নিজস্ব প্রতিবেদক : সাতক্ষীরা সদর সাব-রেজিস্ট্রি অফিসে দলিল লেখকদের দুর্নীতি, অফিসের নাম করে সরকারি রাজস্বের অতিরিক্ত অর্থ আদয় করার একাধিক অভিযোগ পাওয়া গেছে। প্রতিদিন ৫/৬ লক্ষ টাকারও অধিক আদায় করছেন জমির ক্রেতারদের নিকট থেকে। দলিল লেখক সমিতির নামে এবং অফিসের নাম ভাঙিয়ে এই অতিরিক্ত টাকা আদায় করা হচ্ছে। সাতক্ষীরা সদর উপজেলা রসুলপুর গ্রামে আলিম উদ্দীন, বাঁকাল গ্রামের মাগফুর হোসেন, লাবসা গ্রামের মফিজ উদ্দীন, ঘোনা মাঝেরপাড়া গ্রামের তকিমউদ্দীন, মাহম্মুদপুর গ্রামের ফজর আলী জানান, তারা নিজেরা এবং তাদের আত্মীয় স্বজনদের জমি ক্রয় করতে সদর সাব-রেজিস্ট্রি অফিসে গেলে দলিল লেখকরা পৌর এলাকার বাহিরে দলির রেজিস্ট্রি করার জন্য প্রতি ১ লক্ষ টাকার দলিলে ১২ হাজার টাকা আদায় করছে। অথচ সরকারি রাজস্ব প্রতি ১ লক্ষ টাকার দলিলে ৯ হাজার টাকা। অতিরিক্ত প্রতি ১ লক্ষ টাকার দলিলে ৩ হাজার টাকা করে তারা আদায় করছে। পৌর এলাকার বাহিরে প্রতি বিঘার জমির দাম ১০ লক্ষ টাকা হয় সে ক্ষেত্রে সরকারি রাজস্ব আসে ৯০ হাজার টাকা। দলিল লেখকরা আদায় করছে ১ লক্ষ ২০ হাজার টাকা। অতিরিক্ত ৩০ হাজার টাকা তাদের সমিতি এবং অফিস খরচের নামে আদায় করা হচ্ছে বলে তারা জানায়। তারা আরোও জানায় পৌর এলাকার জমি প্রতি ১ লক্ষ টাকার দলিলে সরকারি রাজস্ব আসে ১১ হাজার টাকা। সেখানে ক্রেতারদের কাজ থেকে আদায় করা ১৪ হাজার টাকা। সাতক্ষীরা পৌর এলাকার ১ কাটা জমির মূল্য (এলাকা ভেদে) ১০/১৫ লক্ষ টাকা। সপ্তাহে ৪ কার্য্য দিবসে ৬ থেকে ৮ কোটি টাকার জমি বেচা-কেনার দলিল রেজিস্ট্রি হয় (কোন কোন দিন এর বেশিও হয়)। সেই হিসাবে সপ্তাহে ৪ কার্যদিবসে ১৮ থেকে ২৪ লক্ষ টাকা অতিরিক্ত আদায় করছে দলিল লেখকরা। সপ্তাহের বৃহস্পতিবার সাব-রেজিস্ট্র্রার বদলি অফিস করেন। দানপত্র দলিলে ১% বাদে সমপরিমাণ টাকা আদায় করা হয় বলে তারা জানায়। এছাড়াও প্রতিটি দলিলে ৩৪০ টাকা সরকারি রেভিনিউ জমা দিতে হয়। প্রতিটি হেবানামা দলিলে সরকারি রাজস্ব স্ট্যাম্পসহ ৯০০ শত টাকা, দলিল লেখকরা আদায় করছে ৪ থেকে ৫ হাজার টাকা। এ ব্যাপারে কয়েকজন দলিল লেখক নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানায়, অতিরিক্ত আদায়কৃত টাকায় একটি বড় অংশ তাদের সমিতিতে জমা দিতে হয়। অফিসে কোন খরচ দিতে হয় কি না জানতে চাইলে তারা কোন উত্তর দেয়নি। দলিল লেখকরা জানায় তাদের সমিতির সদস্য সংখ্যা ১০৯ জন। ৭০ জন প্রতিদিন দলিল রেজিস্ট্রির করে থাকেন এবং ৭০ জনের নামে সমিতির পক্ষ থেকে ডিপিএস করা আছে। ডিপিএস এর মেয়াদ শেষ হওয়ার পথে। সমিতিতে কত টাকা জমা আছে জানতে চাইলে তারা কোন টাকা জমা নেই বলে জানায়। তবে এখন থেকে ব্যাংকে টাকা জমা হওয়ার কথা আছে বলে তারা জানায়। সমিতির ইতিপূর্বে লক্ষ লক্ষ টাকার কোন হিসাব নেই বলে তারা জানান। এ ব্যাপারে সদর দলিল লেখক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মনিরুজ্জামান মনির কাছে মুঠো ফোনে জানতে চাইলে তিনি তথ্য গোপন করে বলেন, ৭০ জনের মতো দলিল লেখক আছে সদর সাব-রেজিস্ট্রি অফিসে। কোন অতিরিক্ত অর্থ আদায় করা হয় না বলে তিনি দাবি করেন। সমিতির কোন টাকা তারা আত্মসাৎ করেননি বলেও তার দাবি। কেউ যদি অতিরিক্ত টাকা আদায়ের কোন অভিযোগ করেন তাহলে সেই সমস্ত দলিল লেখকদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। এ ব্যাপারে সদর সাব-রেজিস্ট্রির লুৎফর রহমান মোল্ল্যার নিকট জানতে চাইলে তিনি বলেন, অফিস কোন টাকা গ্রহণ করে না। দলিল লেখকরা কোন ক্রেতার কাছ থেকে কত টাকা আদায় করছে এটা অফিসের জানার বিষয় না। সদর সাব-রেজিস্ট্রি অফিসে কোন কর্মচারী অবৈধ অর্থে গ্রহণ করে না।