সাতক্ষীরা

সিঙ্গাপুর বলছে মুক্তামণি ‘ভালো হবে না’, হাল ছাড়ছে না ঢাকা

By Daily Satkhira

August 03, 2017

ডেস্ক রিপোর্ট : বিরল রোগে আক্রান্ত সাতক্ষীরার শিশু মুক্তামণির অবস্থা অস্ত্রোপচার করার মতো নেই বলে জানিয়েছেন সিঙ্গাপুর জেনারেল হাসপাতালের চিকিৎসকরা। তাঁরা বলছেন, মুক্তামণির অসুখ আরোগ্যযোগ্য নয়। তবে এরপরও তার চিকিৎসা প্রক্রিয়া শুরু করতে চান বাংলাদেশের চিকিৎসকরা। আর এ জন্য অনুমতিও দিয়েছে মুক্তামণির পরিবার। বৃহস্পতিবার দুপুরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান বার্ন ইউনিটের প্রধান সমন্বয়ক ডা. সামন্ত লাল সেন। সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, সম্প্রতি মুক্তামণিকে ভিডিওতে দেখে এবং তার বিভিন্ন শারীরিক পরীক্ষা-নিরীক্ষার প্রতিবেদন দেখে সিঙ্গাপুর জেনারেল হাসপাতাল ই-মেইলের মাধ্যমে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালকে জানায়, মুক্তামণির রোগটি আরোগ্যযোগ্য নয়। ডা. সামন্ত লাল সেন বলেন, মুক্তামণির বায়োপসি করার প্রয়োজন ছিল। তবে তার রক্তের প্লাটিলেট বা অণুচক্রিকা বারবার কমে যাওয়ার কারণে বায়োপসি প্রক্রিয়ায় বিলম্ব হচ্ছিল। একথা জেনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার চিকিৎসার ব্যাপারে সিঙ্গাপুর জেনারেল হাসপাতালে যোগাযোগ করার পরামর্শ দেন। গত ২৭ জুলাই ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে সিঙ্গাপুর জেনারেল হাসপাতালের প্লাস্টিক সার্জারি বিভাগের সঙ্গে বোর্ড মিটিং করা হয়। পরবর্তীকালে ই-মেইলের মাধ্যমে সিঙ্গাপুর জেনারেল হাসপাতাল জানায়, মুক্তামণির এই রোগটি ভালো হওয়ার নয়। অস্ত্রোপচারের মতোও নয়। তারা রোগটির পরীক্ষা-নিরীক্ষার ব্যাপারে সাহায্য করতে পারে কিন্তু মুক্তার রোগের চিকিৎসা করতে পারবে না। এরপর বুধবার ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে বৈঠক করে ১৩ সদস্যবিশিষ্ট মেডিকেল বোর্ড। এ সময় ঝুঁকিপূর্ণ হলেও সব ধরনের সতর্কতা অবলম্বন করে শনিবার মুক্তামণির বায়োপসি করার সিদ্ধান্ত নেন তাঁরা। সংবাদ সম্মেলনে মুক্তামণির জন্য সবার কাছে দোয়া প্রার্থনা করেন ডা. সামন্ত লাল সেন। এ সময় সেখানে মুক্তামণির মাও উপস্থিত ছিলেন। মুক্তার হাতটি কেটে ফেলতে হবে কি না জান চাইলে মেডিকেল বোর্ড প্রধান ও ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটের প্রধান অধ্যাপক ডা. আবুল কালাম বলেন, এই রোগ শুধু চামড়ায় সীমাবদ্ধ নাও থাকতে পারে। মাংসে ছড়িয়ে যেতে পারে। সব কিছু বিবেচনা করেই চিকিৎসা করা হবে। তবে তাঁরা হাতটি রেখে দেওয়ার চেষ্টা করবেন বলে জানান তিনি। ডা. আবুল কালাম আরো বলেন, এই চিকিৎসার অনেকগুলো ধাপ রয়েছে। দুই সপ্তাহ আগে মুক্তামণিকে যখন ভর্তি করা হয়, তখন দুর্গন্ধের কারণে সেখানে কেউ থাকতে পারত না। এখন সেই গন্ধও অনেক কমেছে। তবে এই চিকিৎসা একটিমাত্র অস্ত্রোপচারে শেষ হবে না, ছয় থেকে সাতটি অস্ত্রোপচার লাগবে। মুক্তামণির শরীর স্বাভাবিক রেখেই অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে মাংস ও চামড়া প্রতিস্থাপন করা হবে। মুক্তামণির চিকিৎসার ব্যাপারে তাঁরা যথেষ্ট আত্মবিশ্বাসী বলে জানান এই চিকিৎসক। সংবাদ সম্মেলনে মুক্তামণির মা বলেন, তাঁরা ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের চিকিৎসায় খুবই খুশি। চিকিৎসা শেষে সুস্থ মেয়েকে নিয়ে যেন বাড়ি ফিরতে পারেন, সবার কাছে সেই দোয়াই চাইলেন তিনি।