তলায় থাকে এবং ফ্রিজ, ফ্যান লাইটসহ ব্যবহারসহ কারেন্টের চুলায় রান্না করে। আর ছাত্ররা ফ্যান চালালে তাদের শারীরিক নির্যাতন করে এই শিক্ষক আলিম। এছাড়া এতিমখানায় তানভিন নামে আর একজন কেয়ারটেকার ৪র্থ তলায় থাকে। তানভীন বাচ্চাদের পড়ানোর পরিবর্তে গল্প করে সময় কাটায় আবার অতিরিক্ত পড়া আদায় না হলে ছাত্রদের বেদম মার দেওয়ার অভিযোগ আছে ছাত্রদের। তাছাড়া যারা কলেজে পড়াশুনা করছে তারা এই শিক্ষকদের অবহেলার কারনে এই বছর একদিনও সকালে খেয়ে যেতে পারে না। এছাড়া জামান নামে একজন শিক্ষকের কারণে বাচ্চাদের সাবান ও কাপড় পরিস্কার করার ডিটারজেন্ট ও দেওয়া হয় না। এছাড়া বাচ্চাদের দিয়ে বিকৃত যৌন হয়রানি ও নিজের কাপড় পরিষ্কার করানোরও অভিযোগ রয়েছে শিক্ষক বিমান বৈরাগীর বিরুদ্ধে। ডাক্তার সাত মাস আগে আসলেও আর কোন খবর নেই ডাক্তারের। তাছাড়া খাবার ঠিকমত না দেওয়াসহ গাছের কোন ফল বাচ্চারা খেলে মরা বাপ মা তুলে গালাগালি করেন কেয়ারটেকার আলিম ও তানভীন। ছাত্ররা এই কেয়ারটেকার আলিম ও তানভীন এর অপসারণ দাবি করেন। এছাড়া আরও জানা যায়, শহিদ স্যার থাকাকালে এতিমখানার কিছু উন্নতি হলেও বর্তমান মিজানুর রহমান কোন উন্নয়ন করেন না শুধু কাগজ কলমে সীমাবদ্ধ রাখেন আর বলেন জেলা প্রশাসক এই এতিমখানার সভাপতি এখানে কেউ ঝামেলা করবে না। তত্বাবধায়ক মিজানুর রহমান বলেন, আমি গত ১৯ তারিখে বদলি হয়ে এসেছি। এখানে আগে দায়িত্বে ছিলাম কিন্তু মাঝখানে অন্য জায়গায় ছিলাম কিছুদিন বর্তমানে বদলি হয়ে আবার এসেছি। আমি সব অভিযোগগুলো শুনেছি প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবো অতিশীঘ্রই। এই সময় উপস্থিত ছিলেন জেলা পরিষদ সদস্য (সং-০২) অ্যাডভোকেট শাহনওয়াজ পারভীন মিলি, জেলা পরিষদ সদস্য (সং-০৫) মাহফুজা সুলতানা রুবি, মানবাধিকার কর্মী সাকিবুর রহমান, রোকনুজ্জামান সাংবাদিক শহিদুল ইসলাম ও ইমন।