ডেস্ক রিপোর্ট: ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) উপাচার্য নির্বাচনের জন্য সিনেটের মনোনীত তিন সদস্যের প্যানেলের পরবর্তী সব ধরনের কার্যক্রম স্থগিত করেছেন আপিল বিভাগ। আজ বৃহস্পতিবার প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের আপিল বিভাগ এ আদেশ দেন। বেঞ্চের অপর দুই বিচারপতি হলেন সৈয়দ মাহমুদ হোসেন ও মির্জা হোসাইন হায়দার। উপাচার্য নির্বাচনের জন্য সিনেটের বিশেষ অধিবেশন ডাকার বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে একটি রিটের শুনানি শেষে এ আদেশ দেন আপিল বিভাগ। একই সঙ্গে আদালত রিটটি চার সপ্তাহের মধ্যে নিষ্পত্তিরও আদেশ দিয়েছেন। এ সময় দায়িত্ব পালন করবেন বর্তমান উপাচার্য আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক। বাদীপক্ষের আইনজীবী ব্যারিস্টার রোকনউদ্দিন মাহমুদ গণমাধ্যমকে বিষয়টি জানিয়েছেন। গত ২৯ জুলাই বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ দপ্তর থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, উপাচার্য নির্বাচনের জন্য প্যানেলের তিন সদস্য হলেন গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষক এবং বর্তমান উপাচার্য অধ্যাপক ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক, ইন্টারন্যাশনাল বিজনেস বিভাগের শিক্ষক অধ্যাপক ড. মো. কামাল উদ্দীন এবং থিওরিটিক্যাল অ্যান্ড কম্পিউটেশনাল কেমিস্ট্রি বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. আবদুল আজিজ। যে সিনেট অধিবেশনে এই উপাচার্য প্যানেল মনোনীত করা হয়, সেই সিনেটের বিশেষ অধিবেশন নিয়ে রিটটি করেছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকসহ ১৫ জন রেজিস্টার্ড গ্র্যাজুয়েট। আদালতে রিট আবেদনটি দায়ের করেন বরিশালের আনোয়ার হোসেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আবদুস সামাদ, অধ্যাপক ড. সাদেকা হালিম, অধ্যাপক ড. এ কে এম গোলাম রাব্বানী, অধ্যাপক ড. হারুনুর রশিদ খান, অধ্যাপক ড. সিতেশ চন্দ্র বাচার, অধ্যাপক ড. সৈয়দ মোহাম্মদ শামসুদ্দিন, অধ্যাপক ড. সৈয়দ হুমায়ুন আখতার, অধ্যাপক ড. মো. আসাদুজ্জামান, সহকারী অধ্যাপক মো. আবদুর রহিম, অধ্যাপক ড. এমরান কবির চৌধুরী, অধ্যাপক ড. কে এম সাইফুল আলম খান, ঢাকার এ কে এম আতিকুর রহমান, ফরিদপুরের ড. আবদুল জব্বার মিয়া, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগী অধ্যাপক মো. হুয়ায়ন কবির। রিটে আবেদনকারীরা জানান, গত ১৬ জুলাই ঢাবির রেজিস্ট্রার একটি চিঠি দেন সিনেট সভার জন্য। যাতে বলা হয়, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় আদেশ, ১৯৭৩ আর ২১(২) ধারার অর্পিত ক্ষমতাবলে উপাচার্য ২৯ জুলাই বিকেল ৪টায় সিনেটের বিশেষ সভা আহ্বান করেছেন। উক্ত বিশেষ সভায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় আদেশ ১৯৭৩, ১১(১) ধারা অনুযায়ী চ্যান্সেলর কর্তৃক ভাইস চ্যান্সেলর নিয়োগের জন্য তিনজনের একটি প্যানেল মনোনয়ন করা হবে। ভাইস চ্যান্সেলরের প্যানেলে যাঁদের নাম অন্তর্ভুক্ত করার জন্য প্রস্তাব করা হবে, নাম প্রস্তাবকালে তাঁদের লিখিত সম্মতি সিনেট চেয়ারম্যানের কাছে পেশ করতে হবে। ওই সভায় উপস্থিত থাকার জন্য অনুরোধ করছি। এই চিঠির পরিপ্রেক্ষিতেই রিটটি করা হয়। গত ২০ জুলাই রিট আবেদনের শুনানি নিয়ে বিচারপতি তারিক উল হাকিম ও বিচারপতি এম ফারুকের হাইকোর্ট বেঞ্চ রুলসহ ২৯ জুলাই ডাকা সিনেটের বিশেষ অধিবেশনের ওপর স্থগিতাদেশ দেন। আদালত রুলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আদেশ ১৯৭৩ সালে ২০(১) ধারা অনুযায়ী সিনেট গঠন না করে ২৯ জুলাই ডাকা সভা কেন আইনগত কর্তৃত্ববহির্ভূত হবে না, তা জানতে চান। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষে ভিসি, প্রোভিসি (একাডেমিক), প্রোভিসি (অ্যাডমিনিস্ট্রেশন), ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার ও বাংলাদেশের পক্ষে শিক্ষা সচিবকে রুলের জবাব দিতে বলা হয়। এরপর গত ২৬ জুলাই হাইকোর্টের আদেশ স্থগিত করেছিলেন চেম্বার আদালত। এই আদেশের পর সিনেট অধিবেশন করে কর্তৃপক্ষ। আদালতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষে শুনানিতে ছিলেন আইনজীবী এ এফ এম মেজবাহ উদ্দিন।