মোস্তাফিজুর রহমান/বি এম আলাউদ্দীন, আশাশুনি থেকে : আশাশুনি উপজেলার বড়দল ইউনিয়নের মাদিয়া গ্রামের হত দরিদ্র কাত্তিক চন্দ্র গাইনের বড় পুত্র রাজিব গাইন(১৯) বিরল রোগে আক্রান্ত। সুস্থ জীবনে ফেরার আঁকুতি নিয়ে সকলের সহযোগিতা চান তিনি। তার শরীরের বাম দিকটা জুড়ে ছোট বড় অসংখ্য টিউমারের মত ফোলা মাংশে ঢেকে গেছে। বিশেষ করে হাত ও পিঠের অংশের ফোলা অংশগুলোর আকৃতি দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। কিছু দিন পরপর হাতের ফোলা অংশ ফেটে রক্ত বের হয় সাথে সাথে প্রচ- যন্ত্রণা করতে থাকে। বাম হাতে তেমন বল পায় না। বিরল রোগে আক্রান্ত রাজিব জানান, বুঝতে শেখার পর থেকে তার এরকম অবস্থা। শরীরের এরকম অবস্থা নিয়েও থেমে নেই সে। প্রতিনিয়ত যন্ত্রণাকে সঙ্গী করে জীবন সংগ্রামে বড়দল আফতাব উদ্দীন কলেজিয়েট স্কুল থেকে ২০১৫ সালের এসএসসিতে জিপিএ ৩.৬০ ও ২০১৭ সালে জিপিএ ৩.৭৫ পেয়ে এইস এস সি পাশ করে ¯œাতক শ্রেণিতে ভর্তির জন্য অপেক্ষায় আছে রাজিব। জেল-পাতুয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পড়াশুনার জীবন শুরু তার। শরীরের অবস্থা ভালো হলে হয়তো আরও ভালোভাবে পড়াশুনা করতে পারত সে। বেশিক্ষণ পড়লে ঘাড়ের বাম দিকসহ সমস্ত বাম পাশে প্রচন্ড যন্ত্রনা করতে থাকে। রাজিবের মা মমতা গাইন জানান, জন্মের পর থেকেই তার ছেলের এরকম অবস্থা। প্রথমে তার বাম হাতটা অস্বাভাবিক ছিল। খুব নরম ছিল তার বাম হাত। সে সময় সাতক্ষীরা শিশু হাসপাতালে নেওয়া হলে বেশ কিছু পরিক্ষা শেষে ডাক্তারা বলেন রাজিবের সু চিকিৎসার ব্যবস্থা সাতক্ষীরাতে নাই। তার যখন বয়স ৪বছর তখন অনেক কষ্টে কিছু টাকা সংগ্রহ করে উন্নত চিকিৎসার জন্য ভারতে নেওয়া হয়। ভারতের কলকাতার বেলভূমি নার্সিং হোমের ডাঃ আশিষ মুর্খজীর কাছে একটানা ৬মাস চিকিৎসা শেষে তার শরীরের অবস্থার উন্নতি হয়। দেশে ফিরে আসার সময় ডাক্তার জানান ১৫ বছর বয়সে তার একটা অপারেশন করতে হবে। কিন্তু অভাবের সংসারে টাকার অভাবে ছেলেকে আর ভারতে নেওয়া সম্ভব হয়নি। কয়েক বছর ভালো থাকার পর তার সমস্ত বাম পাশে টিউমারের মত হয়ে ফুলতে থাকে। সাথে প্রচ- যন্ত্রণা। তিন বছ আগে তার হাতের ফোলা অংশ ফেঁটে রক্ত বের হতে শুরু করলে খুলনা বাদশা মেমোরিয়াল হাসপাতাল ও সার্জিকালে চিকিৎসা নেওয়া হয়। সেখানে ১মাস চিকিৎসা শেষে কোন উন্নতি না হওয়ায় বাড়ি ফিরে আসে। খুলনা থেকে ফিরে সর্বশেষ ঢাকা জাতীয় হৃদরোগ হাসপাতাল, ইউনাইটেড হাসপাতালসহ ঢাকা পিজি হাসপাতালে চিকিৎসা নেওয়া হয়। সেখানেও অবস্থার কোন উন্নতি না হওয়ায় নিরাশ হয়ে বাড়িতে বসে যস্ত্রনা ভোগ করে যাচ্ছে। তার বারা ঢাকাতে ফেরী করে মাদুর বিক্রি করে যে টাকা আয় করেন সেটা দিয়ে সংসার চালাতেই কষ্ট হয়। তার উপর ছোট ছেলের পড়ার খরজ। এত কিছুর পর তার এ বিরল রোগের চিকিৎসা করা আমাদের পক্ষে সম্ভব হয়ে ওঠে না। বাধ্য হয়েই চোখের সামনে ছেলের যন্ত্রনায় ছটফট করার দৃশ্য দেখতে হয়। বাবা মায়ের জন্য এর চেয়ে কষ্ট আর কি হতে পারে ? রাজিবের আকুতি সরকার, স্বাস্থ মন্ত্রণালয়, কোন বে-সরকারি প্রতিষ্ঠান বা কোন স্বহৃদয় ব্যক্তি যেন তার প্রতি সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে এ কঠিন যন্ত্রণার হাত থেকে তাকে মুক্তি দেয়ার জন্য চেষ্টা করেন। রাজিবের মোবাইল ফোন নম্বর : ০১৭৫০/৮০৬৬৫১।