ডেস্ক রিপোর্ট : একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে সব রাজনৈতিক দলই ব্যস্ত। পিছিয়ে নেই ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগও। তবে সাম্প্রতিক কিছু ঘটনায় অস্বস্তিতে রয়েছে ক্ষমতাসীন দলটি। সাম্প্রতিক সময়ে রাজধানীবাসীকে আতঙ্কে ফেলেছিলো চিকুনগুনিয়া। এতে মানুষের মৃত্যুর ঘটনাও ঘটেছে।এ রোগ থেকে বাঁচতে তেমন কোন আধুনিক উদ্যোগ গ্রহন করতে পারেনি দুই সিটি কর্পোরেশন। উল্টো মানুষের ঘরে ঘরে গিয়ে মশারি টাঙিয়ে দিতে পারবেন না বলে মন্তব্য করেছেন ঢাকা উত্তর সিটি মেয়র আনিসুল হক। তার এ কথায় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরাসহ অসন্তুষ্ট হয়েছেন নগরবাসীও।
চিকুনগুনিয়ার রেশ কাটতে না কাটতেই সম্প্রতি বৃষ্টির কারণে দেশের প্রধান দুই শহর পানিতে ডুবে যায়। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, রাজধানীর খালগুলোর অবস্থা ভালো না। কিন্তু কৃত্রিম পানি নিষ্কাশনব্যবস্থা খুবই ভালো। ঠিকমত পানির পাম্পগুলো চালালে ঢাকা শহরে পানি জমতো না। আর মানুষের ভোগান্তিও হতো না। অথচ ঢাকার দুই সিটি করপোরেশন ও ওয়াসা একে অপরের উপর দোষারোপ করছে। এদিকে, সম্প্রতি বরগুনা জেলার এক স্কুল ছাত্রীর আঁকা বঙ্গবন্ধুর ছবি দিয়ে নিমন্ত্রণ কার্ড ছাপালে আওয়ামী লীগ নেতা ইউএনও তারিক সালমনকে হেনস্তা করে। যে কারণে সরকারকে বেশ বিব্রতকর অবস্থায় পড়তে হয়েছিল। যদিও এ ঘটনার তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নিয়েছিল দলটির হাইকমান্ড। তবে সংশ্লিষ্টরা বলছেন, স্থানীয় পর্যায়ে সরকারের নানা উন্নয়নমূলক কার্যক্রম চলছে। এ অবস্থায় মাঠ পর্যায়ের প্রশাসনকে ক্ষুব্ধ করা ঠিক হয়নি। তাছাড়া নির্বাচনকে সামনে রেখে নানা রকম অপতৎপরতা চলতে পারে সরকার বিরুদ্ধে। এসব ঠেকানোর জন্যেও মাঠ প্রশাসনকে লাগবে। কিন্তু স্থানীয় রাজনৈতিক নেতারা সাদা পানি গোলা করায় ব্যস্ত। অন্যদিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আওতাভুক্ত ৭ জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদের আন্দোলন করার সময় পুলিশের ছোঁড়া টিয়ার শেলের আঘাতে এক ছাত্রের চোখ হারাতে বসেছেন। পুলিশের কিছু অতি উৎসাহী সদস্যের কারণে এমন ঘটনা ঘটেছে। যার প্রভাব পরছে সরকারের উপর।
এদিকে, বগুড়ায় মা-মেয়েকে ধর্ষণের পর মাথা ন্যাড়া করে স্থানীয় শ্রমিকলীগ নেতা। এ ঘটনা দেশের গণমাধ্যমগুলোর প্রধান শিরোনাম হয়। যার কারণে বহিষ্কার করতে হয় ঐ নেতা কে কিন্তু জানা গেছে, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের শ্রমিকলীগের হাইকমান্ডকে বলার পর অভিযুক্ত শ্রমিকলীগ নেতাকে সংগঠন থেকে বহিষ্কার করা হয়।
অন্যদিকে তথ্য প্রযুক্তি আইনের ৫৭ ধারা নিয়েও হ-য-ব-র-ল অবস্থায় আছে সরকার। সাংবাদিক সমাজ মনে করছে, তাদের কণ্ঠ বন্ধ করার জন্য সরকারের এ আইন তৈরী করা। অন্যদিকে, নির্বাচনকে সামনে রেখে সরকারের বিরুদ্ধে মিথ্যা কিছু ছড়ানো বন্ধ করতে এটি অনেক বেশি প্রয়োজন বলে মনে করছে দলটির নেতারা। এর আগে বাজেট নিয়ে সরকারকে বেশ বিতর্কে পড়তে হয়েছে। শেষ পর্যন্ত ভ্যাট ও শুল্ক না বাড়িয়েই বাজেট পাস করেছে সংসদ। সম্প্রতি পার্বত্য অঞ্চলে পাহাড় ধসে বেশকিছু মানুষ মারা গেছে তা নিয়েও সরকার একটু সমালোচিত হয়েছে। এ বিষয়ে আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক ড. হাসান মাহমুদ বলেন, সাম্প্রতি বিভিন্ন জায়গায় কিছু ঘটনা ঘটেছে। তবে আমরা এর কঠিন বিচার চাই এবং বিচার হচ্ছে । তবে ২০০১ এর পরেও অনেক কিছু ঘটেছে কিন্তু সে সময়কার সরকার তার বিচার করেনি। আমরা যেকোন বিচার সঠিক ভাবে করি। তারা করেনি কিন্তু তারাই আবার গলাবাজি করে বেশি।
আওয়ামী লীগের উপ-দপ্তর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া বলেন, আওয়ামী লীগ এমন একটি রাজনৈতিক দল। যেখানে অন্যায়ের কাছে মাথা নত করে না। এখানে দলের আদর্শ-নীতি মেনেই সকলকে চলতে হয়। উন্নয়নের রাজনীতি মানে আওয়ামী লীগ।