আসাদুজ্জামান : সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালের সাইকেল শেড ও প্রায় সাড়ে ৬’শ আম গাছ কোন প্রকার নিলাম বিজ্ঞপ্তি ছাড়াই কতিপয় কর্মকর্তার যোগসাজশে মাত্র দুই লাখ পনের হাজার টাকায় ইজারা দেয়ার কাজ সম্পন্ন করা উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। সদর হাসপাতাল রুগি কল্যাণ সমিতির নামে গত মঙ্গলবার এক বছরের জন্য এ ইজারা দেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। যা নিলাম বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে উম্মুক্ত নিলাম হলে কমপক্ষে ৫ লাখ টাকা রুগি কল্যাণ সমিতির তহবিলে জমা হতো বলে জানিয়েছেন নিলাম বঞ্চিত ঠিকাদাররা। উল্লেখ্য, এই ইজারার টাকা গরিব ও অসহায় রোগীদের চিকিৎসার সহায়তার জন্য ব্যায় করার নিয়ম রয়েছে। তাই সর্বোচ্চ মূল্যে ইজারা দেয়া হলে অধিক সংখ্যক দরিদ্র রোগীরা এ তহবিল থেকে চিকিৎসার জন্য আর্থিক সহায়তা পেতে পারতেন। কিন্তু গরিবদের বঞ্চিত করে ইজারাদারের কাছ থেকে আর্থিক সুবিধা নেয়ার অভিযোগ উঠেছে খোদ এই তহবিলের ব্যবস্থাপনার দায়িত্বে থাকা কর্মকর্তা ও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের বিরদ্ধ্।ে এবিষয়ে সাংবাদিকরা প্রশ্ন করলে সাতক্ষীরার সিভিল সার্জন ডা. তাওহীদুর রহমান ও সদর হাসপাতালে নিয়োজিত সমাজ সেবা অফিসার আব্দুল আওয়াল নিলাম না হওয়া এবং সংবাদপত্রে বিজ্ঞপ্তি না দেয়ার বিষয়টি স্বীকার করে সাংবাদিকদের বলেন, “আমরা পুরনো ধারাবাহিকতায় আলোচনার ভিত্তিতে একজনকে বাগান ও সাইকেল শেড বরাদ্দ দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম। রোগী কল্যাণ সমিতির এ সংক্রান্ত কমিটির সভায় প্রাথমিকভাবে এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। তবে যেহেতু এ বিষয়টি নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে তাই বিজ্ঞপ্তি দিয়ে উম্মুক্ত নিলামের আয়োজন করা হবে। বৃহস্পতিবার এ কথা বললেও শনিবার সেটি নিয়ে তারা আবারও তালবাহানা করছেন আবারও অভিযোগ উঠেছে। জানা গেছে, কোন প্রকার প্রচার ও বিজ্ঞপ্তি ছাড়াই ছাড়াই গোপনে এ কাজটি করতে সহায়তা করেছেন সদর হাসপাতালের বহুলাচোতি দুর্নীতিবাজ কর্মচারী ফার্মাসিস্ট কামরুজ্জামান।এই কামরুজ্জামানের মাধ্যমে তালা উপজেলার জনৈক নজরুল ইসলামের ছেলে কামরুল ইসলামকে সাইকেল শেড ও আমবাগান স্বল্প টাকায় ইজারা দিয়ে সেখান থেকে মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। জনশ্রুতি আছে তিনি নাকি সাতক্ষীরা সদর হাসাপাতালের সবকিছুই নিয়ন্ত্রণ করেন। আর এ কারণে তিনি এখন জিরো হিরো হয়েছেন এবং নামে বেনামে বহু সম্পত্তির মালিকও বনে গেছেন। সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালের কর্মচারী কামরুজ্জামান অবশ্য বলেন, “আমি রোগী কল্যাণ সমিতির সদস্য নই, তবে সমাজসেবা অফিসারের ডাকে আমি সেখানে গিয়েছিলাম। সেখানে সিভিল সার্জন স্যার এ বিষয়ে আমার পরামর্শ চেয়েছিলেন।” এ বিষয়ে জানতে চাইলে সিভিল সার্জ ডা. তওহীদুর রহমান বলেন, “আসলে বিজ্ঞপ্তি দিয়ে নিলাম করতে হলে অনেক খরচ হবে তাই কমিটির সদস্যরা আলোচনার ভিত্তিতে ইজারা দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। এত অল্প টাকার বিষয় নিয়ে সংবাদপদত্রে লেখালেখি না করাই ভালো।” এ ব্যাপারে ফার্মাসিস্ট কামরুজ্জামান জানান, আমি একজন কর্মচারী মাত্র। আমি এ ব্যাপারে কোন সিদ্ধান্ত নিতে পারিনা। তিনি আরো বলেন, আমি এমনিতেই বিপদের মধ্যে আছি আমাকে নিযে আর টানা হ্যাছড়া করবেননা বলে এই প্রতিবেদককে অনুরোধ জানান। তবে, তিনি জানান, রোগী কল্যাণ সমিতির কমিটির সভায় প্রাথমিকভাবে এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। যেখানে আমি উপস্থিত ছিলাম।