বাংলাদেশি তরুণী তাসনিম জামানকে নিয়ে বিশ্ব মিডিয়ায় হইচই শুরু হয়ে গেছে। গত বুধবার (৯ আগস্ট) তাসনিমের একটি ফেসবুক পোস্ট ঘিরেই এ আলোচনার সূত্রপাত। বরের সঙ্গে বিয়ের ছবি শেয়ার করে দীর্ঘ একটি পোস্ট লিখেছেন তাসনিম।
বিয়ে এবং বিলাসিতা- দুই শব্দকে আলাদা করে ভাবা ভীষণ কঠিন। বিয়েতে বর যাই হোক কনেকে ভারী মেকআপ-শাড়ি-স্বর্ণালংকার পরতে হবে। শুধু বাংলাদেশই নয়, উপমহাদেশ অঞ্চলের সব দেশেই এমন ধারণা প্রচলিত। আর এ বিষয়টিকেই চ্যালেঞ্জ জানাতে চেয়েছেন তাসনিম।
নিজের সবচেয়ে স্মরণীয় দিনে তাসনিম পরেছিলেন নানির সাদামাটা সূতি শাড়ি। ফেসবুকে তার পোস্টটি ২৮ হাজার বার শেয়ার করা হয়েছে। প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছেন এক লাখ সাত হাজারেরও বেশি মানুষ। পোস্টটিতে দেড়হাজারের বেশি মন্তব্য পড়েছে।
তাসনিম ফেসবুকে লিখেছেন, আমাদের সমাজে কনে টনের পর টন মেকআপ পরে, ভারি পোশাক করে, গহনার ভারে তারা পড়ে যায় এমন অবস্থা। কনের এই বিলাসিতার ছবি কিন্তু তার পরিবারের প্রতিচ্ছবি নয়। মাঝে মাঝে এসব তাদের ইচ্ছার বিরুদ্ধেই হয়। সমাজই ঠিক করে যে নারীদের জন্য আমাদের এ খরচটা করতে হবে। নারীদের ইচ্ছার বিরুদ্ধে করা এসব কর্মকাণ্ড তাদের জন্য কল্যাণ বয়ে আনে না। সব বিয়েতে গিয়েই আমি শুনেছি মানুষ গল্প করছে, কনে কী সুন্দরী? সে কতটা গহনা পরেছে? তার পোশাকের দাম কত হতে পারে? এসব প্রশ্ন শুনতে শুনতে বড় হওয়ার পর বিয়েতে কনে সেরা মেকআপ আর্টিস্টকে খুঁজতে বাধ্য হয়। অনেক সময়, অর্থ, শক্তি অপচয়ের পর কনে আয়নায় আর নিজেকেই খুঁজে পায় না। কারণ সমাজই তাকে মনে করিয়ে দেয় বিয়ের জন্য তার সত্যিকারের ত্বক যথেষ্ঠ সুন্দর নয়। চাচি-মামি, বন্ধু ও সহকর্মীদের কাছ থেকে সে শুনে গহনা ছাড়া কনের সাজ অসম্পূর্ণ। সেটা এটা বলতে পারে না, বিয়েতে বেশি বেশি গহনা পরলেই সেটা তার পরিবারের সম্মান বাড়িয়ে দিবে কী না? সমাজ থেকে তাকে শুনতে হবে, তুমি মেয়ে। বিয়েতে তুমি কেন গহনা পরনি?…আমার এই সিদ্ধান্তের জন্য অনেক বাধা পেয়েছি। নিজের পরিবারের সদস্যরা বলেছে আমরা তোমার সঙ্গে ছবি তুলব না। কারণ তোমাকে কনের (তারা যেমনটা কল্পনা করে) মতো লাগে না। পরিবারের সেইসব সদস্যদের প্রতি কৃতজ্ঞ যারা এতে আমাকে সমর্থন জানিয়েছেন, বিশেষ করে আমার পাশে যিনি আমার পাশে বসে, খালেদ (খালেদ সাইফুল্লাহ-তাসনিমের বর)। খালেদ, শুধু আমাকে শর্তহীনভাবে সমর্থনই করেনি আমার অবস্থানে গর্ব করেছে।