বাবুল আক্তার, পাইকগাছা : পাইকগাছায় নানা কর্মসূচির মধ্য দিয়ে বিশ্ববরেণ্য বিজ্ঞানী আচার্য প্রফুল্ল চন্দ্র (পিসি) রায়ের ১৫৬তম জন্মবার্ষিকী পালিত হয়েছে। এ উপলক্ষে বুধবার সকালে বিজ্ঞানীর বসত ভিটা রাড়–লীতে জেলা, উপজেলা প্রশাসন আয়োজিত ও রাড়–লী ইউনিয়ন পরিষদের ব্যবস্থাপনায় বিজ্ঞানীর প্রতিকৃতিতে মাল্যদান, তথ্য চিত্র প্রদর্শন, আলোচনা সভা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান সহ দিনব্যাপী বিভিন্ন কর্মসূচী পালিত হয়েছে। জেলা প্রশাসক আমিন-উল আহসানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন, জেলা আ’লীগ সভাপতি ও জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান শেখ হারুনুর রশিদ। বিশেষ অতিথি ছিলেন, উপজেলা চেয়ারম্যান এ্যাডঃ স.ম. বাবর আলী, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সজীব খান, উপজেলা নির্বাহী অফিসার ফকরুল হাসান, উপজেলা মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান শাহানারা খাতুন, সহকারী কমিশনার (ভূমি) জুবায়ের হোসেন চৌধুরী, এএসপি (ডি সার্কেল) মোঃ ইব্রাহিম, জেলা আ’লীগ সাংগঠনিক সম্পাদক কামরুজ্জামান জামাল, স্বাস্থ্য ও গণসংযোগ বিষয়ক সম্পাদক ডাঃ মোঃ শেখ শহিদুল্লাহ, মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার শেখ শাহাদাৎ হোসেন বাচ্চু, অধ্যক্ষ আবুল কালাম আজাদ, রবিউল ইসলাম, গোপাল চন্দ্র ঘোষ, অবসরপ্রাপ্ত অধ্যাপক জি.এম আজহারুল ইসলাম, উপাধ্যক্ষ সরদার মোহাম্মদ আলী। সহকারী শিক্ষা অফিসার শোভা রায় ও প্রভাষক ময়নুল ইসলামের পরিচালনায় বক্তব্য রাখেন, ইউপি চেয়ারম্যান কওসার আলী জোয়াদ্দার, পাইকগাছা প্রেসক্লাব সম্পাদক এম. মোসলেম উদ্দীন আহম্মেদ, উপজেলা প্রকৌশলী আবু সাঈদ, মৎস্য কর্মকর্তা পবিত্র দাস, পল্লী উন্নয়ন কর্মকর্তা সুব্রত দত্ত, যুব উন্নয়ন কর্মকর্তা রেজাউল করিম, ইউনিয়ন আ’লীগ সভাপতি শংকর দেবনাথ, মুক্তিযোদ্ধা আব্দুস সবুর, ইউপি সদস্য আরশাদ আলী, পি.সি ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক উত্তম কুমার দাশ প্রমুখ। উল্লেখ্য, বিজ্ঞানী পিসি রায় ১৮৬১ সালের ২ আগষ্ট পাইকগাছার কপোতাক্ষ নদের তীরে রাড়–লীতে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতার নাম হরিশ্চন্দ্র রায় ও মাতার নাম ভুবন মোহিনী রায়। তিনি একাধারে ছিলেন শিক্ষাবিদ, শিল্পপতি, রসায়নবিদ, সমাজ সেবক, রাজনীতিবিদ, সমবায় আন্দোলনের পুরোধা। পিসি রায় ১৮৯২ সালে কলকাতার মানিক তলায় মাত্র ৮শ টাকা পুঁজি নিয়ে বেঙ্গল কেমিক্যাল এ্যান্ড ফার্মাসিউটিক্যাল ঔষধ শিল্প কারখানা প্রতিষ্ঠা করেন। খুলনা, সাতক্ষীরা ও বাগেরহাটে একাধিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, কাপড়ের মিল ও জন্মভূমি রাড়ুলীতে সমবায় ব্যাংক প্রতিষ্ঠা করেন। তিনি একাধারে ২০ বছর কলকাতার প্রেসিডেন্সি কলেজে রসায়ন শাস্ত্রের সহকারী অধ্যাপক ছিলেন। ব্রিটিশ সরকার ১৯৩০ সালে তাকে ‘নাইট’ উপাধিতে ভূষিত করেন। এছাড়া একই বছর লন্ডনের ডারহাম বিশ্ববিদ্যালয়, ১৯৩৪ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ভারত বর্ষের মহীশুর ও বেনারস বিশ্ববিদ্যালয় তাকে সম্মান সূচক ডক্টরেট ডিগ্রি প্রদান করে। চিরকুমার এই বিজ্ঞানী তার জীবনের অর্জিত সমস্ত সম্পদ মানব কল্যানে দান করে গেছেন। ১৯৪৪ সালের ১৬ জুন ৮৩ বছর বয়সে বিজ্ঞানীর জীবনাবসান ঘটে।