স্বাস্থ্য

ক্যানসারের যম, জামে না নেই একদম!

By Daily Satkhira

August 05, 2017

কালোজাম গ্রীষ্মকালের একটি জনপ্রিয় ফল। বাংলাদেশ ছাড়াও প্রতিবেশী দেশগুলিতেও জামের কদর কম নয়। লবন মাখানো পাকা জাম জিভে পানি এনে দেয়। শুধু স্বাদে বলে নয়, পুষ্টিগুণেও ভরপুর।

খাদ্যোগত উপাদান: প্রতি ১০০ গ্রাম পাকা জামে রয়েছে কার্বোহাইড্রেটস ১৫.৬ গ্রাম, ফ্যাট .২৩ গ্রাম, প্রোটিন .৭২ গ্রাম, জলীয় অংশ ৮৩.১৩ গ্রাম, ভিটামিন এ ৩ আইইউ, ভিটামিন সি ১৪.৩ মিলিগ্রাম, ক্যালসিয়াম ১৯ মিলিগ্রাম, আয়রন .১৯ মিলিগ্রাম, ম্যাগনেসিয়াম ১৫ মিলিগ্রাম, ফসফরাস ১৭ মিলিগ্রাম, পটাসিয়াম ৭৯ মিলিগ্রাম, সোডিয়াম ১৪ মিলিগ্রাম।

১। ডায়াবেটিসের ঝুঁকি কমায়: জামের গ্লিসামিক ইনডেক্স কম হওয়ায় এটি ডায়াবেটিসের জন্য ভালো বলে বৈজ্ঞানিক ভাবে প্রমাণিত। বিভিন্ন বৈজ্ঞানিক গবেষণায় দেখা গিয়েছে, জামের দানাও রক্তের সুগার লেভেল ৩০% পর্যন্ত কমাতে সাহায্য করে। যে কারণে ডায়াবেটিসের রোগীকে জামের সঙ্গেই জামের বীজ খাওয়ার পরামর্শ দেন ডাক্তাররা। জামের দানা ভালো করে শুকিয়ে নিয়ে গুঁড়ো করে রোজ এক চামচ করে খেলে উপকার মেলে।

২। রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়: জামে প্রচুর পরিমাণে ক্যালসিয়াম, আয়রন, পটাসিয়াম এবং ভিটামিন সি রয়েছে। যা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধির সহায়ক। ক্যালসিয়াম থাকার কারণে শরীরের হাড় মজবুত হয়।

৩। হৃদরোগের ঝুঁকি কমায়: জামে এলাজিক অ্যাসিড বা এলাজিটেনিন্স, অ্যান্থোসায়ানিন এবং অ্যান্থোসায়ানিডিন্স থাকে যা প্রদাহরোধী হিসেবে কাজ করে। এই উপাদানগুলো শক্তিশালী অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট হিসেবে কাজ করে বলেই কোলেস্টেরলের জারণ রোধ করে এবং হৃদরোগ সৃষ্টিকারী প্লাক গঠনে বাধা দেয়। এ ছাড়াও হাইপারটেনশন প্রতিরোধেও সাহায্য করে জাম। কারণ এতে প্রচুর পটাসিয়াম থাকে। ১০০ গ্রাম জামে ৫৫ গ্রাম পটাসিয়াম থাকে।

৪। সংক্রমণ ঠেকায়: জাম গাছের বাকল, পাতা ও বীজ ব্যাকটেরিয়া সংক্রমণের চিকিৎসায় ব্যবহার হয়ে আসছে।

৫। পরিপাকে সাহায্য করে: আয়ুর্বেদশাস্ত্রে ডায়েরিয়া ও আলসার নিরাময়ে জাম পাতা ব্যবহারের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। জাম খেলে মুখের দুর্গন্ধ দূর হয়। দাঁত ও মাড়ি শক্ত ও মজবুত করে। দাঁতের মাড়ির ক্ষয় রোধে সাহায্য করে।

৬। ক্যানসার প্রতিরোধীও: বিভিন্ন গবেষণায় জামের কেমোপ্রোটেক্টিভ বৈশিষ্ট্য প্রমাণিত হয়েছে। জামে পর্যাপ্ত পরিমাণে বেগুনি রঞ্জকের উপস্থিতি থাকায় মানবদেহে ক্যানসার প্রতিরোধে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। জাগেতিয়া জিসি অ্যান্ড কলিগস-এর এক গবেষণায় উল্লেখ করা হয়, জামের নির্যাসে রেডিওপ্রোটেক্টিভ উপাদান আছে। জামের নির্যাস ক্যানসার সৃষ্টিকারী ফ্রি-র‍্যাডিকেলের কাজে এবং বিকিরণে বাধা দেয়।

৭। স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধিতে সাহায্য করে: বয়সের সঙ্গে মানুষের স্মৃতিশক্তিও হারাতে থাকে। জাম স্মৃতিশক্তি প্রখর করে। এ ছাড়াও জাম ব্রেইন অ্যালার্ট হিসেবে কাজ করে।

৮। কোষ্ঠকাঠিন্য থাকলে: দীর্ঘ দিন ধরে যাঁরা কোষ্ঠকাঠিন্য ভুগছেন, তাঁদের মলদ্বারে টিউমার হওয়ার আশঙ্কা থাকে। জামের বাইরের আবরণে থাকে পর্যাপ্ত পরিমাণে ফাইবার বা আঁশ। আঁশজাতীয় খাবার কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে। জাম মলদ্বার বা কোলনের ক্যানসার প্রতিরোধ করে।