আন্তর্জাতিক

স্বাধীনতা দিবসে ‘গো-রক্ষকদের’ উদ্দেশে কড়া বার্তা মোদির

By Daily Satkhira

August 15, 2017

গুলি দিয়ে কিংবা গালি দিয়ে কাশ্মীর সমস্যার সমাধান সম্ভব নয়, একমাত্র ভালবাসাই পারে এই সমস্যার সমাধান করতে- এই মন্তব্য করেছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। তাঁর অভিমত কাশ্মীরের মানুষদের সাথে নিয়েই এই সমস্যার সমাধান সম্ভব। মঙ্গলবার (১৫ আগস্ট) দেশটির ৭১তম স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠানে দিল্লির লালকেল্লা থেকে জাতির উদ্দ্যেশ্যে ভাষণ দিতে গিয়ে জম্মু-কাশ্মীরে শান্তি ফেরানোর বিষয়ে আশাপ্রকাশ করে মোদি বলেন, ‘গালি বা গুলি দিয়ে পরিবর্তন আসবে না, কাশ্মীরের মানুষকে আপন করতে হবে।

সন্ত্রাসবাদীদের কঠোর হাতে মোকাবিলার করার হুঁশিয়ারি দিয়ে নরেন্দ্র মোদি বলেন, ‘আমি কাশ্মীরের যুবকদের আগেও অনেকবার বলেছি, আবারও বলতে চাই যে তারা যেন মূল স্রোতে ফিরে আসে। গণতন্ত্রে আপনাদের কথা বলার পূর্ণ অধিকার রয়েছে’।

স্বাধীনতা দিবসের কুচকাওয়াজে অংশ নিতে এদিন সকালেই দিল্লির লালকেল্লায় পৌঁছে যান ভারতের প্রধানমন্ত্রী। প্রথমেই জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেন তিনি। সাথে সাথেই সেনাবাহিনীর ব্যান্ড পার্টি জাতীয় সঙ্গীত পরিবেশন করে। সেখানে প্রধানমন্ত্রীকে সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে ‘গার্ড অব অনারও দেওয়া হয়। অনুষ্ঠানে বিভিন্ন স্কুলের ছাত্র-ছাত্রীরাও একটি কুচকাওয়াজে অংশগ্রহণ করে।

এদিনের অনুষ্ঠানে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিং, সাবেক প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিং, আরেক সাবেক প্রধানমন্ত্রী এইচ.ডি.দেবগৌড়া, লোকসভার স্পীকার সুমিত্রা মহাজন, কংগ্রেস সভানেত্রী সোনিয়া গান্ধী, সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি জে.এস.খেহর, বিজেপি সভাপতি অমিত শাহসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের শীর্ষ নেতৃত্ব ও নয়াদিল্লিতে নিযুক্ত একাধিক রাষ্ট্রের রাষ্টদূতরাও উপস্থিত ছিলেন। স্বাধীনতা দিবস কর্মসূচি সুষ্ঠভাবে শেষ করার জন্য নিরাপত্তার চাদরে মুড়ে ফেলা হয়েছিল ঐতিহাসিক লালকেল্লা। আকাশ পথেও নজরদারির ব্যবস্থা করা হয়েছিল।

লালকেল্লায় ৫৬ মিনিটের ভাষণে দুর্নীতি, নোট বাতিল, কালো রুপি, আতঙ্কবাদ, সার্জিক্যাল স্ট্রাইক, তিন তালাক, অসহিষ্ণুতাসহ একাধিক ইস্যু নিয়েও মুখ খোলেন প্রধানমন্ত্রী।

মোদি বলেন, বিশ্বাসের নামে কোনরকম সহিংসতাকে বরদাস্ত করা হবে না। গোমাংস ভক্ষণ ও গরু পাচারের নামে দেশ জুড়ে দলিত ও সংখ্যালঘুদের ওপর যে হামলার অভিযোগ উঠছে সে নিয়েও গোরক্ষকদের উদ্যেশ্যে কড়া বার্তা দিয়ে ভারতের প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘কোন ব্যক্তির বিশ্বাসের নামে সহিংসতা চালানোটা মোটেই সুখকর বিষয় নয়। ভারতে এটা কোন ভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। শান্তি, ঐক্য এবং মৈত্রী দেশের বৃদ্ধির ক্ষেত্রে খুবই গুরুত্বপূর্ণ। সাম্প্রদায়িকতা ও ধর্মের ভেদাভেদ কখনোই দেশের ও মানুষের উপকারে লাগতে পারে না’।

সম্প্রতি উত্তরপ্রদেশের গোরক্ষপুরের হাসপাতালে ৬০ জন শিশুর মৃত্যু ও একাধিক রাজ্যে বন্যা পরিস্থিতি নিয়েও উদ্বেগ প্রকাশ করেন প্রধানমন্ত্রী। দিল্লির পাশাপাশি পশ্চিমবঙ্গ, ত্রিপুরা, অসম, মহারাষ্ট্র, কর্নাটক, গুজরাট, জম্মু-কাশ্মীরেও স্বাধীনতা দিবস উদযাপিত হয়। সকাল ১০টার দিকে কলকাতার রেড রোডে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেন।

ভারত বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক সীমান্তের পেট্রাপোল স্থলবন্দরে স্বাধীনতা দিবস পালন করে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ)। সেখানে উপস্থিত ছিল বাংলাদেশ বর্ডার গার্ড (বিজিবি)’এর কর্মকর্তারাও। দুই দেশের যাত্রী ও সাধারণ মানুষও ওই অনুষ্ঠান উভোগ করেন। এ উপলক্ষ্যে বিজিবি’এর হাতে মিষ্টি ও ফুল তুলে দেয় বিএসএফ।